মা নুসরাত ইকবালের স্বপ্ন ছিল খান পরিবারের দুই ছেলে নাফিস ও তামিম ইকবাল একসঙ্গে জাতীয় দলে খেলবেন, ইনিংস উদ্বোধন করবেন। মায়ের সেই স্বপ্নের বীজ এক সময় রোপণ হয় পিঠাপিঠি দুই ভাইয়ের মনেও। একটা সময় চট্টগ্রামের ক্রিকেটপ্রেমীরাও একই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। কিন্তু সবার সপ্ন অধরাই থেকে গেছে, যদিও পূরণ হয়েছে অন্যভাবে।

২২ গজে দুজনের জুটি গড়া না হলেও জাতীয় দলে ভিন্ন দায়িত্বে দুজনের অন্যরকম জুটি গড়া হয়ে গেল। তামিম জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক। বড় ভাই নাফিস দলের লজিস্টিক ম্যানেজার। এর আগে দুই সিরিজে নাফিস কাজ করলেও ছিলেন না তামিম। এবার দুই ভাইকে দেখা গেল একই ছাদের নিচে, একই জার্সিতে।

মঙ্গলবার নাফিসের সঙ্গে চট্টগ্রামের সবুজ গালিচায় আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আসেন তামিম। টেবিলে রাখা মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে তামিম গণমাধ্যম সামলাচ্ছেন। নাফিস পাশে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত। জাতীয় দলের জার্সিতে একই সঙ্গে দুই ছেলেকে একই ফ্রেমে দেখে নিশ্চয়ই গর্ব অনুভব করবেন মা নুসরাত ইকবাল। হয়তো মিশে থাকবে একটু আফসোস!

তামিম চুটিয়ে ২২ গজে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছেন। দেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা দায়িত্ব ছাড়ার পর তার কাঁধেই এসেছে নেতৃত্ব। এখন পর্যন্ত ১৫ ওয়ানডেতে তার অধীনে দল জিতেছে ৮টিতে।

নাফিসের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার খুব লম্বা হয়নি। ১১ টেস্ট ও ১৬ ওয়ানডে খেলেছেন। তবে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক প্রথম টেস্ট জয় ও সিরিজ জয়ে বড় অবদান রেখেছেন। ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে তার ৩৫৫ বলে ১২১ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা। ২০১৮ সালে পেশাদার ক্রিকেটকে বিদায় বলার পর বিভিন্ন দলের ম্যানেজার, লজিস্টিক ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

আফগানিস্তান সিরিজকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে তিন দিন আগেই অনুশীলন শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম দিনের অনুশীলনে তামিমকে বল থ্রো ডাউন করতে দেখা যায় নাফিসকে। দুই ভাইয়ের খুনসুঁটিতে অনুশীলন পর্ব হয়ে উঠেছিল প্রাণবন্ত। শুধু তামিমকেই নয়, আজ লিটন, মাহমুদউল্লাহ, আফিফকেও বল থ্রো ডাউন করেন নাফিস।

বড় ভাইকে পেয়ে তামিম বেশ উৎফুল্ল, উচ্ছস্বিত। তবে পেশারিত্বের জায়গাটাও মনে করিয়ে দিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক, ‘এটা এমন একটা জায়গা আমাদেরকে খুব বেশি পেশাদারিত্ব দেখিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক আছে। তিনি আমার বড় ভাই। আপনি যখন জাতীয় দলের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন, আমাকে তাকে ম্যানেজার হিসেবে সম্মান দিতে হবে। তার আমাকে খেলোয়াড় হিসেবে সম্মান দিতে হবে। এটা পেশাদার জায়গা যেখানে সম্পর্ক দুই নম্বরে, পেশাদারিত্ব একে।’