আসামে বন্যায় ২৪ ঘণ্টায় ২ শিশু ও ২ পুলিশ সদস্যসহ আরও ১০ জন মারা গেছেন। আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজম্যান্ট অথরিটি (এএসডিএমএ) অনুসারে আসাম রাজ্যের নগাঁওতে ২ জন, দাররাংয়ে ৩ জন, দিব্রুগঢ়, হাইলাকান্দি, হোজাইত, কামরুপ ও কাছাড় জেলায় ১ জন করে মারা গেছেন।
নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ নিয়ে উত্তর-পূর্বে বৃষ্টিজনিত বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৯ জনে। এর মধ্যে ৮১ জন আসামে, মেঘালয়ে ৩২ জন এবং অরুণাচলে ৬ জন। এ ছাড়া আসামে ৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে আসামে বন্যার পানিতে ভেসে গিয়েছিলেন একটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ দুই পুলিশ সদস্য। পরে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। নিহত ২ জন সাব-ইন্সপেক্টর সমুতজল কাকাতি ও কনস্টেবল রাজীব বর্দোলাই একটি গ্রামে গিয়েছিলেন বন্যাদুর্গতদের উদ্ধার করতে।
পুলিশ মহাপরিচালক ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত বন্যায় উদ্ধারকাজে পুলিশ সদস্যের প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেছেন। বন্যায় আক্রান্তদের উদ্ধারে ভারতীয় সেনা এদিকে আসামের বিখ্যাত কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানের প্রায় ১৮ শতাংশ বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। বিভিন্ন কারণে এখন পর্যন্ত ৭টি হরিণ ও একটি চিতাবাঘ মারা গেছে।
বর্তমানে রাজ্যটির ৫ হাজার ১৩৭টি গ্রাম পানির নিচে এবং প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি জানিয়েছে, বন্যা মোকাবেলায় ২৭টি জেলায় ১ হাজার ১৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৭২২ শিশুসহ ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪২৪ জন আশ্রয় নিয়েছে। বন্যাকবলিত অঞ্চল থেকে ৮ হাজার ৭৬০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আসামের পানিসম্পদমন্ত্রী পীযুষ হাজারিকা বলেছেন, পরিস্থিতি খুব কঠিন। আমরা মানুষকে সাহায্যের জন্য জোর চেষ্টা করছি। বন্যাকবলিত এলাকায় মানুষের কাছে পৌঁছাতে অস্থায়ী সেতু বানানো হয়েছে। বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে, জরুরি প্রয়োজন না হলে বা কোনো চিকিৎসাসংক্রান্ত বিষয় ছাড়া বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে আসামের রাজধানী গুয়াহাটির বেশির ভাগ অংশ স্থবির হয়ে পড়েছে। এ শহরেও বেশ কয়েকটি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।
আসামে এক দিনে ৮১১.৬ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ডের দুই দিন পরই শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হয়েছে ৯৭২ মিলিমিটার, যা ১৯৯৫ সালের জুন মাসের পর থেকে সর্বোচ্চ এবং ১২২ বছরের মধ্যে আসামের তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।