তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের অশালীন, অগ্রহণযোগ্য মন্তব্যের পর তাকে পদত্যাগে বাধ্য করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা সাধুবাদ জানাই।

এর আগে গাজীপুরের মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধেও তিনি কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন। এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন যাদের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব, তাদের যথেষ্ট দায়িত্বশীল হতে হবে। এ কঠোর অবস্থান মাঠপর্যায়ে কর্মীদের জন্য আশা করছি শক্তিশালী বার্তা দেবে।

বর্তমানে রাজনীতিতে অর্থের দাপট, ক্ষমতার অপব্যবহার, অযোগ্যদের উত্থান অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে রাজনৈতিক দল ও নেতাকর্মীদের সম্পর্কে জনগণের মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি অনেকাংশেই নেতিবাচক। অথচ রাজনীতিবিদরাই সমাজের বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করে একটি দেশ, জাতি ও রাষ্ট্রকে সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারেন।

তাই রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের সম্পর্কে মানুষের ধারণায় ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাতে হবে। আর এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন। নইলে ভালো মানুষ রাজনীতিতে আগ্রহ হারাবেন।

বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, শুধু শাসক দল নয়, দেশের একাধিক বড় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী তাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করেন, যেগুলো শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এভাবে বিরোধী নেতা-নেত্রীদের পরস্পরের বিরুদ্ধে বিষোদগার, কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা যেন দেশের রাজনীতির সংস্কৃতিরই অংশ হয়ে গেছে। আমরা আশা করি রাজনীতির সকল স্তরে এরকম অশ্লীল ভাষা ব্যবহার বন্ধ হবে।

এবারের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীরাই বিভিন্ন স্থানে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ, জাল ভোট, কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাইসহ নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রী দায়ীদের বিরুদ্ধে তার কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে বারবার নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হয়ে এসেছে ছাত্রলীগ এবং যে কারণে বিভিন্ন সময়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে ক্ষমতাসীন দলকেই। এখন হয়তো সময় এসেছে ছাত্রলীগকে কঠোর হাতে সামলানোর।

ইতিমধ্যে আমরা দেখেছি ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে জলবায়ু সম্মেলন গিয়েছিলেন এই ছাত্রলীগ নেতা এবং ফেরার দিন তার সমর্থকরা ঢাকার যানজটপূর্ণ রাস্তায় গণজমায়েত করে। এদিন এসএসসি পরীক্ষা থাকায় যানজটের কারণে অনেক পরীক্ষার্থী যথাসময়ে উপস্থিত হতে পারেনি। যার জেরে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এই প্রত্যেকটি ঘটনাই আমাদের আশাবাদী করে তোলে। ভবিষ্যতে এভাবে সব অনিয়মকারী, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, সন্ত্রাসী-লুটেরা, ঘুষখোর, লম্পটদের বিরুদ্ধে আপনার জোরালো ভূমিকা অব্যাহত থাকুক এটাই সবার প্রত্যাশা।