২৬ মার্চ বা স্বাধীনতা দিবসের ঘটনাগুলো শুনতে খুব কম সময় লাগলেও এর পেছনের প্রেক্ষাপট যেমন বেশ পুরোনো তেমনি ত্যাগের সংখ্যাও অগণিত। বহু পথ পাড়ি দিয়েই সফলতা অর্জনের কথা বলেছিলেন জ্ঞানীরা। তেমনি মার্চের ঐতিহাসিক এই প্রেক্ষাপট তৈরিতে এত এত আন্দোলন, জীবনদানের ইতিহাস রয়েছে যার ঋণ কখনোই শোধ করতে পারবে না এই প্রজন্ম। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে তখন তুমুল অসহযোগ আন্দোলন চলেছিল ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে, ঠিক তখনি আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের মার্চের শুরু থেকেই উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকার রাজপথ। ৭ই মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের পর পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে আরও অগ্নিগর্ভ। এই তারিখেই অনানুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সবাইকে সবার জায়গা থেকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা প্রদান করেন। সেদিন রেসকোর্স ময়দানে তার বজ্রকণ্ঠের ভাষণে লাহোর, করাচির মসনদ কেঁপে উঠেছিল। পাকিস্তানি দখলদার সরকার ভেবে পায়নি কিভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করবে। তারা সংলাপ শুরু করে, বাংলায় আলোচনায় বসার একমাত্র জায়গা শেখ মুজিবুর রহমান। কারণ ৭ই মার্চের দিন প্রমাণ হয়ে যায় বাংলার মানুষ তার কথাতেই নড়ে, তার কথাতেই অস্ত্র হাতে নিতে পারে। কিন্তু ২৫ মার্চের ভয়াবহ রাত অবধি পাকিস্তান সরকার, প্রশাসনের পদক্ষেপ কিংবা প্রস্তুতি কেমন ছিল সে ইতিহাস অনেকেই জানেন না। আজ আমরা সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

শেখ মুজিব-ইয়াহিয়ার বৈঠক এবং গণহত্যা প্রস্তুতি

৭ই মার্চ দেশবাসীকে অনানুষ্ঠানিক স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান লাহোরে খবর পাঠিয়েছেন ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য। পূর্ব বাংলার রাজধানী ঢাকা সহ সারাদেশ তখন শেখ মুজিবের কথায় চলছিল। তার নির্দেশনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জনসাধারণকে অনুপ্রেরণা দিচ্ছিল। করাচির সঙ্গে ঢাকার দরকষাকষির মাঝে ১৫ মার্চ কঠোর গোপনীয়তার মাঝে ঢাকায় অবতরণ করেন ইয়াহিয়া খান। বিবিসির সূত্রমতে, সেদিন কলকাতার বেতারে ইয়াহিয়া খানের করাচি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়ার খবর প্রচার হলেও রেডিও পাকিস্তান এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করে। এমনকি বিমানবন্দরে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে সাংবাদিকদের সাক্ষাতের কোনো প্রকার ব্যবস্থা করেনি প্রশাসন। কিন্তু ঐতিহাসিকরা ইয়াহিয়ার ঢাকা সফরকে যতোটা গোপন বলে থাকেন ততটা গোপনীয়তা কি সত্যিই ছিল সেদিন? ১৬ মার্চ প্রকাশিত ইত্তেফাকে দেখা যায় ইয়াহিয়ার আগমন প্রতিহত করতে স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ প্রেসিডেন্ট হাউসের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে।

ইত্তেফাকের মারফত পরদিনই সবাই ইয়াহিয়ার ঢাকা সফরের কথা জেনে গেলেন। রেডিও, টেলিভিশনের কল্যাণে পুরো দেশেই ছড়িয়ে পড়ে এই খবর। সারাদেশে যখন উত্তেজনা তখন রুদ্ধদ্বার আড়াই ঘন্টার বৈঠকে শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইয়াহিয়া খান। বিবিসির দাবি সেদিনের বৈঠকে এই দুই শীর্ষ নেতা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না কক্ষে। দীর্ঘ বৈঠক শেষে শেখ মুজিবুর রহমানের মুখে চিন্তার ছাপ দেখে সাংবাদিকেরা আলোচনার বিষয়বস্তু জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু যা বলেছিলেন তার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কেউই। তিনি বলেন “আলোচনা দুই-এক মিনিটের ব্যাপার নয়, যথেষ্ট সময় প্রয়োজন। তাই আলোচনা আরো চলবে।” অন্যদিকে, পত্রিকাগুলো শুধুমাত্র রাজনৈতিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে এমনটা দাবি করে। পরদিন ১৭ই মার্চ তারিখ অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে শেখ মুজিবকে বেশ গম্ভীর দেখাচ্ছিল বলে খবর প্রকাশ করে ইত্তেফাক। এমনকি আলোচনা ভালো হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ইত্তেফাক প্রতিনিধিকে কিছুই বলেননি শেখ মুজিবুর রহমান। এই আলোচনা এরপরেও আরো ৪ দিন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু আজ অবধি কেউ জানেন না তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হাউসে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে শেখ মুজিবের আলোচনার বিষয়গুলি। এই প্রসঙ্গে ইতিহাসবিদ ডক্টর সৈয়দ আনোয়ার হোসেন জানান, “কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিলো, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন দলিল কিন্তু আমরা কখনো পাইনি। পাকিস্তানিরা মূলত: আলোচনার একটা ভান করেছিলো। শাসনতন্ত্র নিয়েও কথা বলেছিলো। তবে বঙ্গবন্ধু শুরু থেকেই ৬ দফার ভিত্তিতে আলোচনা এগিয়ে নিতে চেয়েছিলেন।”

এরপরের ইতিহাস আমরা কমবেশি সবাই জানি। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার মাঝেই পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অস্ত্রসস্ত্র মজুত করতে থাকে পশ্চিম পাকিস্তান। সে সময় সেনাদের বাধাপ্রদান করায় রংপুর, সৈয়দপুর ও জয়দেবপুরে অসহযোগ আন্দোলনে থাকা সাধারণ মানুষের ওপর সেনাসদস্যরা গুলিবর্ষণ করে। ইয়াহিয়ার সঙ্গে আলোচনা শেষে ২৪ তারিখ শেখ মুজিবুর রহমান ব্যক্তিগতভাবে কোনো কিছুই বলেননি। বরঞ্চ নির্বাচনে জয়লাভকারী, ক্ষমতা গ্রহণের জন্য মুখিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে তাদের পক্ষ থেকে সমস্ত দাবি উত্থাপন করা হয়েছে বলে জানায়। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পক্ষ থেকে আর কোনো ঘোষণা আসেনি। বরঞ্চ ইয়াহিয়া, ভূট্টো সহ অন্যান্যরা এর আগেই গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন। সেনাবাহিনী হামলার প্রস্তুতি নিতে থাকে। এভাবেই নেমে আসে ২৫ তারিখ দিবাগত সন্ধ্যা!

২৫ মার্চের গণহত্যার পেছনে পাকিস্তানি জেনারেলদের দায়

এমন কোনো বাঙালী নেই যিনি কিনা ছোটবেলায় পাঠ্যবইতে অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে পড়েননি। আর যিনি পড়েছেন তিনি ভালো করেই জানেন এর ভয়াবহতা ঠিক কতোটুক ছিল। পশ্চিম পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতের কথিত সেনা অভিযানের সাংকেতিক নাম বা কোডনেম ছিল ‘অপারেশন সার্চলাইট’। সহজ ভাষায় শেখ মুজিবুর রহমানকে আলোচনায় বসিয়ে পূর্ব বাংলার জনগনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার পর যে নৃশংস গণহত্যা সেটিই এই সার্চলাইট। ২৫ মার্চ রাতে সংগঠিত হলেও পাকিস্তান সরকার এই প্রস্তুতি নিয়েছিল ১৮ মার্চ থেকেই। অন্ততপক্ষে বিবিসি’র তৎকালীন সংবাদ পড়লে এমনটাই বোঝা যায়। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই নৃশংস, ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন মেজর জেনারেল খাদিম হুসাইন রাজা। বলতে গেলে পূর্ব বাংলায় ভূট্টো-ইয়াহিয়া গ্যাংয়ের অন্যতম বিশ্বস্ত ব্যক্তি ছিলেন এই খাদিম হুসাইন রাজা। শেখ মুজিবের সঙ্গে ইয়াহিয়ার সংলাপ চলাকালীন সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের ১৪তম ডিভিশনের জিওসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।

বিবিসি’র তথ্যমতে ১৯৭১ সালের ১৭ই মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান টেলিফোনে মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী এবং মেজর জেনারেল খাদিম হুসাইন রাজাকে কমান্ড হাউজে ডেকে পাঠান। আর এই সত্যতা খাদিম হুসাইন রাজা নিজের খেলা আ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ঔন কান্ট্রি ইস্ট পাকিস্তান, ১৯৬৯-১৯৭১’ বইতে স্বীকার করেছেন। তবে কেন শুধুমাত্র খাদিম হুসাইন রাজাকে একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে বিশ্বাস করেননি ইয়াহিয়া খান তা এখনো অজানা। কারণ এই ব্যক্তির একারই সামর্থ্য ছিল গোটা পরিকল্পনা করার। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তান গর্ভনরের উপদেষ্টা রাও ফরমান আলীকেও এই কাজের জন্য ডাকা হয়েছিল সেদিন। কমান্ড হাউজে টিক্কা খান এই দুজনকে সংলাপের বিষয়ে বিস্তারিত জানান এবং অগ্রগতি না হওয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ কি কি রয়েছে তা জানতে চান। জেনারেল টিক্কা খান দুজনকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ‘মিলিটারি অ্যাকশনে’র জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন এমনটাও নিশ্চিত করেন। অথচ শেখ মুজিবের সঙ্গে এর একদিন আগেই সংলাপ শুরু করেছিলেন এই ইয়াহিয়া খান। মূলত সময়ক্ষেপণ করার জন্যই তারা সংলাপ দীর্ঘায়ত করেছিল। ইয়াহিয়া খান গনহত্যার পরিকল্পনা নিয়েও পূর্ব বাংলায় এসেছিলেন তা পরিষ্কার।

১৭ মার্চ নির্দেশনা পেয়ে ১৮ মার্চ সকাল থেকেই ক্যান্টনমেন্টে বসে গণহত্যার নীলনকশা আঁকতে থাকেন দুজন। বিবিসি’র তথ্যমতে খাদিম হুসাইন রাজার বাসায় রাও ফরমান আলীকে নিয়ে সবকিছুর পরিকল্পনা করা হয়। জেনারেল খাদিম হুসাইন রাজা তার বইতে লিখেছেন, সেদিন তার বাঙ্গালি এডিসিকে ব্যস্ত রাখার জন্য নিজের স্ত্রীকে লেলিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। যাতে করে তার বাসায় কি ঘটছে তা যাতে কিছুতেই বুঝতে না পারে ঐ কর্মচারী। খুব অল্প সময়ের মধ্যে দুজনে পুরো পরিকল্পনায় একমত হন এবং দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেন। প্রথমতো ঢাকা অঞ্চলে সামরিক অপারেশনের দায়িত্ব নেন রাও ফরমান আলী। অন্যদিকে, পুরো প্রদেশে বা পূর্ব পাকিস্তানের ধাপে ধাপে অভিযানের দায়িত্ব নেন খাদিম হুসাইন রাজা। পরদিন ঢাকা এবং ঢাকার বাহিরে অপারেশন কিভাবে পরিচালনা করা হবে তা নিয়ে দুজনেই কমান্ড হাউজে উপস্থিত হন। খাদিম হুসাইন রাজার পরিকল্পনাটি কোনোপ্রকার আলোচনা ছাড়াই অনুমোদনপ্রাপ্ত হয়। মূলত খাদিম হুসাইন রাজার পরিকল্পনাটি ছিল পরোক্ষভাবে টিক্কা খানের পরিকল্পনা।

এই ব্যাপারে পাকিস্তানের জেনারেল সিদ্দিক সালিকের বিবৃতি পাওয়া গেছে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর। সিদ্দিক সালিক লিখেছেন, ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পরিকল্পনা ছিল ১৬টি প্যারা সম্বলিত এবং পাঁচ পৃষ্ঠা দীর্ঘ। যদিও এতে বাস্তবায়নের কোনো তারিখ উল্লেখ ছিল না। এছাড়াও পরিকল্পনাকারী খাদিম হুসাইন রাজা তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ২৪শে মার্চ দুটি হেলিকপ্টার নিয়ে রাও ফরমান আলীকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার বাইরে অবস্থানরত ব্রিগেড কমান্ডারদের প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনা জানাতে রওনা হন। তারা বেশকিছু ক্যান্টনমেন্টে ভ্রমণ করেন। পরিকল্পনা জানালেও দিনক্ষণ জানায়নি। অতঃপর ২৫ মার্চ সকল ১১টার পর টিক্কা খান ফোন কলের মাধ্যমে দিবাগত রাতে অপারেশন পরিচালনার নির্দেশনা প্রদান করেন। কারণ ততক্ষণে ইয়াহিয়া খান করাচি পৌঁছে যাবেন। গণহত্যার সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল রাত ১টায়। আর সেদিন রাতে ঘুমন্ত বাঙ্গালিদের উপর কেমন হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল তা কারোরই অজানা নয়। অবশ্য এরই মাঝে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে তখন আর এটি রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে সীমাবদ্ধ থাকেনি। বরঞ্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে বাংলার দামাল ছেলেরা। বিজয় অর্জনের পর আর যাই হোক, ঘুমন্ত মানুষদের উপর নির্বিচারে গুলি চালানোর মতো নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য কোনোপ্রকার ক্ষমা পাকিস্তানকে করা হয়নি। জেনারেল টিক্কা খান, রাও ফরমান আলী, খাদিম হোসাইন রাজা এই ৩ সেনা কর্মকর্তাও আমাদের কাছে আজীবন ঘৃণিত ব্যক্তি হিসেবেই উচ্চারিত হবেন। কারণ তারা এই অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করতে গিয়ে বিশ্ব মানবতা, জাতিসংঘের মানবাধিকার নীতিমালা সহ মানবিকতার তোয়াক্কা করেনি।

বাংলার মানুষ শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর দেখতে চেয়েছিল, শেখ মুজিবুর রহমানকে নেতা মেনেছিল। আর প্রতিদান হিসেবে ঘুমের মাঝেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছিল। পাকিস্তান তো আমাদের ভূখণ্ডে ঐ একদিন হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেনি! উপমহাদেশের সীমানা ভাগের পর পাকিস্তানের রাজনীতি যখন কোলকাতা থেকে লাহোর, করাচিতে স্থানান্তরিত হয় তখন থেকেই ঢাকা তাদের চোখে অবহেলিত! বাংলার মানুষ তাদের নিকট ঘৃণিত। কিন্তু সে রাতের গণহত্যার পর হাতের রক্ত মুছতে পারেনি পাকিস্তানি হানাদাররা। শান্তি, সমৃদ্ধি, উন্নতি, জাতি হিসেবে সম্মান সহ প্রায় সকল দিকদিয়ে ৫১ বছর পরেও আমরা পৃথিবীর বুকে একখণ্ড বাংলাদেশ। শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশ নামেই সবাই চেনে এই ভূখণ্ডকে। অন্যদিকে, পাকিস্তান এখনো নিজ দেশে জঙ্গিবাদ, সিভিলিয়ান হত্যা বন্ধ করতেই হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের গতিশীল অর্থনীতি নিয়ে যখন ইউরোপ, আমেরিকায় আলোচনা হয় তখন পাকিস্তানের মসজিদে বোমা হামলা হয়। শুধুমাত্র এক রাতের গণহত্যা পাকিস্তানকে ছিঁটকে দিয়েছে ইতিহাসের সম্মানসূচক পথ থেকে। রক্তে ভেজা ঢাকার রাজপথ আজো খুনিদের খুঁজে বেড়ায়, আমরা জানি খুনিরা কখনোই সে রক্ত মুছতে পারবে না।

কলমকথা/ বিথী