নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে আকস্মিক ঝড়ে শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। পাশাপাশি গাছপালা উপড়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার তেতুলিয়া ও বড়তলী-বানিয়াহারী এ দুটি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে আকস্মিক ঝড়ে শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। তালিকা তৈরি করে পরবর্তীতে তাদের সহায়তার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো হলো- তেতুলিয়া ইউনিয়নের পশুখালি, হরিপুর, আজমপুর, নওগাঁও ও জৈনপুর। আর বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের নওগাঁও ও পিরোজপুর।
এছাড়া পশুখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পুরনো ভবনের টিনের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঝড়ে। গাছপালা উপড়ে গেছে হাজার খানেকের বেশি।
ওই উপজেলার পশুখালি গ্রামের মো. জিয়াদ খান বলেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পশুখালি গ্রামে। এই গ্রামে প্রায় একশ টিনের ঘর ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে অনেকের বসতঘর, কারো কারো গোয়াল ঘর, রান্নাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। আমার নিজের একটি গোয়াল ঘর ভেঙেছে। এছাড়া পুরো গ্রামজুড়ে হাজার খানেক গাছপালা উপড়ে গেছে ঝড়ে। ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় বেশ কয়েকটি গ্রাম বিদ্যুৎবিহীন। কয়েকগ্রামে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি। কবে ঠিক হবে আমরা কেউ জানি না।
তেতুলিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (পশুখালি-হরিপুর) মো. আবুল মিয়া বলেন, ঝড়ে কয়েকটি গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর উপড়ে ফেলেছে। এরমধ্যে কয়েকটি আধপাকা বাড়ির দেয়ালেও ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া গাছপালা ও ফসলসহ ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
পশুখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদুল্লাহ জানান, বিদ্যালয়ের পুরনো একটি ভবনের টিন ঝড়ে উড়ে গেছে। এটি একটি পরিত্যক্ত ভবন। তবে নতুন ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
তেতুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী জহর বলেন, ঝড়ে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে পশুখালি গ্রামে। এই গ্রামে ৩০টি বাড়িঘর ভেঙেছে। এছাড়া নওগাঁয় পাঁচটি, জৈনপুরে তিনটি, আজমপুরে ছয়টি ও হরিপুরে পাঁচটি ঘর ভেঙেছে। এর বাইরে অনেকের রান্নাঘর, গোয়ালঘর অনেক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকালে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো দেখে এসেছি। এখন তালিকা তৈরির কাজ চলছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার বলেন, আমার ইউনিয়নের নওগাঁও ও পিরোজপুর এ দুটি গ্রামের ১৩-১৪টি বসত বাড়ি আকস্মিক ঝড়ে ভেঙে গেছে। এছাড়া গোয়ালঘর, রান্নাঘরসহ বেশকিছু ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকালে তাদের দেখে এসেছি। উপজেলা প্রশাসনের শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। তালিকা তৈরি করে তাদের সহায়তা দেওয়া হবে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ৮০-৮৫টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করতে বলেছি। পরে তালিকা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়া হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।