মুসলিম মিল্লাতের সার্বজনীন দুইটি উৎসবের অন্যতম একটি কোরবানির ঈদ। ঈদুল আজহার প্রধান আকর্ষণ ও বড় আমল হলো কোরবানি করা। কোরবানি হলো ইসলামের একটি শিয়ার বা মহান নিদর্শন। নিজের অর্থে কেনা পশুটি আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে জবাই করার মাধ্যমে একজন প্রকৃত মুসলমান মূলত নিজেকে আল্লাহর কাছে সমপর্ণের শিক্ষা নেয়। কোরবানির পশুতে প্রত্যেক অংশীদারের অংশ সমান হতে হবে। কারো অংশ অন্যের অংশ থেকে কম হতে পারবে না।

যেমন কারো অর্ধেক ভাগ, কারো দেড় ভাগ। এমন হলে কোনো শরিকের কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭) উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগেকোরবানি করা জায়েয। (মুসলিম, হাদিস: ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)

 

কোনো অংশীদারের নিয়ত গলদ হলে
অংশীদারদের কেউ যদি আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কোরবানি না করে, শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কোরবানি করে; তাহলে তার কোরবানি শুদ্ধ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে অংশীদারদেরও কোরবানি হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অংশীদার নির্বাচন করা জরুরি। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৮, কাজিখান: ৩/৩৪৯)

 

কোরবানির পশুতে আকিকার অংশ

  1. কোরবানির গরু, মহিষ ও উটে আকিকার নিয়তে অংশীদার হতে পারবে। এতে কোরবানি ও আকিকা দুটোই শুদ্ধ হবে। ছেলের জন্য দুই অংশ আর মেয়ের জন্য এক অংশ দিতে হবে।
  2. শৈশবে আকিকা করা না হলে বড় হওয়ার পরও আকিকা করা যাবে। যার আকিকা সে নিজে এবং তার মা-বাবাও আকীকারগোশত খেতে পারবে। (ইলাউস সুনান: ১৭/১২৬)
  3. ফাতাওয়া শামীসহ ফিকহ-ফাতাওয়ার কিতাবাদিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, কোরবানির সাথে আকীকা সহীহ। (রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; হাশিয়াতুত তহতাভি আলাদ্দুর: ৪/১১৬)

হারাম টাকার কোরবানি শুদ্ধ নয়

  • কোরবানি করতে হবে সম্পূর্ণ হালাল সম্পদ থেকে। হারাম টাকা দ্বারা কোরবানি করা শুদ্ধ নয় এবং এক্ষেত্রে অন্য অংশীদারদের কোরবানিও শুদ্ধ হবে না।
  • কেউ যদি গরু, মহিষ বা উট একা কোরবানি দেওয়ার নিয়তে কিনে আর সে ধনী হয়, তাহলে তার জন্য এপশুতে অন্যকে অংশীদার করা জায়েয। তবে এতে কাউকে শরিক না করে একা কোরবানি করাই শ্রেয়। শরিক করলে সে টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম।
  • আর যদি ওই ব্যক্তি এমন গরীব হয়, যার উপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয়, তাহলে যেহেতু কোরবানির নিয়তে পশুটি ক্রয় করার মাধ্যমে লোকটি তার পুরোটাই আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করে নিয়েছে, তাই তার জন্য এপশুতে অন্যকে শরিক করা জায়েজ নয়। যদি শরিক করে তবে ওই টাকা সদকা করে দেওয়া জরুরি হবে। কোরবানির পশুতে কাউকে শরিক করতে চাইলে পশু ক্রয়ের সময়ই নিয়ত করে নিতে হবে। (কাজিখান: ৩/৩৫০-৩৫১, বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২১০)