বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের সমন্বয়ে চালিত যানবাহনগুলোকে হাইব্রিড গাড়ি বলে। এই গাড়িগুলোতে প্রাথমিক শক্তি হিসেবে ব্যাটারি এবং দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে জ্বালানি তেল ব্যবহৃত হয়। এই দুই শক্তি গাড়ির প্রয়োজন অনুসারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তিত হয়। পাওয়ার কন্ট্রোল ইউনিট বা পিসিইউ নামের অত্যাধুনিক এক যন্ত্র এই পুরো কাজ করে থাকে।

এজন্য চালককে আলাদা কোনো সুইচ চাপতে হয় না। সাধারণ গাড়িতে জ্বালানি তেলের যে অপচয় হয়, হাইব্রিড গাড়িতে সে অপচয় বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। অন্যদিকে আমরা জানি প্রচলিত গাড়িগুলো ইঞ্জিনচালিত। অর্থাৎ, ইঞ্জিন থেকে প্রাপ্ত শক্তি চাকায় স্থানন্তর করা হয়। তবে আধুনিককালে অনেক ইলেক্ট্রিক কারও দেখা যায় যা ব্যাটারির স্থিতি শক্তিতে মোটর ঘুরিয়ে সেটা দিয়ে চাকা ঘোরানো হয়। এই দুই ধরনের প্রযুক্তিকে যখন একই গাড়িতে একসঙ্গে ব্যবহার করা হয় তখন তাকে বলে ‘হাইব্রিড’ গাড়ি। অর্থাৎ এ ধরনের গাড়িতে ইঞ্জিন এবং (ব্যাটারিচালিত) মোটর দুটোই থাকে।যেভাবে কাজ করে হাইব্রিড গাড়ির ইঞ্জিন

প্রাথমিকভাবে ইঞ্জিনের শক্তিতে গাড়ি চলে এবং সেই সঙ্গে ব্যাটারিও চার্জ হয়। একটি নির্দিষ্ট গতিতে পৌঁছে গেলে (সাধারণত ৪০-৬০ কিমি/ ঘণ্টা) গতি জড়তার কারণে গাড়িটি চালাতে খুব কম শক্তি দরকার হয়। হাইব্রিড গাড়িতে এই পর্যায়ে এসে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় এবং মোটর চালু হয়ে যায়। আবার স্পিড কমে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোটর থেমে যায় আর ইঞ্জিন চলতে শুরু করে। এভাবে স্পিড ও লোডের ওপর ভিত্তি করে ইঞ্জিন-মোটরের দ্বৈত শক্তিতে চলতে সক্ষম বলেই এদেরকে হাইব্রিড গাড়ি বলা হয়।

নন-হাইব্রিড গাড়ির জ্বালানি খরচ বাঁচাতে সিএনজি বা এলপিজিতে রূপান্তর করা হয়ে থাকে। হাইব্রিড গাড়িতে বিকল্প শক্তি হিসেবে ব্যাটারি ব্যবহৃত হওয়াতে এই সব গাড়িকে রূপান্তরের ঝামেলা নেই। নেই লাইনে দাঁড়িয়ে গ্যাস নেওয়ার প্রতিযোগিতা। রূপান্তরের খরচটাও বেঁচে যায়।

হাইব্রিড গাড়ি ব্যাটারিতে চলার সময় ইঞ্জিন বন্ধ থাকার কারণে ইঞ্জিন অয়েল, অয়েল ফিল্টার এবং এয়ার ফিল্টারও ব্যবহৃত হয় না। এতে এই যন্ত্রাংশগুলোর আয়ু বেড়ে যায়। নন-হাইব্রিড গাড়িতে এই যন্ত্রাংশগুলো তিন হাজার কিলোমিটার পরপর বদলাতে হলেও হাইব্রিড গাড়িতে পাঁচ থেকে ছয় হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত অনায়াসে ব্যবহার করা যায়।

কলমকথা/বি সুলতানা