কোরআনে বর্ণিত বহুল পরিচিত নবীদের অন্যতম একজন মুসা (আ.)। তিনি হলেন ইবরাহিম (আ.)-এর অষ্টম অধস্তন পুরুষ। মুসা (আ.)-এর বাবার নাম ছিল ‘ইমরান’ ও মায়ের নাম ছিল ‘ইউহানিব’। তবে মায়ের নামের ব্যাপারে মতভেদ আছে।

(তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন)
মহান আল্লাহর প্রিয় এই নবীর পৃথিবীতে আগমন ঘটাতে দাম্ভিক ফিরাউন কত হাজার হাজার শিশুকে হত্যা করেছিল। কিন্তু মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি মিসরেই জন্মগ্রহণ করেন এবং লালিত-পালিত হন তাঁর চির শত্রু মিসর সম্রাট ফেরাউনের ঘরে।

পবিত্র কোরআনে তাঁর সহোদর ভাই হারুন (আ.)-এর কথাও উল্লেখ আছে। তিনি ছিলেন মুসা (আ.)-এর চেয়ে তিন বছরের বড় এবং তিনি মুসা (আ.)-এর তিন বছর আগেই মৃত্যুবরণ করেন।

মুসা (আ.)-এর মৃত্যু কোথায় হয়েছিল এবং তাঁর সমাধি কোথায় আছে, তার বর্ণনা হাদিস শরিফে পাওয়া যায়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, মৃত্যুর ফেরেশতাকে মুসা (আ.)-এর কাছে পাঠানো হলে মুসা (আ.) তাঁকে চপেটাঘাত করেন (যার ফলে তাঁর চোখ বেরিয়ে যায়)। তখন মৃত্যুর ফেরেশতা তাঁর প্রতিপালকের (আল্লাহর) কাছে ফিরে গিয়ে বলেন, আমাকে এমন এক বান্দার কাছে পাঠিয়েছেন যে মরতে চায় না। তখন আল্লাহ তাঁর চোখ ফিরিয়ে দিয়ে হুকুম করেন, আবার গিয়ে তাঁকে বলো, তিনি একটি ষাঁড়ের পিঠে তাঁর হাত রাখবেন, তখন তাঁর হাত যতটুকু আবৃত করবে, তার সম্পূর্ণ অংশের প্রতিটি পশমের বিনিময়ে তাঁকে এক বছর করে আয়ু দান করা হবে। মুসা (আ.) এ শুনে বলেন, হে আমার রব, অতঃপর কী হবে? আল্লাহ বলেন, অতঃপর মৃত্যু। মুসা (আ.) বলেন, তা হলে এখনই হোক। তখন তিনি একটি পাথর নিক্ষেপ করলে যতদূর যায় বাইতুল মাকদিসের ততটুকু নিকটবর্তী স্থানে তাঁকে পৌঁছিয়ে দেওয়ার জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে নিবেদন করেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি সেখানে থাকলে অবশ্যই পথের পাশে লাল বালুর টিলার কাছে তাঁর কবর তোমাদের দেখিয়ে দিতাম। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৩৩৯)

এই হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় যে মুসা (আ.)-এর সমাধি বা মাজার বাইতুল মুকাদ্দাসের উপকণ্ঠে। পৃথিবীতে মুসা (আ.) কত দিন হায়াত পেয়েছিলেন, তা নিয়ে মতানৈক্য আছে, কারো কারো মতে তিনি হায়াত পেয়েছিলেন আশি থেকে এক শ বছর। কিন্তু ‘আল-কামেল ফিত তারিখ’ কিতাবের ভাষ্য মতে মুসা (আ.) ১২০ বছর হায়াত পেয়েছিলেন। (আল-কামেল ফিত তারিখ : ১/১৭২)

কলমকথা/বি সুলতানা