রংপুর বিটিসিএলের জিএম-২ আব্দুল মালেক এর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলেছেন রংপুর বিটিসিএল এর কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

তারা বলেন চলতি বছরের মার্চ মাসের ৩ তারিখে রংপুর কার্যালয়ে পদোন্নতির মাধ্যমে যোগদান করে সপ্তাহ খানিক অফিস করে রাজশাহীতে চলে যান আর অফিসে ফিরে আসেন নি।রাজশাহী থেকে ইমেইল ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অফিস পরিচালনা করেন। ফলে দাপ্তরিক কাজকর্ম মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।

মঙ্গলবার দুপুরে বিটিসিএল (বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড) রংপুর কার্যালয়ে গেলে কর্মকর্তা-কর্মচারিরা এসব অভিযোগ করেন। হঠাৎ তার অনুপস্থিতির বিষয়টি অনেকের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে।

জানা গেছে, রংপুর বিটিসিএলের অধিক্ষেত্রে ১০টি জেলা রয়েছে। এই ১০ টি জেলার রংপুর বিটিসিএলের জিএম অফিস থেকে বিটিসিএল এর যাবতীয় দাপ্তরিক কাজের সমন্বয় হয় জিএম-২ রংপুর অফিস থেকে। জিএম আব্দুল মালেক সশরীরে অফিসে উপস্থিত না থাকায় দাপ্তরিক ও কারিগরি কাজে ব্যাহত হচ্ছে। অনেক সরকারি কর্মকর্তা এবং গ্রাহক মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোহাম্মদ আব্দুল মালেকের সাথে সাক্ষাৎ করতে এসে তাকে না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এতে বিটিসিএল এর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে ও কর্যক্রমে জটিলতা তৈরি হচ্ছে বলে জানান একাধিক কর্মকর্তা।

কারিগরি প্রশাসনিক দাপ্তরিক কাজ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি অনেকে চেকের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব জমা করে থাকেন কিন্তু জিএম না থাকায় তা হচ্ছেনা। গ্রাহক পর্যায়ে বিল পরিশোধ, বকেয়া উত্তোলন, কারিগরি পর্যায়ে টেকনিক্যাল এবং নন টেকনিক্যাল, কারিগরি ত্রুটির সম্মুখীন হচ্ছেন গ্রাহকেরা।

বিটিসিএল সূত্র জানায়, রাজশাহীতে নিজ বাসায় বসে ইমেইলের মাধ্যমে অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করার ফলে অফিসিয়াল কর্মকর্তাদের তার ইনস্ট্রাকশন মেইনটেইন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অফিসের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হচ্ছে।

সেই সাথে তার বিরুদ্ধে সেচ্ছাচারিতা ও খামখেয়ালি পোনার অভিযোগ উঠেছে। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ব্যাক্তিগত আক্রোশের জেরে প্রায় ৪৫ থেকে ৬০ জনকে বদলি করেন, এতে ১০ জেলার বিটিসিএল এর কর্মকান্ডে ব্যাপক হযবরল অবস্থা তৈরি হওয়ায় কর্ম পরিবেশ নষ্ট হয়েছে।

এমন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে বিটিসিএল এর ১০ জেলার সম্বনয়ে ৩ টি ডিজিএম কার্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা গণ স্বাক্ষর করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন।

অনুসন্ধানে রংপুর বিটিসিএল অফিসে গেলে উঠে আসে জিএম আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে ভয়াবহ তথ্য। তার নামে অভিযোগে গণ স্বাক্ষর করা কর্মকর্তা কর্মচারীদের নানান ভাবে বদলি ও চাকরিচুত্তির হুমকি দিয়ে আসছেন অনবরত।

জানা গেছে হাতে গোনা কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় আব্দুল মালেকের এরকম বেপরোয়া আচরণ এবং শিষ্টাচার বহির্ভূত কর্মকান্ড পরিচালিত হয়ে আসছে যা বিটিসিএল এর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরেও তার বিরুদ্ধে কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উল্টো আরো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এতে রংপুর অফিসে অনুপস্থিতির বিষয়টি বৈধতা পায়।

এমতাবস্থায় রংপুর তার প্রেষণাদেশ বাতিলের দাবিতে ১০ জেলায় কর্মবিরতি পালন করছেন জিএম এর অধিনস্ত কর্মকর্তারা।কর্ম বিরতি থেকে গ্রাহক সেবা দিলেও যোগ দেননি কোনো মিটিং এ।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুর বিটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোহাম্মদ আব্দুল মালেক দাম্ভিকতার সহিত বলেন, আপনারা সংবাদ করেন আমার সমস্যা নেই, আমি এখন রাজশাহীতেই অফিস করি তিনটি সম্বনয় অফিস আমার দায়িত্বে। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। একসাথে এতগুলো কর্মচারীদের বদলি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন অফিসের প্রয়োজনে করেছি।

লিখিত অভিযোগ থাকার পরও কি ভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পেলো জানতে চাইলে বিটিসিএল এর এমডি মোঃ আনোয়ার হোসেন মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন অভিযোগ পেয়েছি। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। আগামি তিন দিনের ভিতর প্রতিবেদন জমা হবে। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।