প্রাচীন মিশরীয় সমাজ ছিল কৃষিনির্ভর। এর পাশাপাশি শিকারের মাধ্যমেও খাবার যোগান দেয়ার চেষ্টা করা হতো। কিন্তু কৃষিই ছিল প্রধান অর্থনৈতিক কাজ। আজকের দিনে বিজ্ঞানের জয়জয়কার দেখছি আমরা, উচ্চফলনশীল জাতের উদ্ভাবনের কারণে অল্প পরিমাণ জমিতেও বিশাল পরিমাণ ফসল উৎপাদিত হচ্ছে। কিন্তু চার হাজার বছর আগের প্রেক্ষাপটে প্রাচীন মিশরীয়দের উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ ছিল অতি অল্প, যা দ্বারা কোনোমতে দিন গুজরান করা যায়।
এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা বিষাক্ত পোকামাকড়ের জন্য ফসলের বড় অংশ নষ্ট হওয়ার মতো ঘটনা তো ছিলই। উৎপাদিত ফসল আবার ইঁদুরের উৎপাতের জন্য ঠিকমতো সংরক্ষণ করাও কঠিন ছিল।
প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার অধিবাসীরা উৎপাদিত ফসল যেখানে সংরক্ষণ করত (বর্তমানে যেমন গুদামঘর রয়েছে), সেখানে ইঁদুরের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষাক্ত পোকামাকড়ের আগমন ঘটত। এসব বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামড়ে সেসময়ের মানুষের মারা যাওয়া ছিল খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। আর ইঁদুরের উৎপাতের ফলে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে উৎপাদিত ফসলও ঠিকমতো সংরক্ষণ করা যেত না।
প্রাচীন মিশরীয়রা একসময় লক্ষ্য করে, বিষাক্ত পোকামাকড়, সাপ ও ইঁদুরের বিরুদ্ধে বুনো বিড়াল তাদেরকে বেশ ভাল সুরক্ষা দিচ্ছে। এরপর বুনো বিড়ালগুলোকে বিভিন্ন উপায়ে আকৃষ্ট করা হয় (যেমন- মাছের মাথা খেতে দিয়ে)। এভাবে একসময় বুনো বিড়াল মানুষের কাছাকাছি আসতে থাকে, খাবারের জন্য তাদের সংগ্রাম কমে যায়। খাবারের জন্য যেহেতু বিড়ালগুলোর আর আগের মতো সংগ্রাম করতে হতো না, তাই প্রাকৃতিকভাবে তাদের আচরণেও পরিবর্তন আসে। আগের আক্রমণাত্মক, হিংস্র আচরণের বিড়ালগুলো হয়ে ওঠে সহনশীল, প্রাচীন মিশরীয়দের বাসাবাড়িতে জায়গা করে নেয় তারা।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।