ভারতের পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালে তৃণমূল নেতা ও শাসক দলের ব্লক সভাপতি সুকুমার ভট্টাচার্যের বাড়িতে শনিবার (১৯ মার্চ) শেষ রাতে প্রবেশ করেছিল ছয় ডাকাত। ঘরে ঢুকেই হিন্দিতে তারা জানায়, ‘খিদে পেয়েছে, খাবার চাই।’ ঘুম ভেঙে এমন কাণ্ডে হতভম্ব বাড়ির সদস্যরা।

যদিও তাদের ভরসায় না থেকে নিজেরা খুলে ফেলে রেফ্রিজারেটর। রসগোল্লা সাবাড় করার পাশাপাশি শেষ করে দেয় ঠান্ডা পানীয়র বোতলও। এরপর আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে পালিয়ে যায় ডাকাতরা।

ইসিএলের কর্মী সুকুমার অন্ডালে সংস্থার ছোড়া রিজিয়নাল হাসপাতালের কর্মী আবাসনে থাকেন। তিনি তৃণমূলের জামুড়িয়া-২ ব্লক সভাপতি। সুকুমার জানান, শনিবার তাদের আদি বাড়ি জামুড়িয়ার কেন্দা গ্রামে গিয়েছিলেন তিনি। বাড়িতে ছিলেন স্ত্রী শ্রাবণী ও ছেলে অনীক।

একাদশ শ্রেণিপড়ুয়া ছেলে অনীকের অভিযোগ, রাত পৌনে ৩টার দিকে মাফলারে মুখ ঢাকা ছয়জন বাড়িতে ঢোকে। চারজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। তার কথায়, ‘ঘরে ঢুকেই ওরা বাবা কোথায় জানতে চায়। তারপরেই একজন খাবার চায়।’ সে জানায়, এরই মধ্যে ফ্রিজে নজর পড়তেই ওই দলটির একজন তা খুলে রসগোল্লার পাত্র বের করে খেতে থাকে। এরপর এক লিটারের ঠান্ডা পানীয়র একটি বোতল ভাগ করে খায়।

শ্রাবণী অভিযোগ করেন, খাওয়া শেষ করেই ডাকাতরা ছেলের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরে টাকা-গয়না কোথায় আছে জানতে চায়। শ্রাবণীর কথায়, ‘ভয় পেয়ে অনীকই ওদের হাতে আলমারির চাবি দেয়। আমাদের একটি ঘরে ঢুকিয়ে দুজন পাহারা দিচ্ছিল। বাকিরা সব তোলপাড় করে গয়না, টাকা নিয়ে নেয়। তারপর বাড়ির পেছনের দিকের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়।’

সুকুমার বলেন, ‘ডাকাতরা বাড়ি ছাড়ার পর স্ত্রী ফোনে আমাকে বিষয়টি জানায়। রোববার আমি অন্ডালের বনবহাল ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ করেছি।’

ডাকাতির এমন ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘বাড়ির শৌচাগারের জানালার গ্রিল কেটে ডাকাতরা ঘরে ঢুকেছিল। ডাকাতি করতে এসে মিষ্টি, ঠান্ডা পানীয় খাওয়া—এমন ঘটনা শুনিনি!’

এদিকে ঘটনা জানাজানি হতেই সরব হয়েছেন বিরোধী দলের নেতারা। বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘শাসক দলের ব্লক সভাপতির বাড়িতেই যদি এভাবে ডাকাতি হয়, তাহলে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা খারাপ, তা বোঝাই যাচ্ছে।’
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) তাহিদ আনোয়ার বলেন, ‘তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের দ্রুতই ধরা হবে।’

 

 

 

কলমকথা/ বিথী