তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতে পারে। কিন্তু দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে, দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ধ্বংস করতে বিদেশে দেশের বিরুদ্ধে চিঠি দেওয়া, লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করা দেশদ্রোহী ও দেশবিরোধী কাজ। এটা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। মূলত: বিএনপি ও তাদের নেতারা দেশদ্রোহী কাজ করছেন।’

 

আজ বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘বিএনপি বিদেশে লবিস্ট নিয়োগসহ দেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করছে সেগুলো তদন্ত করে খুঁজে বের করা হবে। অবৈধ অর্থ কোত্থেকে কিভাবে গেল, কারা নিলো সেগুলো খুঁজে বের করে সেই তদন্তের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীও সেদিন সংসদে বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন।’

 

হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, ‘জনগণের ওপর আস্থা থাকলে তো বিএনপির বিদেশিদের কাছে চিঠি দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এদেশের ক্ষমতার মালিক জনগণ, জনগণই ঠিক করবে কারা ক্ষমতায় যাবে এবং কারা ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে। মির্জা ফখরুল সাহেব নিজে স্বাক্ষর করে ইউএস কংগ্রেসের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে যেভাবে চিঠি দিয়েছেন সেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

 

ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় লবিস্ট নিয়োগ করে তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের চেষ্টা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য পুত্র এবং আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যার উদ্দেশ্যে তারা এফবিআই এজেন্ট নিয়োগ করেছেন, সেই এজেন্টকে পরে বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়েছে। বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বন্ধ করার জন্য বেগম খালেদা জিয়া ওয়াশিংটন টাইমসে নিজের নামে নিবন্ধ লিখেছেন কয়েক বছর আগে।’

 

মন্ত্রী আরো বলেন, এই কাজগুলো তো দেশবিরোধী। দেশদ্রোহী এ কাজগুলো বিএনপি করছে। তারা যে বিভিন্ন জায়গায় লবিস্ট নিয়োগ করেছেন, সে ডকুমেন্ট আমার আইপ্যাডে সংগৃহীত আছে। এই নিয়ে গণমাধ্যমেও ডকুমেন্টসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। নিজের আইপ্যাড থেকে এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে প্রমাণপত্রগুলো দেখান তথ্যমন্ত্রী।

 

এর আগে বক্তৃতাকালে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রকে একটি জাতীয় স্তরের গণমাধ্যম উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এর অবস্থান চট্টগ্রামে হলেও টেরেস্ট্রিয়াল সম্প্রচারের মাধ্যমে দেশের সত্তর ভাগ অংশে এটি দেখা যায়। আর ক্যাবল কানেকশন দিয়ে সারা দেশে এবং এপসের মাধ্যমে সারা পৃথিবীর মানুষ দেখতে পারে। এ সময় তিনি জানান, শিক্ষা ও কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান নিয়ে বিটিভি’র অধীনে খুব শিগগিরই আরেকটি চ্যানেল চালু করা হবে। এছাড়া দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে বিটিভির নতুন কেন্দ্র চালুর প্রকল্প চলমান।

 

চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জন্য ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় এখানে নতুন স্টুডিও, অডিটোরিয়াম ও নতুন ভবন হবে। ফলে এ কেন্দ্র থেকে আরো মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান নির্মাণ ও সম্প্রচার করা সম্ভব হবে।

 

দৈনিক আজাদী পত্রিকার সম্পাদক এম এ মালেক, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের বিদায়ী মহাব্যবস্থাপক নিতাই কুমার ভট্টাচার্য ও এই পদে নবনিযুক্ত মাহফুজা আক্তার এবং কেন্দ্রের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।