টুইটারকে বিশ্বের ‘ডিজিটাল টাউন স্কয়ারের’ অবস্থান থেকে সরিয়ে আনার লক্ষ্যে নতুন সোশাল মিডিয়া অ্যাপ চালুর উপায় খুঁজে দেখছে সামাজিক জায়ান্ট মেটা।

“টেক্সট আপডেট শেয়ারিংয়ের জন্য আমরা একটি বিকেন্দ্রীকৃত একক সামাজিক নেটওয়ার্ক তৈরির উপায় খুঁজছি।” –রয়টার্সকে ইমেইল বিবৃতিতে বলেন মেটার এক মুখপাত্র।

“আমাদের বিশ্বাস এতে এমন এক আলাদা জায়গার সুযোগ আছে, যেখানে কনটেন্ট নির্মাতা ও পরিচিত ব্যক্তিত্বরা নিজেদের আগ্রহের বিষয়ে সময়মতো আপডেট শেয়ার করতে পারেন।”

মেটার এই সম্ভাব্য অ্যাপের মিল থাকতে পারে মাস্টডনের সঙ্গে। টুইটারের মতো একই ধরনের সেবা দেওয়া প্ল্যাটফর্মটি চালু হয় ২০১৬ সালে। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেটা এই টুইটার সদৃশ অ্যাপের মাধ্যমে মাস্ক মালিকানাধীন সামাজিক প্ল্যাটফর্মে চলমান বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিতে পারবে, যেখানে কোম্পানির খরচ ব্যাপক হারে কমানো হয়েছে।

গত বছরের শেষে মাস্কের অধিগ্রহণের পর থেকে বিজ্ঞাপনদাতাদের প্ল্যাটফর্মে ধরে রাখতে ‘কাঠ খড়’ পোড়াতে হচ্ছে টুইটারকে। কোম্পানিগুলো খরচ থেকে সরে আসছে কারণ টুইটার বিভিন্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি আর্থিক ফি’র বিনিময়ে এমন এক যাচাইকরণ ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেটির ফলে বিভিন্ন কোম্পানির ছদ্মবেশ ধারণ করছে স্ক্যামাররা।

মেটার এই পরিকল্পনার সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এলো, যখন অল্প বয়সীদের দৃষ্টি আকর্ষণে সংগ্রাম করছে এর সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম ফেইসবুক। আর মেটাভার্সের মতো এমন এক ভার্চুয়াল জগতে এর বিশাল বিনিয়োগ, যেখানে ব্যবহারকারীরা ভার্চুয়াল উপায়ে বিভিন্ন যোগাযোগ ও কাজ করতে পারেন, সেটি থেকে আর্থিক লাভের লক্ষণও সামান্য, অন্তত স্বল্প মেয়াদে।

এদিকে, মেটার ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ ইনস্টাগ্রামও জটিল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী টিকটকের জন্য প্ল্যাটফর্মটি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বিভিন্ন কনটেন্ট নির্মাতা ও জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সার। মেটা এই নতুন অ্যাপ কবে নাগাদ চালু করতে পারে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। “মেটার ইতিহাস বলছে, উদ্ভাবক বা নির্মাতার তুলনায় তারা অধিগ্রহণকারী হিসেবে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে… আর টুইটার অনুকরণের প্রশ্নে এটা কেবল রক্ষণাত্মক এক পদক্ষেপ।”

–বলেন নিউ ইয়র্কভিত্তিক বিনিয়োগ কোম্পানি ‘গ্রেইট হিল ক্যাপিটাল’-এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা সদস্য টমাস হায়েস। “তারা সবকিছুই চেষ্টা করছে… অন্তত মিনি ব্লগিং সাইট টুইটারের মতো। তবে এমন প্রত্যাশার কথাও শোনা যাচ্ছে, মেটাভার্সে বিনিয়োগের চেয়ে তুলনামূলক দ্রুত সময়ে আর্থিক আয়ের মুখ দেখবে এটি।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০৩০ সালের আগ পর্যন্ত মেটাভার্স থেকে আর্থিক আয় হবে না। শুক্রবারের পূর্ববর্তী হিসাবে মেটার শেয়ারের দাম ছিল একশ ৮১ দশমিক সাত ডলার, যা তুলনামূলক উচ্চমূল্য। এই বছর কোম্পানিটি এখন পর্যন্ত ৫১ শতাংশ লাভ করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।