বাজারে চালের পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও বাড়ছে চালের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৩ থেকে ৪ টাকা। আর এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা।

সহযোগী গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে চালের বাজার অস্থির হওয়ার এমন তথ্য জানা যায়। তবে চালের দাম বৃদ্ধির জন্য পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা দায়ী করছেন মিল মালিকদের। তারা বলছেন, মিল মালিকরা দাম বাড়ালে তাদেরও বাড়াতে হয়। দাম ওঠানামা নির্ভর করে মিল মালিকদের মর্জির ওপর। তারা কারসাজি করে দাম বাড়ান।

অন্যদিকে মিল মালিকরা বলছেন, কৃষকের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করার জন্য মাঝেমধ্যে ২/১ টাকা দাম বাড়ে। এছাড়া দাম একেবারে কমে গেলে ব্যবসায়ীরা চোরাই পথে চাল রপ্তানি করে দিতে পারে। এসব কারণে দাম বাড়তে পারে।

পাইকার ও খুচরা বিক্রেতা এবং মিল মালিকরা পরস্পরকে দোষারোপ করলেও সাধারণ মানুষ ঠিকই বাড়তি দাম পরিশোধে বাধ্য হচ্ছে। এ বিষয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। এর আগে পেঁয়াজের দাম অকল্পনীয় পর্যায়ে গেলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে শুরুতে কোনো তৎপরতা ছিল না বললেই চলে। এখন চালের বাজারও যেন সেভাবে অস্থিরতার দিকে যেতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ দিনের ব্যবধানে ৩ দফায় বেড়েছে মিনিকেট চালের দাম। প্রতি ৫০ কেজির বস্তায় বেড়েছে প্রায় ২শ’ টাকা। আর খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে প্রায় ৪ থেকে ৫ টাকা। এছাড়া অন্যান্য চালের দামও মানভেদে প্রতিবস্তায় বেড়েছে প্রায় ১শ’ থেকে দেড়শ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বোরো ধান উঠার আগে এই দাম কমার সম্ভাবনা কম। এমনকি সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির বাজার দরের তালিকায়ও দেখা গেছে, চালের দাম বাড়ছে। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এটা ঠিক যে চালের দাম কম থাকলে অনেক সময় কৃষক ন্যায্য দাম পায় না। গত বছর ন্যায্য দাম না পাওয়ার অভিযোগে কৃষকের ধান পুড়িয়ে ফেলার নজিরও দেখা গেছে। তবে এখন চালের বাড়তি দামে কৃষক আদৌ লাভবান হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। কারণ, কখনো কখনো মিল মালিকেরা চালের দাম কৌশলে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করে। এজন্য দাম বেড়ে যায় বলে অভিযোগ আছে। বিষয়গুলো সংশ্লিষ্টদের নজরদারিতে রাখতে হবে।

কৃষক এবং ভোক্তার লাভবান হওয়ার বদলে মধ্যস্বত্বভোগীরা যেন কোনোমতেই কারসাজির মাধ্যমে চালের বাজার অস্থির করে তুলতে না পারে তা নিশ্চিত করতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।