মুন্সিগঞ্জ শহরের উত্তর ইসলামপুরে সালিশি বৈঠকে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইমন পাঠান (২৩) ও সাকিব (১৯) নামে ২ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত পরাজিত পৌর কাউন্সিলর প্রার্থী মিন্টু প্রধানকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইমন গ্রামটির কাসেম পাঠানের পুত্র ও সাকিব বাচ্চু মিয়ার পুত্র।

এই ঘটনায় আহত আরো কয়েকজনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নিহতদের মধ্যে এ বছর সাকিব মুন্সিগঞ্জ সরকারি হরগঙ্গা কলেজ থেকে এইচএসসি ও ইমন এসএসসি পাশ করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ১০ জনকে আটক করেছে।

পুলিশ ও স্থাানীয় সূত্র জানায়, ইভটিজিং নিয়ে একে অপরকে দায়ী করে ইমন পাঠান একই এলাকার অভিকে চড়-থাপ্পড় মারে। পরে ইমন পাঠান পক্ষের বড় ভাই মিন্টু আবার অভিকে ডেকে নিয়ে ধাপ্পড় মারে। বুধবার রাত ৯টার দিকে এই ঘটনায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে এই নিয়ে উভয় পক্ষ আপোষ-মিমাংসায় বসে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে। মিন্টুর বাড়ির সামনে জামালের দোকান প্রাঙ্গণে সালিশ বৈঠকটি হয়। এই বৈঠকে মিমাংসাও হয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু শেষ পর্যায়ে অভি গ্রুপের লোকজন আকস্মিক তিনজনকে ছুরিকাঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে এবং বৈঠকে থাকা লোকজন হাসপাতালে নিয়ে যায়।

মুন্সিগঞ্জ থানার ওসি মো. আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সৌরভ, অভি ও শামীম গ্রুপ এই হামলার সাথে জড়িত। পুলিশ এই তিনজনের কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ১০জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত সৌরভের পিতা জামাল প্রধান রয়েছেন।’

ওসি জানান, প্রথমে ছুরিকাহত তিনজনকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে পেটে ও বুকে জখম ইমন পাঠানকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পরে পেটে ও বুকে জখম সাকিব মিয়া (১৯) ও বুকে ও শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত আওলাদ হোসেন মিন্টুকে (৪০) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে নেয়ার পর সাকিব মিয়াকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। মৃত আনোয়ার আলীর পুত্র মিন্টু প্রধানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন পিপিএম জানান, বুধবার রাত সাড়ে দশটায় একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি সালিশি বৈঠক বসে উত্তর ইসলামপুর এলাকায়। সেই সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মিন্টু প্রধান ও জামাল গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ধারালো ছুরির আঘাতে মিন্টু প্রধান গ্রুপের ইমন পাঠান নিহত হয়। গুরুতর আহত সাকিব ও মিন্টু প্রধানকে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠালে সেখানে সাকিব মারা যায়। এই ঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।