আল্লাহর জন্য মানুষকে ভালোবাসা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন এ ধরনের লোকদের বিশেষ পুরস্কার দেবেন। ভালোবাসা তাজা রাখার একটি মাধ্যম হলো সাক্ষাৎ। কেউ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তার কোনো আত্মীয় কিংবা বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, আল্লাহ তাআলা তার ওপর খুশি হন।
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাত : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক ব্যক্তি তার ভাইয়ের সাক্ষাতের জন্য অন্য এক গ্রামে গেল। আল্লাহ তাআলা তার জন্য পথিমধ্যে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করেন। ওই ব্যক্তি যখন ফেরেশতার কাছে পৌঁছল, তখন ফেরেশতা জিজ্ঞেস করল, তুমি কোথায় যেতে চাইছ?
সে বলল, আমি অমুক গ্রামে আমার এক ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করব। ফেরেশতা বলেন, তার কাছে কি তোমার কোনো অবদান আছে, যা তুমি আরো প্রবৃদ্ধি করতে চাও? সে বলল, না। আমি তো শুধু আল্লাহর জন্যই তাকে ভালোবাসি। ফেরেশতা বলল, আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে (তাঁর দূত হয়ে) তোমাকে জানাতে এসেছি যে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসেন, যেমন তুমি তোমার ভাইকে তাঁরই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ভালোবেসেছ।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৪৩)
নিম্নে কোনো মুমিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে পালনীয় কিছু সুন্নত তুলে ধরা হলো—
সালাম দেওয়া : কারো সঙ্গে কুশল বিনিময়ের অন্যতম সুন্নত হলো, সহি-শুদ্ধভাবে সালাম করা।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন তার ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, তখন সে যেন তাকে সালাম দেয়। অতঃপর দুজনের মধ্যে যদি গাছ, দেয়াল বা পাথর আড়াল হয়ে যায় এবং তারপর আবার সাক্ষাৎ হয়, তাহলেও যেন তাকে সালাম দেয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫২০০) মুসাফাহা করা :
কারো সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে কুশল বিনিময়ের আরেকটি সুন্নত হলো, সুন্নত পদ্ধতিতে মুসাফাহা করা। এবং তাকে যথাযথ সম্মান করা ও গুরুত্ব দেওয়া। আনাস ইবনু মালিক (রা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাক্ষাতে এসে মুসাফাহা (করমর্দন) করত, তখন সেই ব্যক্তি তার হাত টেনে না নেওয়া পর্যন্ত তিনি নিজের হাত টেনে নিতেন না।
আর সে তার চেহারা ফিরিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত তিনি ওই ব্যক্তি থেকে নিজের চেহারা ফিরিয়ে নিতেন না। তিনি কখনো তাঁর পা দুটি তাঁর সামনে বসা লোকদের দিকে প্রসারিত করতেন না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪৯০) হাসিমুখে কথা বলা : আবু জার (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) আমাকে বলেছেন, ভালো কোনো কিছু দান করাকে হীন মনে কোরে না, এমনকি হোক সেটা ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ দেওয়া।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৮৪)
উত্তম কথা বলা : কুশল বিনিময়ের অন্যতম একটি সুন্নত হলো, ভালো কথা বলা। অহেতুক কথা বর্জন করা। প্রিয় নবী (সা.) ভালো কথা বলাকে সদকা বলে আখ্যা দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, মানুষের প্রত্যেক জোড়ার প্রতি সদকা আছে—
প্রতিদিন যার ওপর সূর্য উদিত হয়। দুজন লোকের মধ্যে সুবিচার করাও সদকা, কাউকে সাহায্য করে বাহনে আরোহণ করিয়ে দেওয়া বা তার ওপর তার মালপত্র তুলে দেওয়াও সদকা, ভালো কথাও সদকা, সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে পথ চলায় প্রতিটি কদমেও সদকা, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করাও সদকা।’ (বুখারি, হাদিস : ২৯৮৯)
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।