১৭ বছর পূর্বে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর মহান জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস করা হয় এবং তৎকালীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজকে বিলুপ্ত করার মধ্য দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও মূলত: কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৭ সালে। কারন ২০০৭ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগ শুরু হয়। ২০০৫ থেকে ২০০৭ এই দুই বছর তৎকালীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে কর্মরত সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলীদের দ্বারা পাঠদান করা হতো। পরবর্তীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ফলে ধীরে ধীরে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিনত হতে থাকে। তবে পরিপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ নিতে ২০১১ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ২০১১ সাল এর পর থেকে এটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপ নেয়। কারণ এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকের সংখ্যাও অনেক বেড়ে গিয়েছিল এবং তৎকালীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে কর্মরত সম্মানিত শিক্ষক মন্ডলী বাংলাদেশে অবস্থিত অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে তাঁরা যোগদান করেন। ২০১২ সাল থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলী দ্বারা শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও গবেষণার কাজ শুরু করেন এবং সেই থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাতারে আসতে সক্ষম হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের মধ্যে ২৭ এর ৪ ধারা নামক একটি ধারা থাকার কারণে দেশের দূর-দূরান্তে অবস্থিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকমণ্ডলী এখানে যোগদান করতে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন। যারা তখনকার সময়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রফেসরবৃন্দ এখানে এসেছিলেন সেটিও তারা লিয়েন ছুটি নিয়ে এসেছিলেন এবং তাঁরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ীভাবে যোগদান করেননি। তাঁদের অনেকেই যোগদান সংক্রান্ত বিষয়ের নানা রকম শঙ্ক্ষায় ছিলেন। যাহোক পরবর্তীতে ২৭ এর ৪ ধারা রোহিত করা হয় এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সত্যিকার অর্থে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। এবং বলা চলে তখন থেকেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানিত প্রফেসরবৃন্দ এখানে যোগদান করতে শুরু করেন। বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় চল্লিশটি বিভাগ চালু আছে এবং সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এখন সবার কাছে পরিচিত একটি নাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ২০০ জন শিক্ষক দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন নামিদামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করার সুযোগ পেয়েছেন। ইতোমধ্যেই অনেকেই উচ্চতর ডিগ্রি শেষ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো যোগদান করেছেন। সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দু একটি বিভাগ সারা বাংলাদেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিভাগ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলীদের মধ্য থেকে অনেক শিক্ষক সারা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা জাতিকে সেবা করার জন্য সরকারের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত আছেন। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক মন্ডলীদের শ্রম ও মেধা দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে সারা বিশ্বে একটি প্রতিষ্ঠিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত লাভ করাতে সক্ষম হয়েছেন। পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ইমদাদুল হক এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বে সুপ্রতিষ্টিত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিতি লাভ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন। এজন্য তাঁদেরকে জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। এছাড়াও ছাত্রছাত্রীদের জানাই একরাশ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
লেখক: অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ
আহ্বায়ক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সেলিং সেন্টার।
সাবেক চেয়ারম্যান, মনোবিজ্ঞান বিভাগ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।