সফল তাঁরাই যারা স্বপ্নকে শুধু লালনই করেন না, সেটি বাস্তবায়িত করার জন্য রাতদিন পরিশ্রম করেন। স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে যে খুব বেশি পুঁজির প্রয়োজন হয় না, তাঁর প্রমাণ করে দেখিয়েছেন অনেকেই। সফলতা অর্জনের জন্য স্বপ্ন দেখাটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার। অর্থ নয়, মেধা আর পরিশ্রমই পারে একজন ব্যক্তির কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণ করে সেটি সফল করে তুলতে।
বিশ্বে অনেক বিখ্যাত ধনী ব্যক্তি রয়েছেন যারা শুন্য থেকে গড়ে তুলেছেন বিশাল সাম্রাজ্য। সম্পদের এক বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন, অথচ শুরুর দিকে তাদের পকেট ছিল প্রায় শূন্য। আসুন আজ জেনে নেই এমনই কিছু বিখ্যাত ধনী ব্যক্তিদের সম্পর্কে:
ওয়ারেন বাফেট: হকার থেকে শীর্ষ ধনীর খ্যাতি অর্জন করেছেন ওয়ারেন বাফেট। নিজের পরিশ্রমে ওপরে ওঠার নেশা ছিল তাঁর ছোটবেলা থেকেই। অর্থ উপার্জনের নেশা তাঁকে ছোট কাজ করতেও বাঁধা দেয়নি। অর্থ উপার্জনের জন্য তিনি পথে পথে চুইংগাম, কোল্ড ড্রিংকস ও সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন বিক্রি শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিজনেস স্কুলের সাবেক এই ছাত্র বিনিয়োগের কলাকৌশল গুলো খুব ভালো করেই জানতেন। সেই থেকেই হয়ে ওঠেন একজন সফল ব্যবসায়ী। সারা বিশ্বের তরুণ উদ্যোক্তাদের কাছে ওয়ারেন বাফেট এক অনুপ্রেরণার নাম।
জ্যাক মা: শুরুতে একজন ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন অনলাইন স্টোর আলীবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা। ছোটবেলা থেকেই আর্থিক অস্বচ্ছলতার মধ্যে বড় হয়েছেন তিনি। ১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এসে প্রথম জানেন ইন্টারনেট সম্পর্কে। এরপর নিজ দেশ চীনে ফিরে ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন জনপ্রিয় ট্রেডিং সাইট আলীবাবার। সারা বিশ্বের ব্যবসায়ীদের কাছে বর্তমানে পরিচিত নাম আলীবাবা। সেই পরিচিতিই তাকে দাঁড় করিয়েছে বিশ্বে শীর্ষ ধনীদের কাতারে। চীনের শীর্ষ ধনী জ্যাক মা’র বর্তমান সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার।
জেফ বেজোস: বিশ্বের সর্ববৃহৎ ই-কমার্স আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্যানুসারে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় বর্তমানে তাঁর অবস্থান দ্বিতীয়। কম্পিউটারের প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল সেই ছোটবেলা থেকেই। মাত্র দু’দশক আগেও তিনি ছিলেন একজন সাধারণ তরূণ উদ্যোক্তা, তবে স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়ার। ভাবতে শুরু করলেন কিভাবে এক ক্লিকেই পণ্য কেনা যায়। সেই ভাবনা থেকেই ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠা করলেন ‘আমাজন’, যেটি খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়ে গেল। বয়স ৩৫ পেরোবার আগেই বেজোস হয়ে গেলেন বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন।
ওপরাহ উইনফ্রে: বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী নারীর তালিকার শীর্ষে রয়েছেন ওপরাহ উইনফ্রে। ৫০’র দশকে যুক্তরাষ্ট্রের এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কালো বর্ণের জন্য কর্মক্ষেত্রে বার বার অপমাণিত হতে হয়েছে তাঁকে। সুন্দর চেহারার পরিবর্তে সুন্দর কাজ দিয়ে মানুষের মন জয় করার উদ্যোগ নিলেন ওপরাহ। নিজের ব্যক্তিত্ব ও দক্ষতাকে উন্নত করে নিজেকে তৈরি করলেন নতুনভাবে। ’দি ওপরাহ উইনফ্রি শো’ দিয়ে জয় করলেন মানুষের মন, হয়ে উঠলেন জনপ্রিয় মার্কিন টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন কোটিপতি।
কর্নেল স্যান্ডার্স: শত ব্যর্থতার পর সফলতার এক বিরল দৃষ্টান্ত কেএফসির প্রতিষ্ঠাতা কর্নেল স্যান্ডার্স। কেএফসি বর্তমানে সারা বিশ্বে এক জনপ্রিয় ব্র্যান্ড। তবে এর প্রতিষ্ঠাতা কর্নেল স্যান্ডার্সের জীবনে রয়েছে একের পর এক ব্যর্থতার সব স্মৃতি।
৬৫ বছর বয়সে হতাশ হয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন কর্নেল। সুইসাইড নোট লেখার সময় ভাবতে লাগলেন জীবনে কী করতে পারতেন তিনি। তখনই তাঁর মাথায় আসলো চিকেনের এক গোপন রেসিপির কথা, যা তিনি ছাড়া আর কেউই জানেন না। সুইসাইডের সিদ্ধান্ত থেকে ঘুরে দাঁড়ান তিনি, প্রতিষ্ঠা করেন কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন (কেএফসি)। তথ্যসূত্র: বাংলা ইনসাইডার।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।