চলতি সপ্তাহটা ফেসবুকের খারাপ থেকে আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে।
প্রথমতঃ মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ফেসবুকের গোপন নথি নিয়ে একের পর এক প্রতিবেদন করায়, ব্যাপক সমালোচনার মুখে রয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির হাতে নথিগুলো তুলে দিয়েছেন ফেসবুকেরই সাবেক একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফ্রান্সেস হাউগেন। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের দ্বি-মুখী নিয়ম-নীতিতে ক্ষুদ্ধ হয়ে চাকরি ছাড়েন তিনি।
দ্বিতীয়তঃ শেয়ার বাজারেও সবচেয়ে খারাপ দিন কাটাচ্ছে ফেসবুক। ৪ অক্টোবর (সোমবার) বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার লেনদেন কমেছে প্রায় ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। যা বিগত ১ বছরের মধ্যে ফেসবুকের সবচেয়ে খারাপ ট্রেডিং হিসেবে গণ্য হয়েছে।
তৃতীয়তঃ বিশ্বব্যাপী ডাউন হয়ে পড়েছে ফেসবুকের সার্ভার। বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে কোম্পানিটির মালিকানাধীন সকল পরিষেবা অচল হয়ে পড়ে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে দ্রুত সমস্যা সমাধানের কথা বললেও, রাত সাড়ে ৩টায় যখন এ প্রতিবেদন লেখা হচ্ছিল তখন পর্যন্ত ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রাম অচল অবস্থাতেই ছিল। সার্ভার ডাউন হওয়ার ঘটনা ফেসবুকের ইতিহাসে এবারই প্রথম নয়। কিন্তু এত দীর্ঘসময় যাবত সার্ভার ডাউন থাকা নিকট ইতিহাসে এটিই প্রথম। নেটওয়ার্ক মনিটরিং ফার্ম কেন্টিক-এর ইন্টারনেট অ্যানালাইসিস ডিরেক্টর ডগ ম্যাডোরি বলেন, ‘আমার মনে হয় না, কোনো বড় ইন্টারনেট কোম্পানিতে এরকম বিশাল বিভ্রাট এর আগে আমি কখনো দেখেছি।’ তার মতে, কোম্পানিগুলো কখনও কখনও তাদের নেটওয়ার্ক কনফিগারেশন আপডেট করার সময় ইন্টারনেট সংযোগ হারায়।
কিন্তু ফেসবুকের আকার এবং তাদের অন্যান্য পরিষবাগুলো কয়েক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অফলাইনে থাকার বিষয়টি ইঙ্গিত দেয় যে, এই সমস্যার দ্রুত সমাধান নেই। ডিজিটাল সিকিউরিটি ফার্ম নেটস্কাউটের প্রধান প্রকৌশলী রোল্যান্ড ডবিন্সের মতে, ফেসবুক সম্ভবত ধীরে ধীরে পরিষেবা পুনরুদ্ধার করতে কাজ করবে এবং পরিষেবাগুলো বিশ্বব্যাপী সচল হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
ঠিক কী কারণে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। ফেসবুকের পক্ষ থেকেও ত্রুটির কারণ সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। তবে কারিগরি বিশেষজ্ঞরা ডোমেইন নেম সিস্টেম বা ডিএনএস ত্রুটি হয়েছে বলে ধারণা করছেন। আবার কারো মতে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ-সবই একটি বিজিপি কনফিগারেশনের সমস্যার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেরই জীবনযাপন থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য পুরোপুরি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল সাইট ফেসবুকনির্ভর।
কারো কারো কাছে ইন্টারনেট মানেই ফেসবুক। অন্যদিকে ফেসবুকের মালিকানাধীন অপর দুই পরিষেবার মধ্যে- হোয়াটসঅ্যাপ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রাম সবচেয়ে জনপ্রিয় ফটো শেয়ারিং অ্যাপ। সবগুলো পরিষেবা একযোগে অচল হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েন কোটি কোটি ব্যবহারকারীরা। এদিকে এই অচল হয়ে পড়ায় টুইটারে রীতিমতো ট্রোল হয়েছে ফেসবুক। চলুন টুইটার ব্যবহারকারীদের তেমন কিছু পোস্ট দেখে নেওয়া যাক।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।