ডিপ্রেশনে থাকা মানুষ গুলো আত্মহত্যার মত কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়, সত্যিই এই বিষয় টা কষ্টদায়ক! আর আমরা সত্যিই ভাবতে পারিনা যারা কোনো না কোনো কারণে বিষণ্ণ থাকেন তাদের মনে ঠিক কতটা ঝড় চলে।

কতটা মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়লে তারা জীবনের এই কঠিনতম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। অনেকের কাছেই এই যুদ্ধটা সত্যিই বড় কঠিন। একজন মানুষ হিসেবে এটুকু বলতে পারি বাইরে থেকে দেখলে হয়তো এই জগতের চাকচিক্য টাই চোখে পড়ে। কিন্তু এর মধ্যেও আছে অতল অন্ধকার। দিনের পর দিন কাজের চাপে তো মাঝে মধ্যে পরিবারের মানুষদেরও সময় দিতে পারিনা আমরা।

শুধু আমরাই নই কত মানুষ হয়তো এই মুহূর্তেই হয়তো ডিপ্রেশন এ ভুগছেন। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছেন। দেখবেন আপনারই আশে পাশে হয়তো কিছু মানুষ ফেসবুক-এ প্রোফাইল পিকচার ব্ল্যাক করে রেখেছেন। শুধু একটা স্ট্যাটাস দিয়ে রেখেছেন যে “ডিপ্রেশন-এ আছি।” অফিসের চাপ, ব্রেক-আপ, চাকরির সমস্যা, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লড়াই, সাংসারিক সমস্যা ইত্যাদি তো আছেই।

তার থেকেও বড় সমস্যা সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেও ‘কিছুই করতে পারিনি’- এই চিন্তা। কী চেয়েছি আর কী যে পেলাম! এই ভাবনাতেই ডিপ্রেশনের হাতছানি। আর এই মুহূর্তে আমরা সকলেই একটা কঠিন মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছি। যেখানে মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়ার মুহূর্ত না চাইতেও আসতে পারে। তাই এই মুহূর্তে আমাদের একে ওপরের পাশে দাঁড়িয়ে মনের জোর বাড়ানোটা ভীষণভাবে প্রয়োজন। কেউ ফোন করে মনের কথাটা বলতে চাইলে বিরক্ত না হয়ে তার কথা গুলো অন্তত শুনুন, তাতে সেই মানুষটার মন কিছুটা হলেও হালকা হবে।

তেমন হলে সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিন। শরীরের মতো মনেরও চিকিৎসা হতে পারে সেটা বোঝান। যারা সত্যিই ডিপ্রেশন-এ আছেন আমি আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা দিয়ে বলতে পারি- তারা নিজেকে একা ভাবা বন্ধ করুন, মনের কথাটা কাছের মানুষকে খুলে বলার চেষ্টা করুন।

আমাকে কেউ ভালবাসে না, কেউ আমায় বোঝে না, এই চিন্তাটা থেকে সরে আসুন। আপনিই আপনার সব থেকে ভাল বন্ধু। মানুষ নিজেকেই সব থেকে বেশি ভালবাসে। তাই আর কে ভালবাসল, কে বাসল না সেটা সত্যি-ই গুরুত্বপূর্ণ নয়। সারাদিন কাজের পর নিজের জন্য একটু সময় রাখুন, ওই সময়টা শুধুই আপনার ওই সময়টায় আপনার যেটা করতে ভালো লাগে সেটাই করুন। যেটা পেলেন না তার কথা না ভেবে, যা পেয়েছেন তাই নিয়ে ভাবুন।

সেটিকে নিয়েই জীবনে কি করে আরোও উন্নতি করা যায় সেদিক টায় বেশি জোর দিন। দেখবেন আপনি অনেক ভালো আছেন। ছোটখাটো দুঃখ-কষ্ট জীবনে আসবেই, হতাশা আসবেই। সেগুলো নিজেদের অদম্য জীবনী শক্তি দিয়ে জয় করে এগিয়ে যেতে হবে আমাদের। এরই নাম জীবন।

কলমে: জেমস্ আব্দুর রহিম রানা, গণমাধ্যমকর্মী, যশোর