মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি: বাগেরহাট শরণখোলার মাতৃভাষা ডিগ্রী কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষের (চলতি দায়িত্বে থাকা ) মোঃ কামরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ সময়ে ওই কলেজের শিক্ষক পরিষদের নেতৃবৃন্দ সহ অনেক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এক লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে ২০০১ সালের ২ অক্টোবরে অধ্যক্ষের কক্ষে থাকা বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করার এক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক এবং কলেজের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন ও মানহানিকর।
কামরুল ইসলাম উক্ত প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আরও জানান, ২০০০ সাল থেকে কলেজে কর্মরত থাকলেও পত্রিকায় প্রকাশিত অভিযোগের সাথে তিনি কখনও সম্পৃক্ত ছিলেন না বা ওই ধরণের কোনো ঘটনা তিনি ঘটাননি। মিডিয়ার কাছে অফিস সহকারী রেজাউল ইসলাম নান্নু কলেজের ভিতরে ও বাইরে কিছু স্বার্থান্বেষী ও কুচক্রী মহলের ইন্ধনে এরুপ বানোয়াট অভিযোগ করেছেন। নান্নু অর্থ আত্মসাৎ ও নানাবিধ দুর্নীতির দায়ে বর্তমানে সাময়িক বরখাস্তকৃত ওই কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অলিউর রহমানের একনিষ্ঠ দোসর ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাবিহা ইয়াসমিন লিপি বলেন, কলেজের আর্থিক দিকগুলো আরও স্বচ্ছ রাখতে অফিস সহকারী রেজাউল ইসলাম নান্নুকে বিধি মোতাবেক নিয়মিতভাবে সবকিছুর হিসাব রাখতে ও দেখাতে নির্দেশ দেন বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ফলে নান্নু’র অবৈধ আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম দেখে অফিস সহকারী নান্নু অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক এহেন মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ পরিকল্পিতভাবে তৈরি করেন। যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই।
এ সময়ে ওই কলেজের শিক্ষক বিষ্ণুপদ দাস বলেন, ১৯৯৯ সালে কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা সহ   প্রয়াত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন ও তার সহধর্মিণী এই কলেজের সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে সভাপতি হিসেবে আছেন ঢাকসু’র সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল হক হায়দার তিনিও প্রায় দেড় বছর ধরে এই কলেজের সভাপতি দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০০১ সালের এতো বড় একটি ঘটনার কথা কেউ কথা কেউ-ই অবগত নয় অথচ এতদিন পর এখন একজন অফিস সহকারীর এধরণের অভিযোগ বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যমূলক।
স্থানীয় বিজ্ঞ মহলের ধারণা একটি অসাধু মহল বিগত দিনে কলেজ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র করেছে। এই দুষ্কৃতকারীদেরকে নির্মূল না করতে পারলে এরূপ ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে ধারাবাহিকভাবে ভালো পাঠ ও ফলাফল প্রদানকারী এ কলেজটিই ধবংস হয়ে যাবে ।
 এ ব্যপারে মুঠোফোনে কলেজের প্রতিষ্ঠতা অধ্যক্ষ (সদ্য অবসরপ্রাপ্ত) নজরুল ইসলাম তালুকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০০১ সালে বঙ্গবন্ধুর ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর করার মতো কাজ কামরুল ইসলাম করেন নাই এবং এরূপ কোনো ঘটনা এই কলেজে আদৌও ঘটেনি। কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলক।
 এরূপ কাল্পনিক ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করে কলেজের ভাবমূর্তি নষ্ট ও তার সম্মান ক্ষুন্ন করা ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান কামরুল ইসলাম সহ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা শিক্ষকবৃন্দ।
 এ ব্যাপারে অফিস সহকারী রেজাউল ইসলাম নান্নু’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কোথাও অভিযোগ দেইনি । সাংবাদিকরা এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমি ২০০১ সালের ওই ঘটনা বলি।’
কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি আব্দুল হক হায়দার বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের অবসরের সময়ে অবস্থার প্রেক্ষিতে কামরুল ইসলাম সাহেবকে চলতি দায়িত্বে দেয়া হয়। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে গভর্ণিং বডির সভা করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং অধ্যক্ষ নিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পাশাপাশি যে ঘটনা সামনে এসেছে তদন্ত সাপেক্ষে এর প্রকৃত হোতাকে খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।