তানজিনা সূচী। ফরিদপুরের মেয়ে। বর্তমানে স্বামীর সঙ্গে থাকছেন ঢাকায়। ইট-পাথরের শহরে সবুজ দুষ্প্রাপ্য। তবে যারা সবুজ ভালোবাসেন, গাছ ভালোবাসেন, গাছে ফুটে থাকা ফুল-ফল ভালোবাসেন, তারা ফ্ল্যাটের ছোট্ট ব্যালকুনি বা বারান্দাতেই গড়ে তোলেন সবুজের সম্ভার। তেমনি একজন তানজিনা।
তিনি থাকেন ঢাকার মিরপুর এক নম্বরের একটি আবাসিক এলাকায়। সেখানেই তিনি গড়ে তুলেছেন তার শখের বারান্দায় বাগান। নানা রকম সাকুলেন্ট জাতীয় উদ্ভিদ ও ক্যাকটাস দিয়ে সাজানো তার বারান্দা। ফ্ল্যাটের দুই পাশের বারান্দায় প্রায় ৪ হাজারের মতো চারা রয়েছে।
তানজিনার জন্ম ও বেড়ে ওঠা ফরিদপুরে। বাবা আইনজীবী মো. খশরুল আলম ও মা সৈয়দা সামসুন নাহারের দুই সন্তানের মধ্যে তানজিনাই বড়। তিনি ফরিদপুর গভমেন্ট হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক, গ্রামেই উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিইউবিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ও স্নাকোত্তর করেন।
তিনি ছোটবেলা থেকেই সবুজ ভালোবাসতেন, গাছ ভালোবাসতেন। গাছ সংগ্রহ করাই ছিল তার নেশা। আর এতে উৎসাহ দিতেন তার নানা। তানজিনা ঢাকা আসার আগ পর্যন্ত ফরিদপুরে তার বাড়িতেই গড়ে তোলেন শখের বাগান। এরপর বিবাহসূত্রে ঢাকা এসে বসবাস শুরু করেন তিনি। কিন্তু তার ভেতর বাগানের অভাববোধ কাজ করে। পরে স্বামীর উৎসাহে তাদের থাকার ফ্ল্যাটের বারান্দাতেই বাগান শুরু করেন।
তানজিনা বলেন, ‘ঢাকা আসার পর গ্রামের বাগানটিকে অনেক মিস করছি। আমি থাকলে যেমন যত্ন নিতাম, এখন বাড়ির লোকেরা নেয় কিনা এসব চিন্তা হতো। আমি ছোট থেকেই গাছপ্রেমী। গাছের সাথে সময় কাটাতে খুব ভালো লাগে। কিন্তু ঢাকায় এসে তা পারলাম না। একাকিত্ব ফিল হইছে সবসময়। এই একাকিত্ব কাটাতে আমার স্বামীর উৎসাহে আমি বারান্দাতেই গড়ে তুলি আমার শখের বাগান। এখন নিয়মিত বাগান পরিচর্যা করতেই আমার সময় কেটে যায়।’
তিনি বাগান সাজিয়েছেন বিদেশি গাছ দিয়ে। তার বাগানের সব গাছই প্রায় সাকুলেন্ট ও ক্যাকটাস জাতীয়। এ গাছগুলো সংগ্রহ করেছেন চীন, থাইল্যান্ডের বিভিন্ন ইম্পোটারের কাছ থেকে। গাছগুলো সংগ্রহ করে সে গাছ থেকে প্ল্যান্টের মাধ্যমে আরও চারা উৎপন্ন করেন। শখের বসে বাগান শুরু করলেও এ থেকে এখন তার আয়ও হচ্ছে। প্রতি মাসে অনলাইন-অফলাইনে প্রায় ৭/৮ হাজার টাকার চারা বিক্রি হয়।
তানজিনা সূচীর ইচ্ছা বাগানকে আরও বড় করবেন। বিভিন্ন রকমের বিদেশি গাছের পাশাপাশি বনসাইসহ আরও নানা ধরনের গাছ রাখবেন।
তিনি বলেন, ‘যারা আমার মতো গাছপ্রেমী কিন্তু ঢাকায় থাকার কারণে করতে পারছেন না, তারা চাইলে আপনাদের ছোট্ট বারান্দাতেই করতে পারেন শখের বাগান। এতে শহর থেকে হারিয়ে যাবে না সবুজ।’
তথ্যসূত্র: রাইজিংবিডি
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।