দেশে এখনো অনেক তরুণ আছেন যারা পড়াশোনা শেষে চাকরির পেছনে ছুটছেন না। নিজে কিছু করার উদ্যোগ নিচ্ছেন। এতে কেউ পা ফসকালেও সফলতা পাচ্ছেন অনেকে।
ঠিক কত সংখ্যক তরুণ নিজে উদ্যোগ নিয়ে সফল হয়েছেন এর সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও কালেভেদ্রে পত্রিকার পৃষ্ঠায় দু-একজন সফল উদ্যোক্তার খবর পাওয়া যায়।তেমনই দুজন ঢাকার দুই বন্ধু—ফজলে রাব্বি এবং শাওন আহমেদ। স্নাতকোত্তর শেষ করে তাঁরা গড়ে তুলেছিলেন গরুর খামার। রাজধানী ঢাকার গাবতলি পার হয়ে সাভারের আমিনবাজার ব্রিজ থেকে ৫ মিনিটের দূরত্বে নান্দনিক হাউজিংয়ের (পূর্বের মধুমতি মডেল টাউন) মূল ফটকের কাছাকাছি তাঁদের খামার।
গরুর খামার শুরু করার গল্পটা তাঁদের মুখ থেকেই শোনা যাক— ফজলে রাব্বি বলেন, ‘প্রথমত আমরা উদ্যোক্তা হতে চেয়েছি। দ্বিতীয়ত চেয়েছি মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে এমন কিছু নিয়ে কাজ করতে। সে জন্যই আমরা খামার শুরু করি আর পরিবারে কাছে হয়ে যাই, শহুরে রাখাল বালক।’
এই দুজন জানান, এমবিএ শেষ করার পর ২০১৫ সালে উদ্যোক্তা হওয়ার পথ চলা শুরু করেন তাঁরা। প্রথমে সরকারের যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নেন। এরপর অর্থের জোগান, পরিবেশবান্ধব খামারের জায়গা নির্ধারণ, বিভিন্ন জেলাতে পশুর হাঁট ঘুরে পশু বাছাইয়ের কাজ শুরু করেন। মার্কেট রিসার্চ শেষ হলে ২০১৬ থেকে বাকারাহ এগ্রো রাঞ্ছ নামে খামার চালু করেন।
এরপর ২০২০ তাঁরা আজমিরা এগ্রো নামে আরও একটি ষাঁড় গরুর খামার চালু করেন। পরিবারের লোকজনের উৎসাহ আর আর্থিক সাহায্য খামার চালুর কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছে বলে তাঁরা জানান। আরেক উদ্যোক্তা শাওন আহমেদ বলেন, ‘আমরা খুব আনন্দ পাই যখন দেখি ২০২১ সালে আমরা ২১৬টি গরু দুটি খামার থেকে ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে পেরেছি।
এ বছর দুইটি খামারে ৩০০টির মতো গরু স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পালন করছি। দুটি খামারে ১৫ জন বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে। এসব আমাদের কাছে আর্থিকভাবে সফলতার চেয়েও অনেক বড় প্রাপ্তি।’ বিশেষ গরুর জাত এবং মাংসে বিশেষ গুণাগুণ সম্পর্কে শাওন বলেন, ‘আমাদের কাছে থাকা সব গরুই কোনো না কোনোভাবে বিশেষ। শুরু থেকেই ভালো মানের গরু দিয়ে খামার চালিয়ে আসছি আমরা।
বর্তমানে আমাদের খামারে দেশি গরু, আরসিসি, ভুট্টি, শাহিওয়াল, হাসা, সিন্ধি, উল্বারি, হলিষ্টান, ফিযিয়ান ছাড়াও ১০০০ কেজি ওজনের গরুও আছে।’ এ বছর কোরবানির ঈদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানান, ঈদের প্রস্তুতি বলতে খামারে কোরবানির গরুর অগ্রিম বুকিং অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। রয়েছে অনলাইনে গরু দেখা ও কেনার সুযোগও। ক্রয়কৃত গবাদিপশু নিজস্ব পরিবহনে ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে তাঁদের।
যারা গবাদিপশু পালনকে পেশা হিসেবে নিতে চান তাঁদের উদ্দেশে এই দুই বন্ধু বলেন, অবশ্যই সরকারের যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করার উচিত। বর্তমান সময়ে প্রতিনিয়ত পশু ও পশু খাদ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী। তাই মূলধনের অতিরিক্ত অর্থের জোগানের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
তথ্যসূত্র: প্রথমআলো।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।