মানুষ এক বিচিত্র প্রাণী কারণ- অকারণে সময়ের সাথে সাথে তার মনের রং বদলায়। তবে মনের মধ্যে যে কোনো ধরনের চিন্তাই থাকুক না কেনো ফুল দেখলেই মুহূর্তেই মন থেকে সকল ধরনের নেতিবাচক চিন্তা দূর হয়ে যায়। ফুলের কাছেই হার মেনে যায় সকল রাগ, অভিমান এবং অভিযোগ।

বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। ছয় ঋতুর এ দেশে সারাবছর ফুল ফুটে থাকে, গ্রীষ্মকাল অথবা বর্ষাকালেও এর ব্যতিক্রম ঘটে না। বৈশাখ ও আষাঢ় মাসকে ঘিরে প্রকৃতি যেন এক নতুন রুপ লাভ করে মানুষের মাঝে মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয়। ফুলের গন্ধে ছোট-বড় সকলেই মাতোয়ারা হয়ে যায়।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় লাল মাটির ক্যাম্পাস নামে সুপরিচিত। বৈশাখ এবং আষাঢ় মাস আসলে তার ভিন্ন সৌন্দর্য চোখে পড়ে। বিভিন্ন ফুলের সৌন্দর্য চারিদিক আলোকিত হয়ে থাকে। প্রতি বছরের মতো এ বছরেও বৃষ্টি শুরু হতে না হতেই ফুলের পরসা সাজিয়ে বসেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। জারুল, কৃষ্ণচূড়া, কুর্চি ও অমলতাস ফুল সহ ক্যাম্পাসে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ফুলের সমাহার।

শিক্ষার্থীদের কাছে ক্যাম্পাস টি হয়ে উঠেছে সৌন্দর্যের লীলাভূমি। ক্যাম্পাসের এই সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন বয়সের মানুষের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়। ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ রাজু বলেন, “ফুল হলো প্রকৃতির আত্মা। ফুল ছাড়া প্রকৃতি হলো প্রেমহীন জীবনের মত। ফুলকে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ফুলের সৌন্দর্য সবাইকে বিমোহিত করে। ফুল আর ভালোবাসা যেন একই সুতোয় গাঁথা। লালমাটির এই ক্যাম্পাসেও লেগেছে এই ভালোবাসার ছোঁয়া। ক্যাম্পাসের ফুলের সৌরভ আর সৌন্দর্যের অপরূপ শোভায় শিক্ষার্থীর মনকে আন্দোলিত করেছে। জলবায়ুর ভিন্নতার জন্য বছরের একেক সময় নানা প্রজাতির ফুল ফুটে। কত বিচিত্র রঙের ফুল, কত বিচিত্র সুভাষ। বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ ধরে নানা রকম ফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত বাংলাদেশের মানুষ। কুবি’র ক্যাম্পাসে ফুটা স্বণার্ভ সোনালু, বেগুনী রঙের জারুল, রক্তিম কৃষ্ণচূড়া শতগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে”।

গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা শান্তা বলেন,”ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বরাবরই উপভোগ করার মত। প্রতিটি গাছপালা যেন নতুন রূপে সেজেছে। আর এ সৌন্দর্যে নতুন মাত্রা এনেছে ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়া, সোনালু আর জারুল ফুল। রাস্তার দুপাশের এই ফুলগুলোর সৌন্দর্যে আমি এতো বেশি মুগ্ধ যে আমি যখনই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাই একটা সুন্দর অনুভূতি কাজ করে। শুধু আমি নয় এই কৃষ্ণচূড়া,জারুল ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে ক্যাম্পাসের আশেপাশের প্রকৃতিপ্রেমীরাও ভিড় জমাচ্ছেন”।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আতিক হাসান অন্তর বলেন,
“আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি চারিদিকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমারোহে আবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়টির চারদিকে দৃষ্টিনন্দন পাহাড়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য শিক্ষার্থীদের যেমন আন্দোলিত করে তেমনি ভাবে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকদেরও আকর্ষিত করে। বৈশাখ,আষাঢ় মাস আসলেই ক্যাম্পাসে নানাবিধ ফুলের সৌরভ ছড়িয়ে পড়ে।

প্রতি বছরের ন্যায় এই বারও বছরের শুরুতে জারুল,অমলতাস,কুর্চি এবং রাস্তার দু পাশে সারি সারি কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য আমাদেরকে মুগ্ধ করেছে। ক্যাম্পাসে ফুলের এই সৌন্দর্য চির অটুট থাকুক,সৌন্দর্যে ছেয়ে যাক আমাদের পুরো ক্যাম্পাস”।

শিক্ষার্থী-
সুমন আহমেদ রাহাত
বাংলা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়