শেখ মোস্তফা কামাল,কেশবপুর (যশোর)প্রতিনিধিঃ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে মঙ্গলবার রাতে শেষ হলো সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গত ২৫ জানুয়ারি থেকে এ মধুমেলা শুরু হয়। মেলা উপলক্ষে সাগরদাঁড়িকে সাজানো হয়েছিল বর্ণিল সাজে। কপোতাক্ষ নদ পাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখ লাখ মধুভক্ত ও দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। কবির জন্মভূমির স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদ, জমিদার বাড়ির আম্রকানন, বুড়ো কাঠবাদাম গাছ তলা, বিদায় ঘাট, মধুপল্লীসহ মেলা প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীদের ছিল উপচে পড়া ভীড়। এবারের মধুমেলার ভেতর কৃষি মেলা দৃষ্টি কেড়েছে সকলের। মেলা ঘিরে এ এলাকার মানুষের বাড়িতে মেয়ে-জামাই, বন্ধু-বান্ধবসহ অতিথিদের উপস্থিতিতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা প্রশাসন সপ্তাহব্যাপী এ মধুমেলার আয়োজন করে। গত ২৫ জানুয়ারি (বুধবার) বিকেলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এ মধুমেলার উদ্বোধন করেন। এবারও মধুমেলায় ‘মহাকবি মাইকেল মধুসূদন পদক-২০২৩’ দেওয়া হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখায় গবেষণাধর্মী সাহিত্যকর্ম ক্যাটাগরিতে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কুদরত-ই-হুদা সোমবার সন্ধ্যায় এ পদক পান। মঙ্গলবার রাতে মধুমঞ্চে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার। এ অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খায়রুল বাসার, বাচক শিল্পী প্রণব চৌধুরী কাজল ও মধুসূদন মিউজিয়ামের সহকারী শামসুর রহমান গাজীকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়। 
                                                                 
মেলা উপলক্ষে মধুমঞ্চে সপ্তাহব্যাপী কেশবপুর ও যশোরের শিল্পীগোষ্ঠীর পাশাপাশি দেশবরেণ্য শিল্পীদের পরিবেশনাসহ, সার্কাস, যাদু প্রদর্শনী ও মৃত্যুক‚প মুগ্ধ করে তোলে দর্শকদের। শিশুদের জন্য মেলার মাঠে ছিল নাগরদোলা, ড্রাগন ট্রেনসহ বিভিন্ন আয়োজন। মেলার মাঠে কুটির শিল্পসহ প্রায় ৫ শতাধিক বিভিন্ন পণ্যের পসরা বসেছিল। এবারের মধুমেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল কৃষি মেলা। সেখানে কৃষকদের আনা বড় বড় কলার কাঁদি, লাউ, মুলা, সরিষা গাছ, কচু, ওলকপি, পেঁপে, তেঁতুল, আম, কাঁঠালসহ অসময়ের তাল দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে। এছাড়া মেলার মাঠে বসানো বাহারি রকমের বড় আকারের মিষ্টির ভেতর বালিশ মিষ্টি, ফুচকা, চা ও মিষ্টিপান, মসলাপান নজর কাড়ে দর্শনার্থীদের।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, ‘সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন লাখো মধুভক্তসহ দর্শনার্থী এসেছেন। সফল ও সুন্দরভাবে ঐতিহ্যবাহি এ মধুমেলা সম্পন্ন হয়েছে।