চাপ বাড়লেও ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। অন্যান্য বছর ঈদের আগে এই মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হলেও এ বছর তা লক্ষ্য করা যায়নি। অপরদিকে বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের ওপর দিয়ে রেকর্ড সংখ্যক যানবাহন পারাপার হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায় হয়েছে আড়াই কোটি টাকা।

এদিকে দূরপাল্লার বাস চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ঈদ উপলক্ষে ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেল ও মুরগির খাঁচার উপর বসে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। করোনার ভয়কে ভুলে যানবাহনে গাদাগাদি করে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজা সূত্র জানায়, সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ হাজার যানবাহন পারাপার হয়েছে। টোল আদায় করা হয়েছে দুই কোটি ৫৬ লাখ টাকা; যা স্বাভাবিক সময়ে ১২-১৩ হাজার যানবাহন চলাচল করে এ সেতু হয়ে। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার সড়কে সরেজমিন দেখা যায়, রাস্তায় দূরপাল্লার বাস নেই। তবে চাপ রয়েছে ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিকআপ, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের।

এসব যানবাহনে গাদাগাদি করে মানুষ যাচ্ছেন। আবার সিএনজি বা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ভেঙ্গে ভেঙ্গে চলাচল করছে মানুষ। বিকাল ৪টা পর্যন্ত মহাসড়কে যানবাহনের চাপ থাকলে যানজট নেই। পিকআপ চালক মাছুদ রানা বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে কোন যানজট নেই। অন্যান্য ঈদে চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইল আসতে ৫-৬ ঘণ্টা আবার কখনও আরও বেশি সময় লাগতো। আজকে এক ঘণ্টায় চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইল এসেছি। যাত্রী মাজেদুর রহমান বলেন, বাস না থাকায় গাড়ি পেতে সময় লাগলেও টাঙ্গাইল আসতে তেমন সময় লাগেনি। ঈদকে সামনে রেখেও স্বাভাবিক সময়ের মতো টাঙ্গাইল পৌঁছাতে পারছি। অপর যাত্রী সুরাজ্জামান বলেন, বাইপাইল থেকে হাইসে আসলাম টাঙ্গাইলে। ভাড়া বেশি নিলেও কম সময়েই টাঙ্গাইলে এসেছি। মহাসড়কে গাড়ির চাপ আছে, তবে কোনো যানজট নেই। পিকআপের মুরগির খাঁচার ওপর বসে যাওয়া সুলতান প্রামাণিক বলেন, ভোর ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। ট্রাক, পিকআপ ও মাইক্রো পেলেও ফাঁকা ছিল না। তাই মুরগির খাঁচার ওপর বসে ৮০০ টাকা ভাড়া দিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।

ঝুঁকি থাকলেও বাড়ি গিয়েই ঈদ করব। তাই যাচ্ছি। ঘরমুখো সিরাজগঞ্জের আকবর মিয়া বলেন, টাঙ্গাইল শহরে শ্রমিকের কাজ করি। ঈদে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে না থাকলে ভালো লাগবে না। তাই পরিবারের মায়ায় পড়ে বাড়ি যাচ্ছি। সড়কে দূরপাল্লার বাস নেই। ঢাকা থেকে যেসব ট্রাক ও পিকআপ আসছে তাও ভরপুর। তাই ১০০ টাকার ভাড়া মোটরসাইকেলে ৫০০ টাকা দিয়ে কড্ডার মোড় যেতে হচ্ছে। আনোয়ার তরফদার বলেন, টাঙ্গাইল থেকে ৭০০ টাকা ভাড়া দিয়ে ট্রাকযোগে পাবনা যাচ্ছি। দুই দিন পরে ঈদ তো তাই এত টাকা, করোনা ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি মনে হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও যানবাহন আটকে নেই। সড়কে কোনো যানবাহন বিকল হলে তাৎক্ষণিক রেকার দিয়ে অন্যত্র সরানো হচ্ছে।