নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ রোমাঞ্চ ছড়াল দ্বিতীয় ম্যাচেও। নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে প্রথমবার হারানোর স্বাদ পেল তারা। ব্যাটিংয়ে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন ও ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত প্রদর্শনী করে ৭ রানে জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

৯৮ রানে ৪ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উদ্ধার করেন শেমাইন ক্যাম্পবেল ও চেডান ন্যাশন। পঞ্চম উইকেটে তাদের ১২৩ রানের জুটিতে মোট সংগ্রহ দাঁড়ায় ২২৫ রান, যা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

হেলি ম্যাথিউস ও দিয়েন্দ্রা ডট্টিনের ৮১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ শুরু করে ক্যারিবিয়ানরা। কিন্তু ১৭ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দলটি। সেখান থেকে ক্যাম্পবেল-ন্যাশন জুটির প্রতিরোধ।

ইংল্যান্ডেরও বেশ ভুল ছিল। ফিল্ডিংয়ে তারা ছিল বিশৃঙ্খল। সোফি এক্লেসটোন একই ওভারে দুটিসহ ৩ উইকেট নেন ২০ রান দিয়ে। কিন্তু ফিল্ডারদের ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। চারটি ক্যাচ ফেলেছে তারা। এছাড়া ওয়াইড ছিল ২৩টি।

ডানেডিনের মেঘাচ্ছন্ন কন্ডিশনে ইংল্যান্ডের ওপেনিং বোলাররা সুইং পাচ্ছিল ভালোই। প্রথম বলে ডট্টিনের উইকেট পেতে পারত তারা। কিন্তু লরেন উইনফিল্ড-হিল মিড অনে ক্যাচ ছেড়ে দেন। দ্বিতীয় ওভারের শেষ দিকে আনিয়া শ্রুবসোলকে কাউ কর্নার দিয়ে ইনিংসের প্রথম ছক্কা মারেন জীবন পাওয়া ডট্টিন।

ম্যাথিউসও আগেভাগে আউট হতে পারতেন। কিন্তু ৫ রানে তাকে জীবন দেন পয়েন্টে দাঁড়ানো টামি বিউমন্ট। জীবন পাওয়া দুই ওপেনারের দারুণ ব্যাটিংয়ে ১০ ওভারের মধ্যে ৫০ রান তোলে ক্যারিবিয়ানরা।

শেষ পর্যন্ত ম্যাথিউসকে ৪৫ রানে থামতে হয়। এক্লেসটোনের বলে শ্রুবসোলের ক্যাচ হন তিনি ২১তম ওভারে। একই ওভারে ডট্টিন ৩১ রান করে রান আউট। ওই ওভারেই অধিনায়ক স্টেফানি টেলরকে (০) ফেরান এক্লেসটোন। ২২ বছর বয়সী স্পিনার কিসিয়া নাইটকে (৬) আউট করে উইন্ডিজকে বিপদে ফেলেন।

সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন ক্যাম্পবেল ও ন্যাশন। ৬৬ রানের সেরা ইনিংস খেলে এক ওভার আগে ক্যাম্পবেল আউট হন। ৪৯ রানে অপরাজিত ছিলেন ন্যাশন।

৬ উইকেটে উইন্ডিজকে ২২৫ রানে থামাতে এক্লেসটোন ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন। ২২৬ রানের লক্ষ্য বড় কিছু নয়। তবে হাল ছাড়েনি উইন্ডিজ। নবম ওভারের প্রথম বলে উইনফিল্ড হিলকে (১২) অবিশ্বাস্য এক ক্যাচে বিদায় করে তারা। ‘সুপারহিরো গোলকিপারের’ মতো বাঁদিকে ডাইভ দিয়ে এক হাতের অসাধারণ ক্যাচ ধরেন ডট্টিন।

এই অসাধারণ ফিল্ডিং যেন আরো আত্মবিশ্বাসী করে তোলে ক্যারিবিয়ানদের। নিয়মিত বিরতিতে ইংল্যান্ডের উইকেট তুলে নিতে থাকে তারা। ৯৪ রানে ৫ উইকেট হারায় গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা।

ড্যানি ওইয়াট ও সোফিয়া ডাঙ্কলি হাল ধরেন। এই জুটি ভাঙে ৬০ রানে। ৬ বলের মধ্যে ২ রানের ব্যবধানে ডাঙ্কলি (৩৮), ওইয়াট (৩৩) ও ক্যাথেরিন ব্রান্ট (১) ফিরে গেলে আবারো ইংল্যান্ডের ওপর চাপ বাড়ে।

তবে নবম উইকেটে ৬১ রানের রেকর্ড জুটিতে আবারো ঘুরে দাঁড়ায় ইংল্যান্ড। কেট ক্রস ও এক্লেসটোন দলকে জয়ের দোরগোড়ায় নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু আনিসা মোহাম্মেদ ৪৮তম ওভারের প্রথম বলে ক্রসকে (২৭) রান আউট করে এবং শ্রুবসোলকে (০) বোল্ড করে জয় নিশ্চিত করেন।

৪৭.৪ ওভারে ২১৮ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড।

শামিলিয়া কনেল ক্যারিবিয়ানদের পক্ষে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন। দুটি করে পান ম্যাথিউস ও মোহাম্মেদ। ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা স্কোরার ক্যাম্পবেল।

 

 

কলমকথা/ বিথী