যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নীরার মৃত্যু যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নুরজাহান ইসলাম নীরা মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ২৫ মিনিটের দিকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল ও যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরিফ আহমেদ।
ডাক্তার আরিফ আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান নুরজাহান ইসলাম নীরাকে বেলা ১১টার দিকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৫৫ বছর।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নীরার মরদেহ যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ছিল।
এদিকে, নুরজাহান ইসলাম নীরার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে যশোরের রাজনৈতিক অঙ্গণে শোকের ছায়া নেমে আসে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনসহ তার দীর্ঘদিনের রাজনৈকিব সহকর্মীরা ছুটে যান হাসপাতালে। সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
নুরজাহান ইসলাম নীরা গত বছরের ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত যশোর সদর উপজেলা উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকে দু’ লাখ ৬৩ হাজার ছয়শ’ ২৫ ভোটের ব্যবধানে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী নুর উন নবীকে পরাজিত করেছিলেন। নির্বাচনে নীরা পেয়েছিলেন দু’ লাখ ৭৬ হাজার ১৯ ভোট এবং নুর উন নবী পেয়েছিলেন ১২ হাজার তিনশ’ ৯৪ ভোট।
তিনি দীর্ঘদিন হার্ট জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। নির্বাচনের দু’দিন আগে ১৮ অক্টোবর রোববার সন্ধ্যায় দেয়াড়া ইউনিয়নে এক নির্বাচনী সমাবেশ শেষে শহরে ফিরে আসার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন নুরজাহান ইসলাম নীরা। সহকর্মীরা দ্রুত তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করেন। কিন্তু, অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে খুলনায় স্থানান্তর করেন। সাথে সাথে তাকে খুলনায় নিয়ে ফর্টিস হার্ট ইন্সটিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে নির্বাচনের আগের দিন যশোর ফিরে আসেন তিনি।
নির্বাচনের পর ২২ অক্টোবর নুরজাহান ইসলাম নীরা ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে ২৪ অক্টোবর এনজিওগ্রাম করানোর পর তার হার্টে একাধিক ব্লক ধরা পড়ে। ওই দিনই তার হার্টে রিং পরানো হয়।
আজ বৃহস্পতিবার তিনি নিজের বাড়িতে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা সাথে সাথে তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা কেয়ার ইউনিটে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানেই মাত্র ২৫ মিনিটের ব্যবধানে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এই রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধি।
নুরজাহান ইসলাম নীরা দীর্ঘ ৪১ বছরেরও বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। দীর্ঘ কয়েক বছর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি ছিলেন যশোর পৌরসভার কমিশনার। নুরজাহান ইসলাম নীরা যশোরের রাজপথের একজন লড়াকু সৈনিক হিসেবে পরিচিত। স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনসহ যশোর উন্নয়নের যে কোনো আন্দোলনে তিনি ছিলেন অগ্রসৈনিক।
তথ্য সুত্র- গ্রামের কাগজ
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।