আন্তর্জাতিক বিরতি শেষে ফেরার ম্যাচে আবারও হোঁচট খেতে বসেছিল পিএসজি। একসময় হয়তো তাদের মনে হারের শঙ্কাও জেগেছিল। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয়ার্ধের দুই গোলে জয় পায় মাওরিসিও পচেত্তিনোর দলটি। পাক দি ফ্রাঁসে শুক্রবার রাতে লিগ ওয়ানের ম্যাচটি ২-১ ব্যবধানে জিতেছে পিএসজি। ফুলগিনির গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দানিলো পেরেইরার লক্ষভেদে সমতায় ফেরে প্যারিসের দলটি। শেষ দিকে ব্যবধান গড়ে দেন কিলিয়ান এমবাপে। লিগে প্রথম আট রাউন্ডে জয়ের পর আন্তর্জাতিক বিরতিতে যাওয়ার আগে রেনের মাঠে ২-০ গোলে হেরেছিল তারকায় ঠাসা দলটি। ঘরের মাঠে খেলতে নেমে কষ্টে হলেও জয়ে ফিরল তারা। বল দখলে পিএসজি একচেটিয়া আধিপত্য করলেও ম্যাচের শেষ ২০ মিনিটের আগে আক্রমণে দুই দল ছিল প্রায় সমানে-সমান। তবে সমতায় ফেরার পর চাপ বাড়ায় পিএসজি। যদিও তাদের ১৩ শটের মাত্র দুটি ছিল লক্ষ্যে, দুটিই গোল। আর অঁজির সাত শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে। লাতিন আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ম্যাচ শেষের ১৮ ঘণ্টার মধ্যে মাঠে নামে পিএসজি। স্বাভাবিকভাবেই তাই দলে ছিলেন না মেসি-নেইমার সহ এই দুই দেশের আরও কয়েকজন খেলোয়াড়। তাদের অনুপস্থিতিতে আক্রমণভাগে নেতৃত্ব দেন এমবাপে। জয়সূচক গোল করার পাশাপাশি ও সতীর্থের গোলে অবদান রেখে তিনিই ম্যাচের নায়ক। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো পিএসজি।

মাঝমাঠের কাছ থেকে আন্দের এররেরা উঁচু করে বল বাড়ান ডি-বক্সে। ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে বলের কাছে পৌঁছে যান এমবাপে; কিন্তু ঠিকমতো ভলি করতে পারেননি তিনি। সোজাসুজি বল ধরতে কোনোরকম বেগ পেতে হয়নি গোলরক্ষককে। সপ্তদশ মিনিটে প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জে মাউরো ইকার্দি ডি-বক্সে পড়ে গেলে পেনাল্টির আবেদন করে পিএসজি। তবে রেফারির সাড়া মেলেনি। ২৬তম মিনিটে দারুণ নৈপুণ্যে বাঁ দিক দিয়ে স্বাগতিকদের বক্সে ঢুকে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে শট নেন মিডফিল্ডার সোফিয়ান বুফাল। বল লক্ষ্যে না থাকায় তা যদিও ভাবাতে পারেনি গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মাকে। দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে ৩৬তম মিনিটে এগিয়ে যায় অঁজি। মাঝমাঠে মার্কো ভেরাত্তির পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে ডান দিক দিয়ে আক্রমণ শানায় তারা। বুফালের ছয় গজ বক্সের মুখে বাড়ানো বল বাঁ পায়ের শটে জালে পাঠান ফুলগিনি। অন্যদিকে ঝুঁকে থাকা দোন্নারুম্মা ঠেকানোর কোনো সুযোগই পাননি।

বিরতির আগে এররেরা হেডে জালে বল পাঠালেও পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যেতে হয় পিএসজিকে। অফসাইডে ছিলেন স্পেনের এই মিডফিল্ডার। বিরতির পরও আশানুরূপ শুরু করে পিএসজি। ৫৪তম মিনিটে ডি-বক্সে সতীর্থের পাস পেয়ে রাফিনিয়ার নেওয়া শট অল্পের জন্য লক্ষভ্রষ্ট হয়। কিছুক্ষণ পর বাঁ দিক দিয়ে গতি ও পায়ের কারিকুরিতে প্রতিপক্ষের কয়েকজনকে এড়িয়ে বক্সে ঢুকে কাটব্যাক করেন এমবাপে। কিন্তু জায়গামতো ছিলেন না তার কোনো সতীর্থ। ৬৮তম মিনিটে ইকার্দির উদ্দেশ্যে ক্রস বাড়ান এমবাপে; কিন্তু সবাইকে এড়িয়ে বল যাচ্ছিল গোলের দিকে।

ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান গোলরক্ষক। ওই কর্নারেই এমবাপের ক্রস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে হেডে সমতা টানেন পর্তুগিজ মিডফিল্ডার পেরেইরা। ৮৭তম সফল স্পট কিকে ব্যবধান গড়ে দেন এমবাপে। লিগ ওয়ানে চার ম্যাচ পর জালের দেখা পেলেন ফরাসি তারকা। ইকার্দির হেড ডি-বক্সে অঁজির মিডফিল্ডার পিয়ারিক কেপেলা হাত দিয়ে ঠেকালে পেনাল্টিটি পায় পিএসজি। দুই মিনিট পর আরেকটি সুযোগ তৈরি করেন এমবাপে। তার ক্রসে জর্জিনিয়ো ভিনালডামের হেড গোলরক্ষক ঠেকানোর পর বল পোস্টে লাগলে ব্যবধান আর বাড়েনি।

১০ ম্যাচে ৯ জয়ে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে পিএসজি। এক ম্যাচ কম খেলা লঁস ১৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে

আগামী মঙ্গলবার লাইপজিগের মুখোমুখি হবে প্রথম দুই রাউন্ডে একটিতে জয়ী পিএসজি।