বিশ্বের অধিকাংশ কিশোর-কিশোরীর টিকটক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বর্তমানে অ্যাপটি তরুণদের রাতের বেলা ‘ডুমস্ক্রোলিং’ (অর্থাৎ, অযথা স্ক্রল করা) থামানোর জন্য নতুন একটি ফিচার নিয়ে আসছে।

এই ফিচারের মাধ্যমে রাতের বেলা কিশোর-কিশোরদের অ্যাকাউন্টে ভিডিও দেখানোর পরিবর্তে পুরো স্ক্রিন জুড়ে একটি মেসেজ দেখাবে। এই মেসেজ তাদের শান্ত হতে, শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুশীলন করতে এবং ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতে উৎসাহিত করবে।

টিকটকের নতুন ‘উইন্ড ডাউন’ ফিচারটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা তরুণদের বিরতি নিতে উৎসাহিত করবে। এটি পুরো স্ক্রিন জুড়ে মেসেজ দেখানোর মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করতে বলবে এবং ধীরলয়ের সংগীত চালু করবে। কিশোর–কিশোরীরা চাইলে নোটিফিকেশনটি উপেক্ষা করে স্ক্রোলিং চালিয়ে যেতে পারবে।

তবে পরে তারা একটি দ্বিতীয় নোটিফিকেশন পাবে, যা আবার তাদের লগআউট করতে উৎসাহিত করবে। টিকটক জানিয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পপ-আপ মেসেজে মেডিটেশন বা ধ্যানের অনুশীলনও যুক্ত করবে।

এছাড়া অভিভাবকদের তাদের সন্তানের অ্যাকাউন্টের ওপরে আরও নিয়ন্ত্রণ দিতে সহায়তা করবে টিকটকের নতুন আপডেটটি। প্যারেন্টাল কন্ট্রোলের মাধ্যমে অভিভাবকেরা তাদের সন্তানের প্রদর্শিত কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

🎶 কেন এই ফিচার চালু করলো টিকটক?

তারা কিশোর-কিশোরীর স্টেম ফিড পুনরায় চালু করতে পারবেন এবং প্রতিদিনের ভিডিও দেখার সময়সীমাও নির্ধারণ করতে পারবেন অভিভাবকেরা। এই ফিড চালু থাকলে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও গণিতের মতো বিষয়ে শিক্ষামূলক ভিডিও টিকটকে বেশি দেখা যাবে। টিকটকের ডিফল্ট নিয়ম অনুসারে, ১৮ বছরের নিচে সব ব্যবহারকারীর জন্য প্রতিদিন স্ক্রিন টাইম এক ঘণ্টার সীমিত করা হবে।

এছাড়া, এই আপডেটে আরেক নতুন ফিচার রয়েছে, যা অভিভাবকদের তাদের সন্তানের অ্যাকাউন্ট পাবলিক থেকে প্রাইভেট করতে সাহায্য করবে। এদিকে ‘টাইম অ্যাওয়ে’ ফিচারটি অভিভাবকদের নির্দিষ্ট সময়ে (যেমন: স্কুলের সময় বা খাবারের সময়) টিকটকের অ্যাক্সেস বন্ধ করার সুযোগ দেবে।

তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরে সোশ্যাল মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে এ ধরনের প্যারেন্টাল কন্ট্রোলস। কারণ বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, টিকটক এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আবার অন্য কিছু গবেষণায় দেখা যায়, ছোট দৈর্ঘ্যের ভিডিওগুলোর ফলে মনোযোগের অভাবও দেখা দেয়।

টিকটকের কনটেন্ট অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের সদস্য ড. ভিকি হ্যারিসন বলেন, ‘টিকটক কিশোর-কিশোরী এবং তাদের পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এমন কিছু টুল নিয়ে এসেছে, যা তাদের সুস্থভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে সহায়তা করবে। ঘুমের গুরুত্ব, সুষম ব্যবহারের পাশাপাশি অভিভাবক-সন্তানের সম্পর্কের আরও উন্নয়ন—এসব সব ইতিবাচক পদক্ষেপ এগুলো আরও বৃদ্ধি পাবে।

এছাড়া, টিকটক জানিয়ে দিয়েছে যে, ১৩ বছরের নিচে কোনো ব্যবহারকারীকে তারা অ্যাকাউন্ট খুলতে অনুমতি দেয় না এই প্ল্যাটফর্ম এবং ১৬ বছরের নিচে সব ব্যবহারকারীর জন্য রাতের নোটিফিকেশন বন্ধ করে দেয়।

তথ্যসূত্র: ডিজিটাল ট্রেন্ডস