পুঁজিটা খুব বড় করতে পারেনি বাংলাদেশ। রোমানা আহমেদ ও মুর্শিদা খাতুনের ব্যাটে পায় মাঝারী সংগ্রহ। তবে বরাবরের মতো বোলাররা ছিলেন এদিনও দুর্দান্ত।
অসাধারণ লড়াই করলেও বাঘিনীদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি থাইল্যান্ড। ফলে দারুণ এক জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিশ্চিত করল বাংলাদেশের মেয়েরা।
শুক্রবার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের সেমি-ফাইনাল ম্যাচে থাইল্যান্ডকে ১১ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১১৩ রান করে তারা। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভার ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১০২ রানের বেশি করতে পারেনি থাইল্যান্ডের মেয়েরা।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে ২২ রানের প্রয়োজন ছিল থাইল্যান্ডের। সালমা খাতুনের করা সে ওভারের প্রথম চার বল থেকে পায় ১০ রান। ফলে জিততে হলে শেষ দুই বলে দুটি ছক্কার প্রয়োজন ছিল তাদের। তবে পেরে ওঠেননি দারুণ ব্যাটিং করে নাত্থাকান চানথুম। ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টায় বোল্ড হয়ে যান তিনি। শেষ বলে রোসেনান কানোহকেও বোল্ড করে দেন সালমা। ফলে জয় মিলে যায় বাঘিনীদের।
মাঝারী পুঁজি নিয়ে এদিন বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিল বোলারদের দিকে। হতাশ করেননি তারা। শুরু থেকেই দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে থাকেন বাঘিনীরা। দলীয় ৭ রানেই অন্নিচা কামচম্ফুকে ফিরিয়ে ঠাই শিবিরে প্রথম ধাক্কা দেন সালমা খাতুন। তাকে ফারজানা হকের ক্যাচে পরিণত করেন এ স্পিনার।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে দলীয় ১৩ রানে আরেক ওপেনার নান্নাপাত কঞ্চারোয়েঙ্কাইকে বোল্ড করেন দেন সানজিদা আক্তার মেঘলা। এর দুই বল পর নাত্তায়া বুচাথামকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন এ বাঁহাতি স্পিনার। তাতে বড় চাপে পড়ে যায় থাইল্যান্ড। এরপর অধিনায়ক নারুয়েমল চাইয়াইকে নিয়ে দলের হাল ধরেন নাত্থাকান চানথাম। চতুর্থ উইকেটে ৩২ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। তবে বাঘিনীদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রানের গতি সে অর্থে সচল রাখতে পারেননি তারা। এ জুটি ভাঙেন নাহিদা আক্তার। ফেরান থাই অধিনায়ককে।
তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে দারুণ ব্যাটিং করতে থাকেন চানথুম। ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সতীর্থদের কাছ থেকে ভালো সমর্থন পেলে হয়তো ভিন্ন কিছু হতে পারতো ম্যাচের ফলাফল। ৫১ বলে খেলেন ৬৪ রানের দারুণ এক ইনিংস। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। বাংলাদেশের পক্ষে ১৮ রানের খরচায় টি উইকেট পান সালমা। ৭ রানের বিনিময়ে মেঘলা নেন ২ উইকেট।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দেখে শুনে ব্যাট করতে থাকে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৭ রান তোলে দলটি। তবে পরের ওভারেই উইকেট হারায় তারা। ব্যক্তিগত ১১ রানে ফান্নিতা মায়ার শিকারে পরিণত হন ফারজানা হক। এরপর আরেক ওপেনার মুর্শিদা খাতুনের সঙ্গে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা। স্কোরবোর্ডে ১৮ রান যোগ করতেই ভাঙে এ জুটি। রানআউট হয়ে যান মুর্শিদা। ৫ বলে ২টি চারের সাহায্যে ২৬ রানের ইনিংস খেলেন এ ওপেনার। মুর্শিদার বিদায়ের পর মাঠে নামেন রুমানা আহমেদ।
দারুণ ছন্দে থাকা অধিনায়ক নিগার অবশ্য এদিন খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। দলীয় ৬৪ রানে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফেরেন। ২৪ বলে ২টি চারে করেন ১৭ রান। আগ্রাসী ব্যাটার হিসেবে পরিচিত সোবহানা মুস্তারিও তেমন কিছুই করতে পারেননি। ৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
তবে বাংলাদেশের স্কোর শতরান পার করতে দারুণ ভূমিকা রাখেন রোমানা। হার না মানা ২৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ২৪ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। তাকে দারুণ সাহায্য করেন রিতু মনি। ১০ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ১৭ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলেন তিনি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।