রাকিবুল হাসান, মনপুরা প্রতিনিধি: ভোলার মনপুরা হঠাৎ করেই বেড়েছে লোডশেডিং।গতমাসে জ্বালানি তেল দাম বৃদ্ধি পাওয়া সাথে সাথে রাতে নিয়মিত বিদ্যুৎ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন পুরো উপজেলা মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

করোনাভাইরাস ও সিলেট বন্যার কারণে চলতি বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন সময় অনুযায়ী ৬ই নভেম্বর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হবার কথা রয়েছে।আগামীকাল ১৫ তারিখ থেকে অনুষ্ঠিত হবে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।

সেই হিসেবে শিক্ষার্থীদের হাতে সময় কম, কিন্তু চাপ বেশী।দিন রাত পড়াশোনা করছেন এসএসসি পরীক্ষার্থী সহ অনন্য ছাত্রছাত্রীরা। পরীক্ষার সময় বেঁধে দেয়ার পর শিক্ষার্থীরা মনোযোগ বাড়িয়েছেন পড়ার টেবিলে। কিন্তু এখন বিপত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে গরম আর লোডশেডিং। ফলে পড়ার টেবিলে ঠিকমতো বসতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। এতে করে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে অভিভাবক মহলেও।

২০১৯ সালে ওয়েস্টার্ন রিনিউএবল এনার্জি (প্রাঃ) লিমিটেড দক্ষিণ সাকুচিয়া রহমানপুর গ্রামের স্থাপন করেন ২৭৯.৫ কি.ওয়াট পিক সোলার মিনি গ্রিড বিদ্যুৎ কেন্দ্র। সূর্যের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তা গ্রাহকদের কাছে ৩০ টাকা ইউনিট ও ৭০ টাকা সার্ভিস চার্জে বিক্রি করছেন প্রতিষ্ঠানটি। জ্বালানি তেল এর দাম বৃদ্ধি করার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে নিয়ম মাপিক লোডশেডিং। দিনেব বেলায় বিদ্যুৎ পেলেও রাতের বেলায় ৩ ঘন্টা ও বিদ্যুৎ পায়না মনপুরা দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের গ্রাহকেরা।
এতে পরীক্ষা যত ঘনিয়ে আসছে ততই দূর চিন্তা পরছেন ছাত্রছাত্রীদের।
দক্ষিণ সাকুচিয়া এসএসসি পরীক্ষার্থীর সাদিয়া বেগম আঁখি এর বাবা আবদুল মতিন বলেন,রাতে বাসায় বিদ্যুৎ চলে গেলে ছেলে-মেয়েরা পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। তাছাড়া রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে ছেলে-মেয়েরা আর পড়তে বসতে চায় না। সে কারণে বিদ্যুৎ না থাকলে সময় অপচয় হচ্ছে। নিয়মিত লোডশেডিং শিক্ষার্থীদের জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে। এমনিতে করোনার জন্য প্রায় দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল বলে শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে গেছে। নিয়মিত লোডশেডিং হলে তারা আরও পিছিয়ে পড়বে।

সাকুচিয়া আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব কলেজ এর এইচএসসি পরীক্ষার্থী জাবেদ জানায়, “আলো না থাকলে লেখাপড়া করা যায় না। এ জন্যই আমরা তাকিয়ে থাকি বিদ্যুতের দিকে। কিন্তু বিদ্যুত থাকে না বললেই চলে। যে সময়টুকু আমরা পড়ালেখা করব যে সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। আর এই লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের লেখাপড়ার খুব ক্ষতি হচ্ছে।’’

কোড়ালিয়া বাজার ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানায়, আমাদের গ্রামের বাজার গুলো তে হাট বসেন সন্ধ্যার পর। কিন্তু দীর্ঘদিন রাতে কোন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়না।তাই আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য অনেক মন্দা যাচ্ছে।

সূর্য থেকে প্রকৃতিভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।এতে জ্বালানি তেল এর সাথে সম্পৃত করে নিয়মমাপিক লোডশেডিং বুঁজে উঠতে পারছেন না সচেতন মহল।এতে এলাকায় তীব্র লোডসেডিং উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে সাধারন মানুষের মধ্যে।
তবে অনেক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন,ওয়েস্টার্ন রিনিউএবল এনার্জি(ডাব্লিউ আর ইএল-১) ২৭৯.৫ কি.ওয়াট পিক সোলার পিক মিনি গ্রিড বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ধারন ক্ষমতা বাহিরে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের জন্য মিটার সংযোগ দেওয়ার এখন রাতে বিদ্যুৎ এর ঘাটতি দেখা দিয়েছেন।

সাকুচিয়া আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব কলেজে এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনির হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মূল সময়টা হচ্ছে রাত।সারাদিন স্কুল, প্রাইভেট বা বিকেলের খেলাধুলার পর রাতে শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিলে বসে। এই সময়ে আলোর কোন ব্যবস্থা না থাকলে অবশ্যই পড়ালেখার ক্ষতি হয়। যে কোনো পরীক্ষার্থীর প্রস্তুতি নিতে বিঘ্ন ঘটবে। যেহেতু এসএসসি পরীক্ষা সন্নিকটে সেহেতু সন্ধ্যার পর লোডশেডিং কমিয়ে আনাটা পরীক্ষার্থীর জন্য অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।

ওয়েস্টার্ন রিনিউএবল এনার্জি (প্রাঃ) লিমিটেড এর প্রজেক্ট ম্যানেজার মাহফুজ জানান,সূর্যে আলো না থাকলে ব্যাটারী দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া যায় না।জেনারেটর এর প্রয়োজন হয়।এখন এই প্লাটন এর জেনারেটর কিছু টা সমস্যা দেখা দিয়েছে।

আশা করি আগামী ৮-১০ দিনের মাঝে এই সমস্যা সমাধান করতে পারবো।মনপুরা একটি বিছিন্ন এলাকায় হওয়া কোন কিছু সমস্যা হলে সমাধান করতে ঢাকা থেকে টেকনিশিয়ান আসতে সময় লেগে যায়।

তাই এই সমস্যা বহন করতে হয়।বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও সরবরাহ ব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি নেই। ওয়েস্টার্ন রিনিউএবল এনার্জি (প্রাঃ) লিমিটেড আওতায় গ্রাহক রয়েছে প্রায় ১২ শত।