যশোর জেলার, অভয়নগরে ভবদহ ও আমডাঙ্গা খাল খননে শুরুতেই ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে ।
রয়েছে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ। ভবদহ জলাবদ্ধতা অঞ্চলে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভবদহ জলাবদ্ধতা নিরসন এই ভবদহ নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্যাপকভাবে রয়ে গেছে ব্যাপক অনিয়ম ও দরপত্র মোতাবেক করা হচ্ছে না খনন কাজ। মূল ঠিকাদার বাদে কাজ করছে সাব ঠিকাদার। জমি অধিগ্রহণ না করা ও কাজে অনিয়মের অভিযোগে ফুঁসে উঠছে ভবদহ এলাকার মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের অভয়নগর উপজেলার আমডাঙ্গা খাল খননের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যশোর-খুলনা মহাসড়কের স্লুইস গেট থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত চলবে এ খনন কাজ। সে মোতাবেক খাল খননের দরপত্র আহবান করা হয়।
৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে বরিশালের রূপলী কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। দরপত্র অনুযায়ী খনন কাজে খালের তলদেশ হতে হবে তিন মিটার প্রসস্থ ও এক মিটার গভীর। তবে কোথাও কোথাও এক মিটার গভীর না হলেও প্রসস্থ তিন মিটার হতেই হবে।
সরেজমিনে সোমবার সকালে খনন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খনন করে যে ভেঁড়িবাধ তৈরী করেছিল লংবুম সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। লংবুম চালক উজ্জ্বল খালের পূর্ব পাশের ঢাল ভেঙ্গে খালের তলদেশ থেকে কাঁদামাটি উঠিয়ে প্রলেপ দিচ্ছে। মাঝে মাঝে কয়েক বাকেট মাটি কেটে খালের পাঁড়ে ফেলছে। এসময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন প্রতিনিধিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
লংবুম চালক উজ্জ্বলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঠিকাদারের নির্দেশ মোতাবেক কাজ করছি। কোন কিছু জানতে হলে ঠিকাদারের সাথে কথা বলেন।
বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জানায়, আমডাঙ্গা খাল খননের শুরুতে অনিয়ম শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এভাবে খনন করা হলে বর্ষা মৌসুমের শুরুতে আমরা ডুবে মরব। দ্রুত সময়ের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। খালের পানি নিষ্কাশন করে খনন কাজ করতে হবে। খনন কাজে অনিয়ম বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোল গড়ে তোলা হবে।
ঠিকাদারি কাজের তদারক মোহাম্মদ বাবুর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমডাঙ্গা খালের দুই কিলোমিটার খনন কাজ পেয়েছিল বরিশালের রূপালী কনস্ট্রাকশন। কাজটি বাগেরহাটের বর্ষণ এন্টারপ্রাইজ কিনে নিয়েছে। আমি বর্ষণ এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গত ৬ মে বৃহস্পতিবার থেকে খনন কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে প্রায় চারশত মিটার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা মাঝে মধ্যে এসে দেখে যান। দরপত্র মোতাবেক কাজ হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, খালে পানি না থাকতো নিয়মমত কাজ করা যেত। পানি থাকায় কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।
ভবদহ জলাবদ্ধতা নিরস আন্দোলন কমিটির আহবায়ক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এনামুল হক বাবুল জানান, ইতোপূর্বে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ও স্বেচ্ছাশ্রমে খনন কাজ করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ না করে সেই খালে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে খনন কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সরকারের অর্থ লোপাটে মরিয়া হয়ে উঠেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। তিন লাখ টাকা ব্যয়ে আমডাঙ্গা ও ভবদগের ২১ ভেন্ট স্লুইচ গেট সংস্কার করলে সমস্যার অনেক সমাধান হবে।
অবশ্য খাল খননে অনিয়ম হচ্ছে তা তিনি মানতে নারাজ যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাওহীদুল ইসলাম। প্রথমে লংবুম পরে ভাসমান এস্কেভেটর দিয়ে কাজ করা হবে। জমি অধিগ্রহণ না করে খনন কাজ করা হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বাঁধা আসলে কাজ বন্ধ করা হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।