বর্তমান সময়ের মোবাইল ফোনের ল্যান্ডস্কেপ আজ থেকে তিন দশক আগের তুলনায় অনেকটাই আলাদা। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় ১৯৯৩ সালে মটোরোলা বিশ্বে মোবাইল ফোনের বাজারের প্রায় অর্ধেক দখল করে নিয়েছিল।
অথচ ২০২২ সালে এসে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারবাজারের পরিধি মাত্র ২.২ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। কখনও কি ভেবেছেন কীভাবে এমনটা ঘটলো? মটোরলার এমন পতনের কারণ খুঁজতে গেলে পাওয়া যাবে মোবাইল শিল্পের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের অনেক যুগান্তকারী বিষয়। প্রযুক্তিবিদ জেমস ঈগল এক গবেষণার মাধ্যমে দেখিয়েছেন কিভাবে ১৯৯২ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোবাইল শিল্পের উত্থান ও পতন ঘটছে। আমরা ওই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
মোবাইল ফোনের প্রথম দিনের কথা
মোবাইল ফোন শিল্পে মটোরোলা সবচেয়ে অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। ১৯৮৩ সালে প্রথমবারের মতো মার্কিন এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের বাণিজ্যিক মোবাইল DynaTAC 8000X বাজারে আনে। তখন এই ফোনটির দাম ধরা হয় ৪ হাজার আমেরিকান ডলার। ওই সময় এই ডিভাইস কিনলে ক্রেতাকে ৪০ মিনিট ফ্রি টকটাইম সুবিধা দিতো মটোরোলা। প্রতিষ্ঠানটি পরবর্তী কয়েক বছরে আরও কয়েকটি ডিভাইস লঞ্চ করে। এর মধ্যে উল্লখযোগ্য ছিল, ১৯৮৯ সালের MicroTAC 9800X এবং ১৯৯২ সালের International 3200 মডেলগুলো।
পর পর একধিক ডিভাইস বাজারে এনে মটোরোলা হয়ে উঠে বাজারের একচ্ছত্র অধিপতি। নতুন এবং বর্ধনশীল এই শিল্পে ১৯৯০ এর দশকে একাই রাজত্ব করে মটোরোলা। ওই সময় ফোনের বাজারে তাদের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ফিনিশ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান নকিয়া। ১৯৯০ এর দশকের শেষদিকে সনি এবং সিমন্সের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো শক্ত অবস্থান লাভ করায় মোটোরোলার আধিপত্য কমতে শুরু করে। ১৯৯৫ সালের সেপ্টেম্বরে কোম্পানিটির শেয়ার ৩২.১ শতাংশে কমে আসে।
১৯৯৯ সালের জানুয়ারির মধ্যে নকিয়া ২১.৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে যায়। ওই সময় মটোরোলার শেয়ার ছিল মাত্র ২০.৮ শতাংশ। নকিয়ার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার একটি কারণ ছিল ডিজিটাল ফোন স্পেসে কোম্পানির বড় অগ্রগতি।
১৯৯৯ সালে বাজারে আসে Nokia 7110 মডেলের ফোনটি। এটি ছিল প্রথম ফোন যাতে ওয়েব ব্রাউজার রয়েছে। যাই হোক, মটোরোলার পতনের জন্য শুধু নকিয়ার উত্থানই দায়ী ছিল না। এক পর্যায়ে কোম্পানিটি আর্থিক চাপে পড়ে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে। ওই বছর মটোরোলা প্রায় অর্ধেক কর্মী ছাঁটাই করে। ধুঁকতে থাকা কোম্পানিটি তবুও চালিয়ে নিচ্ছিল কোনোমতে। তবে ২০০৭ সালে অ্যাপল এই প্রতিযোগিতায় প্রবেশ করে মটোরোলাকে পুরোপুরি পথে বসায়।
মোবাইল ফোন আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরে বিক্রি হওয়া ৩ কোটি ৪০ লাখ ইউনিট মোবাইল ফোনের মধ্যে স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে ৯০ লাখের বেশি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।