ইসতিয়াক আহমেদ এবং তার ৮ জন বন্ধু মিলে বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি সংগঠন করতে চাচ্ছে। তারা তাদের এই কার্যক্রম সুধু তাদের এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ক্রমান্বয় পুরো দেশ ব্যাপী তাদের এই সমাজ সেবা ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছে। কিন্তু তাদের এই সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য তারা প্রথমেই বাংলাদেশ সরকারের থেকে অনুমোদন নিয়ে নিতে চাচ্ছে কিন্তু তারা জানে না কোথায় থেকে কিভাবে তারা এই ধরনের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সরকারিভাবে অনুমোধন নিবেন?
তো চলুন এখন আমি আপনাদের দেখাবো কিভাবে একটি সেবামূলক সংগঠনকে সরকারিভাবে রেজিস্ট্রেশন নিতে হয়?
জেকোন সেবামূলক সংগঠন যদি একাধিক জেলাতে বা দেশ ব্যাপী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাই তবে উক্ত সংগঠনকে জয়েনস্টোক থেকে, সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন এ্যাক্ট এর মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে , এটিকে অনেকেই ফাউন্ডেশন বলে থাকে আবার অনেকে সোসাইটি বলে থাকে কিংবা অনেকেই সংগঠন নামেও ডেকে থাক
যাইহোক জয়েনস্টোক থেকে, সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন এ্যাক্ট এর মাধ্যমে কোন সংগঠন নিবন্ধিত হলে উক্ত সংগঠনের নামে অন্য কেউ সংগঠন পরিচাওলনা করতে পারবে না। এছাড়া উক্ত সংগঠন চাইলে দেশের মধ্যে থেকে চাঁদা বাবদ অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে এছাড়া আরো অনেক সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে যদি কোন সংগঠন এই আইনে আওতায় নিবন্ধিত হয়ে থাকে
তো চলুন প্রথমেই দেখি সোসাইটি এ্যাক্ট এ রেজিস্ট্রেশনের জন্য কি কি লাগবেঃ
১. অন্তত ৭ জন সদস্য থাকতে হবে
২. সকল সদস্যেকে প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হতে হবে
৩. সকল সদস্যের NID বা জন্ম নিবন্ধন সনদ লাগবে
৪. সকল সদস্যের পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে
উপরোক্ত সবগুলো উপাদান থাকলে সর্বপ্রথম আপনাদের ফাউন্ডেশনের নামের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে, মনে রাখবেন আপনার পছন্দের নামটি অন্য কোন ফাউন্ডেশন যদি ব্যবহার করে , থাকে তবে আপনি আর সেই নামটি পাবেন না। এছাড়া নামের ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য অরো অনেক নিয়মকানুন আছে
যাইহোক আপনার পছন্দের নামটি খালি আছে কিনা তা নিচের ওয়েব সাইট থেকে যাচাই করে দেখুন http://app.roc.gov.bd:7781/psp/nc_search
১. এখানে আপনার পছন্দের নামটি খালি থাকলে উক্ত নামের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে
২. এরপর আপনাদের পছন্দের নামটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্ধারিত ফি ব্যংকে প্রদান করতে হবে, নির্ধারিত ফি প্রদানের ২ দিনের মধ্যে আপনার নামের ছাড়পত্র পাওয়া যাবে
৩. নামের ছাড়পত্র পাওয়ার পর এবার আপনাদের ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র প্রস্তুত করতে হবে। ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্রে হল আপনাদের ফাউন্ডেশনটি কিভাবে পরিচালিত হবে, কিভাবে নির্বাচন হবে, কে কোন পদে থাকবে, কিভাবে হিসাব রক্ষিত হবে ইত্যাদি নানা বিষয় উক্ত গঠনতন্ত্রে উল্লেখ থাকবে
এই গঠনতন্ত্রটি খুব গুরুত্তপূর্ন তাই এই গঠনতন্ত্রটি অবশ্যই একজন দক্ষ আইনজীবীর মাধ্যমে প্রস্তুত করাতে হবে
৪. ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র প্রস্তুত করার পর এবার আপনাদের ফাউন্ডেশনের রেজিস্ট্রেশন ফি ব্যংকে প্রদান করতে হবে। সবশেষে নামের ছাড়পত্রের কাগজ, ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র, রেজিস্ট্রি ফি, সদস্যদের পরিচয়পত্র সহ অন্যান্ন সকল কাগজপত্র একত্রে জয়েনস্টোকে জমা দিতে হবে
৫. জয়েনস্টোকে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদনের পর আপনাদের ফাউন্ডেশন গঠনের প্রকৃত উদ্দেশ্য এবং উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিগত তথ্য যাচাইয়ের জন্য NSI একটি তদন্ত করবে। NSI যদি আপনাদের ফাউন্ডেশন সম্পর্কে পজেটিভ রিপোর্ট দেয় তবে জয়েনস্টোক থেকে আপনাদের রেজিস্ট্রেশন লাইসেন্স প্রদান করবেন।
ফাউন্ডেশনের লাইসেন্স সরকারিভাবে পাওয়ার পরে আপনারা আনুষ্ঠানিকভাবে আপনাদের ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।
তথ্যসুত্র: বিডি আইনকানুন ডটকম।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।