ডাঃ আজাদ খান, ষ্টাফ রিপোর্টার, জামালপুর: আইন করে সিগারেট বা তামাকজাত পণ্যের সব ধরনের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হলেও থেমে নেই প্রচারণা। ভিন্ন কৌশলে আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সিগারেট কোম্পানিগুলো প্রচারণা চালিয়েই যাচ্ছে। বাহারী এসব প্রচারণার মাধ্যমে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে ধূমপানে আগ্রহী করে তুলছে।

ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ ধারা ৫ এর ‘ক’ উপধারায় বলা আছে, ‘প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়, বাংলাদেশে প্রকাশিত কোনও বই, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ছাপানো কাগজ, বিলবোর্ড বা সাইনবোর্ডে বা অন্য কোনোভাবে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করবেন না, বা করাবেন না।’

আইন অমান্য করলে শাস্তি হিসেবে আইনের ধারা ৫ এর ৪ এ বলা হয়েছে, ‘কোনও ব্যক্তি এ ধারার বিধান লঙ্ঘন করলে, তিনি অনুর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুনঃ পুনঃ একই ধরনের অপরাধ সংঘটন করলে, তিনি পর্যায় ক্রমিকভাবে উক্ত দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডনীয় হবেন।’

সরেজমিনে জামালপুর জেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, সিগারেট কোম্পানিগুলো খুচরা বিক্রেতাদের স্টিকার, লিফলেট, আকর্ষণীয় লাইটার, দিয়ে প্রচারনা চালাচ্ছে। উল্লেখ্য দেশের ২৪ শতাংশ মানুষ গণপরিবহনে ধুমপান করে।

এর মধ্যে গণপরিবহনের চালক-হেলপারের সংখ্যা বেশি। এছাড়া আদালত এলাকায় ৪ শতাংশ, বিপণিবিতানগুলোতে ১২ শতাংশ, শিশু পার্কগুলোতে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ, সিনেমা হলে ৮ শতাংশ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৮ শতাংশ, হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে ৪ শতাংশ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ ধুমপান করে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ গণপরিবহনে ধূমপান বিরোধী সতর্কীকরণ সংকেত ব্যবহার করা হচ্ছে না।

শিশু পার্কগুলোতে ৩ শতাংশ, সিনেমা হলে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে ধূমপান বিরোধী সতর্কীকরণ সংকেত ব্যবহার করা হচ্ছে মাত্র ২১ দশমিক ৬ শতাংশ। ধুমপান যারা করে তাদের চেয়ে ধোঁয়ায় অন্যদের ক্ষতি করে বেশি। এই আইন ভাঙার কারণে যে কি জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে তা প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে।

কোনো জায়গায় আইনের প্রয়োগ হচ্ছে না। ছোট ছোট বালুকণা মিলেই কিন্তু বিশাল মরুভূমির সৃষ্টি। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানি মিলেই সৃষ্টি মহাসাগর। আইন না মানার বিষয়টি হতে পারে ছোট। কিন্তু আমরা বলবো আসলে ছোট বিষয় নয়। কারণ ছোট বিষয় হলে আইন প্রণয়ন হতো না। ছোট হোক বড় হোক জনস্বার্থে বিষয়টির দিকে নজর দেয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একান্ত জরুরী।