শোকজের জবাব না দেওয়ায় ঢাকা উত্তরের সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে যুব মহিলা লীগ। গত ২ জানুয়ারি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতির স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরই মাঝে আজ বুধবার নিজের ফেসবুকে ওয়ালে বিভিন্ন ইস্যু তুলে ধরে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাজমা আক্তারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তুহিন।

 

তিনি নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে লিখেছেন, ‘নাজমা আপা আমি সত্যি বললে আপনার জ্বলে কেন? আপনি কি প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতার হলে কোর্টে গিয়েছেন- যান নাই। আমি যুব মহিলা লীগের মেয়েদের নিয়ে মিছিল করেছি এটাই সত্যি। ওয়ান ইলেভেনে যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সুধা সদনের গেটে আমি পালন করেছি, কিন্তু আপনি করেন নাই। যুব মহিলা লীগের প্রথম গ্রেফতার আমি এটা কি মিথ্যা? মামলায় আমাকে এক নম্বর আসামি করা হয় এটা কি মিথ্যা? আপনি সাব-জেলসহ কোথাও মেয়েরা আমার সাথে গেলে- খারাপ ব্যবহার করেন নাই, এটা কি মিথ্যা? আমি যুব মহিলা লীগে প্রথম নির্যাতনের স্বীকার এটা কি মিথ্যা? আপা আপনি ১৮ আসনে যখন সব সংগঠন কেন্দ্র কমিটি দিলো, তখন আপনি কমিটি দেন নাই আর আমি যখন দায়িত্ব পালন করেছি এটাই আপনার সমস্যা এটা কি মিথ্যা? আপা আপনি যে পরিকল্পিত নাটক সাজিয়েছেন ৩২ নম্বরে ফুল দেয়া নিয়ে এটা কি মিথ্যা? যদি সত্যি হয় আমার বেয়াদবির একটা প্রমাণ দেন।’

 

সাবিনা আক্তার তুহিন আরও লিখেছেন, ‘আমার পাপিয়ার দাওয়াতে যাওয়া বা তাকে দাওয়াত দেয়া যদি অপরাধ হয়, তবে আপনি পদ দেয়ার জন্য আপনার কি পদত্যাগ করা উচিত ছিলো না? আপনি যখন দেখলেন গোপালগঞ্জের টোকন সাহেবকে আটক করে টাকা চাওয়া হয়েছে আর ভুক্তভোগী যখন ফোন দিয়েছে তাকে কেনো আটকিয়ে টাকা নিতে বললেন- ব্যবস্থা নিলেন না কেন?আপা আপনি আর অপুদি ২০১৪ সালে কমিটি দিলেন আর আমি পিকনিক থেকে চিনলাম ২০১৭ সালে, যখন আমি এমপি তখন। আমার সাথে ২০১৮ সালে যোগাযোগ নিজ থেকে বন্ধ করেছে কারণ কি? উত্তর আমি দেই আপনি আর অপুদি দু’জনে এলাকা ভাগ করেছেন আর আপনার ভাগে ছিলো নরসিংদী তাই সে জানে আপনি আমাকে দেখতে পারেন না তাই সে দূরত্ব বজায় রেখেছে। ২০১৯ সালে পুনরায় নির্বাচিত করলেন এবং জড়িয়ে ধরলেন আর ফুলের শুভেচ্ছা গ্রহণ করলেন- এতেই বুঝা যায় তার নষ্টের ব্যাপারে আপনি দায় এড়াতে পারেন না।’
তিনি লিখেন, ‘আপনি (নাজমা আক্তার) কি বলেছেন ওয়েস্টিনের সিসি ফুটেজ প্রকাশ করতে কে কে জড়িত তার সাথে? পাপিয়া যখন গ্রেফতার আমি তখন দুবাই তাই আপনাদের আইডিতে থাকা ছবি কেটে দিয়েছেন কিন্তু আমি একদিন পরে জানতে পারাতে আমার ছবি রয়ে গেছে। জেলার সাধারণ সম্পাদক পদ দিবেন কোন যাচাই করবেন না- আবার নরসিংদী আপনার অধিনে ছিলো দায়িত্ব আপনার না যার সাথে ছবি আছে তার দায়িত্ব? যদি তাদের দায়িত্ব তবে তো অনেক বড় বড় মানুষকে জবাব দিতে হবে। আপনার লেখা একক জবাব কেনো দেব? লিলি আমার মেয়েদের মারলো কেন, আপনি কি জবাব চেয়েছেন? আপনি আমাকে পিছন থেকে লাথি মেরেছেন, প্রমাণ আছে। যদি প্রমাণ করতে পারি- আপনি কি এমন অসৎ আচরণের জন্য পদত্যাগ করবেন?

 

তুহিন আরও লিখেছেন, ‘আপনি প্রধানমন্ত্রীর নমিনেশন পাওয়া হাবিব ভাইকে রাজাকার বললেন মিছিল করলেন- এর জন্য আপনাকে কি দল সাজা দিয়েছেন? আপনার ভাই কাবুল বাড়ি দখল করতে গিয়ে গ্রেফতার হলেন এর জন্য কি আপনি দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন? আপনি মনোনয়ন পেলেন না আপনার মেয়েরা মনোনয়ন বোর্ড নিয়ে আপনাকে সাথে নিয়ে ৩ নম্বর ঘেরাও করে মনোনয়ন বোর্ড টাকা খেয়েছে- এটা বলে স্লোগান দিলেন, এটা কি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ না? আমি যা বলছি তার প্রমাণ আমার কাছে আছে। আমি আপনার দেয়া সদ্য কমিটি ঢাকা জেলার উত্তরের কমিটিতে পাপিয়ার মতো অনৈতিক কাজে জড়িত এমন কমিটি দিয়েছেন মিডিয়া চাইলে তার প্রমাণ আমি দিতে পারবো। আমার এলাকায় দু’টো কমিটি দিয়েছেন আপনার পকেট সাধারণ সম্পাদককে দিয়ে- তাদের এমন সব প্রমাণ আছে, তা দেখলে মানুষ লজ্জা পাবে। কোন মিডিয়া চাইলে মহিলা প্রতিনিধি চাইলে দেখাতে পারবো। আমি যখনই প্রমাণ পেয়েছি বের করেছি আর আপনি গ্রুপিং এর জন্য বুকে তুলে নিয়েছেন। আমি সব শেষে বলতে চাই, সভাপতি আছি- রাজপথই বলে দেবে কে থাকবে কে চলে যাবে।’

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)