• এ সপ্তাহেই উত্তর জেলা আ.লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হতে যাচ্ছে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে উপজেলা চেয়ারম্যন আবু তৈয়বের নাম।

    সুমনসেন চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি-

প্রায় এক বছর পর অবশেষে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হতে যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহেই ঘোষিত হবে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি। আগের প্রস্তাবিত কমিটিতে সংশোধনী এনে নতুন করে করা কমিটিতে বাদ পড়া তিনজনকে গুরুত্বপূর্ণ পদে আনা হচ্ছে। এতে তিন উপজেলার প্রভাবশালী তিন নেতার পাশাপাশি ঠাঁই হচ্ছে সাবেক ছাত্র নেতাদেরও। উপদেষ্টা হিসেবে থাকছেন প্রভাবশালী এক সাংসদও।

সাবেক ও বর্তমান দুই মন্ত্রীর সিদ্ধান্তে করা এ কমিটিতে যুক্ত হচ্ছেন ২০ থেকে ৩০ শতাংশ নতুন মুখ। তবে প্রস্তাবিত কমিটিতে কম গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ার কথা থাকলেও সংশোধিত কমিটিতে
মনজু, নুরুল হুদা ও তৈয়বের পদোন্নতিটাই চমক হিসেবে ধরা হচ্ছে। তবে মোশাররফ হোসেন বিরোধী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া গিয়াস উদ্দিন ও ইউনুস গণি চৌধুরী সংশোধিত কমিটিতেও অবহেলিত থাকছেন। তাদের নামমাত্র সদস্য হিসেবে কমিটিতে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত বছরের ৭ ডিসেম্বর সরাসরি কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শেখ আতাউর রহমান। কিন্তু আগের কমিটির অনেক ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে ‘নিজেদের লোক’ দিয়ে প্রস্তাবিত কমিটির রূপরেখা তৈরী করেন সভাপতি ও সেক্রেটারি। তবে সেই কমিটির বিরুদ্ধে দলীয় সভানেত্রীর সঙ্গে দেখা করে নালিশ দিয়েছিলেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলে করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে এম এ সালামের বিরোধী পক্ষ। পরে কমিটি হচ্ছে হচ্ছে বলার পরও আটকে যায় এ কমিটি গঠন প্রক্রিয়া।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহেই ঘোষণা হচ্ছে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। আগের প্রস্তাবিত কমিটিতে নামমাত্র রাখা হলেও সংশোধিত কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে ঠাঁই পেয়েছেন তিন প্রভাবশালী নেতা। তারা হলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এইচ এম আবু তৈয়ব, যুগ্ম সম্পাদক পদে পরিবহন নেতা হাটহাজারীর মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু ও মিরসরাইয়ের নুরুল ‍হুদা। উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হয়েছে উত্তর জেলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাউজানের সাংসদ ফজলে করিম চৌধুরীকে।

এছাড়া গত কমিটির বেশ কয়েকটি পদেও আনা হয়েছে পরিবর্তন। বিশেষ করে সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদক পদেও ওলট-পালট করা হচ্ছে। ৭৫ সদস্যের এই কমিটিতে রাখা হয়েছে একঝাঁক সাবেক ছাত্রনেতাকেও। কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি ও যুগ্ম সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কমিটিতে কারা থাকতে পারবেন সে বিষয়ে পৃথকভাবে দুই নেতার মতামতও নিয়েছেন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। কমিটি অনুমোদনের ক্ষেত্রে সক্রিও রয়েছেন সাবেক-বর্তমান দুই মন্ত্রী।

এদিকে নতুন এ কমিটিতে সভাপতি-সম্পাদকের পছন্দের ব্যক্তিদেরও রাখা হয়েছে। সবমিলিয়ে পুরো কমিটিতে ২০-৩০ শতাংশ নেতা প্রথমবারের মতো স্থান পেতে পারেন। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম রোববার (২৯ নভেম্বর) রাতে সিভয়েসকে বলেন, ‘উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার পর থেকে কমিটি ঘোষণা হচ্ছে-হবে বলে এখনো হয়নি। তবে যে কোন সময় কেন্দ্র থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হবে।’

পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিন উপজেলা প্রভাবশালী তিনজনকে রাখা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেটা আমি জানিনা তা কেন্দ্রের বিষয়।’

তবে গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান পাওয়া হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু বিষয়টি স্বীকার না করলেও বলেছেন, ‘শুনেছি আমাদেরকে উত্তর জেলার কমিটিতে রাখা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে কেন্দ্র থেকে ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। ফটিকছড়ি ও মীরসরাই থেকে দুই জনকে রাখা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৭ডিসেম্বর উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ৩৬৬ জন কাউন্সিলর প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি পদে এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক পদে শেখ আতাউর রহমানকে বিজয়ী করেন। কাউন্সিল অধিবেশনে ভোটাভুটিতে সভাপতি পদে বিজয়ী এমএ সালাম পেয়েছিলেন ২২৩ ভোট ও নিকটতম এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী পেয়েছিলেন ১২৯ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী শেখ আতাউর রহমান পেয়েছিলেন ১৯৬ ভোট এবং গিয়াস উদ্দিন পান ১৫৪ ভোট।

এদিকে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ‌‌‘বিতর্কিত নেতাদের স্থান দেওয়ার অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করা রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। যদিও ওই সময়ে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন। তবে এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগের একটি কপি সংরক্ষিত আছে।

ওই অভিযোগ পত্রে চট্টগ্রাম উত্তর জেলার বিভিন্ন উপজেলার ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করে তাদের নানা কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলা হয়েছে এরা বির্তকিত। ওই তালিকার মধ্যে আওয়ামী লীগৈর প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের একান্ত সহকারীর নামও রয়েছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, হাটহাজারী উপজেলার বাসিন্দা নূর খান। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা। জীবনে কোনদিন আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না, তার বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজের নানা অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে।

ওই অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়, হাটহাজারীর আরেক জন হলেন, মো. সেলিম উদ্দিন। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনৈতিক ব্যবসা করার কারণে সারা জীবনের জন্য সে দেশের সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ হয়েছেন। রাউজান উপজেলার আবুল কালাম আজাদ। নিজ এলাকার সাথে কোনো সম্পৃক্ততা নেই। জীবনে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান

প্রায় এক বছর পর অবশেষে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা