স্বর্ণক্রেতাকে মারধরের ঘটনা মামলায় ঠাকুরগাঁও হ্যাপী জুয়েলার্সের মালিক খোকন কুমার রায় ও ছেলে চিরন্তন কুমার রায়কে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

আজ রবিবার (১৬ এপ্রিল) চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এর বিচারক নিত্যানন্দ সরকার এ আদেশ দিয়ে পরবর্তী শুনানি আগামীকাল সোমবার ধার্য করেন।

আসামীরা হলো, হ্যাপি জুয়েলার্স এর মালিক খোকন কুমার রায় (৫৫), তার ছেলে চিরন্তন কুমার রায় ( ৩০), খুশি (৩৫), মানিক (৩৫), রতন (৩৮)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি হ্যাপী জুয়েলার্সে ২২ কেরে গিনি সোনা ১ভরি ১০ আনা ৩ রতি জমা দিয়ে ৯ আনা ৩ রতি মুল্য মজুরীসহ ৩০ হাজার ৩১৫ টাকা, ২ ভরি ৪ আনা সোনা দিয়ে একটি সিতাহার তৈরি করতে দেয় শহরের রোড ইসলামনগর খানকা শরীফ এলাকার তারিফ হোসেনের স্ত্রী ইফরাত বারী রুনা। উক্ত সিতাহারটি কয়েক মাস পর নগদ টাকা দিয়ে তারা নেন।

ভুক্তভোগী ওই নারী গত বৃহস্পতিবার উক্ত সিতাহারটি হ্যাপী জুয়েলার্সে বিক্রয় করতে গেলে জুয়েলার্সের মালিক গতকাল শনিবার দুপুরে আসতে বলে। সিতাহারটি পুন:রায় বিক্রয়ের জন্য ওজন দিলে উক্ত হারটির ২ ভরি, ৩ আনা, ৩ রতি ওজন হয়। বর্তমানে যার বাজার মূল্য ৭৭. হাজার দরে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৯৯৫ টাকা হয়। দরকষাকষির এক পর্যায়ে দোকানের মালিকের সাথে তাদের দামের বনিবনা না হওয়ায় ভুক্তভোগী ও তার স্বামী এবং খালা হ্যাপী জুয়েলার্স থেকে বের হয়ে অন্য জুয়েলার্স’র দোকানে যাওয়ার পথে খোকন কুমার রায় (৫৫), দোকানের কর্মচারী খুশি (৩৫) তাদের আটক করে আসামী খুশি ওই মহিলার শরীরে হাত দিয়ে জোরপূর্বক বসানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তার স্বামী প্রতিবাদ করতে গেলে খুশি তার স্বামীকে হত্যা উদ্দেশ্যে দোকানের মধ্যেই দু’হাত দিয়ে গলা চেপে ধরে এবং এলোপাথারিভাবে মারপিট করতে থাকে। এই ঘটনায় জুয়েলার্স’র মালিক খোকন কুমার রায়ের নির্দেশে দোকানের কর্মচারী খুশি, মানিক, রতন, ও মালিকের ছেলে চিরন্তন কুমার রায়সহ আরো তিন তিনজন দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর আবারো মারপিট করে জখম করে। এবং স্বামীকে রক্ষা করতে গেলে জুয়েলার্স মালিকসহ কর্মচারীরা বাদীর পরনে কাপড়চোপড় টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানি ঘটায় ও গলা থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। পরে আশেপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জুয়েলার্স’র মালিক ও তার ছেলে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এঘটনায় ওই নারী ৫জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩জনের নামে সদর থানায় মামলা করেন। পরে কয়েক ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আজ ঠাকুরগাঁও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুললে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে সদর থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, মারপিটের ঘটনায় দুজনকে আসামী গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।