নিজস্ব প্রতিনিধি: যশোর-৩ (সদর) আসনে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। ফলে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন আওয়ামী লীগের এই পরীক্ষিত প্রার্থী। তাকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে নির্বাচনি এলাকার মানুষের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
এবার যশোরের ছয়টি আসনের মধ্যে দুইটিতে নতুন মুখ এসেছে। অন্য চার আসনে রয়েছেন পুরনোরাই। নতুনদের মধ্যে যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের জামাতা। যশোর-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) ডা. নাসির উদ্দীনকে বাদ দিয়ে তৌহিদুজ্জামানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ডা. তৌহিদুজ্জামান ঝিকরগাছা পৌরসভার কীর্তিপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। মনোনয়ন পাওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন বলেন, ‘এখন আমি রোগী নিয়ে খুব ব্যস্ত আছি। যশোরে এলে আপনাদের সঙ্গে কথা বলবো।’
যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক বাবুল। তিনি দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। একসময় নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র ছিলেন। এই আসনের দুইবারের সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়কে বাদ দিয়ে এনামুল হককে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
যশোর-১ (শার্শা) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো মনোনয়ন পেলেন। আফিল উদ্দিনের বাবা আকিজ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আকিজ উদ্দিন। আফিল উদ্দিন ২০০৮ সালে প্রথমবার এই আসন থেকে সংসদ সদস্য হন। ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনরায় নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালেও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
যশোর-৩ (সদর) আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন কাজী নাবিল আহমেদ। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো মনোনয়ন পেলেন। তিনি জেমকন গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান। মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন, আমাকে আবারও নৌকা দিয়েছেন, সেজন্য আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে নৌকাকে জয়ী করে আমি তার আস্থার প্রতিফলন দেখাতে চাই। এজন্য আমার নির্বাচনি এলাকার মানুষের দোয়া চাই।’
নির্বাচনি এলাকার মানুষের উদ্দেশে দুবারের এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘নির্বাচনি এলাকার মানুষজন আমার প্রতি যে বিশ্বাস এবং আস্থা রেখেছেন, সেজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আবারও নির্বাচিত হলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবো বলে অঙ্গীকার করছি। একইসঙ্গে এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ করবো।’
যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে এবারও মনোনয়ন পেয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। আগেরবারও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রার্থী টিপু সুলতানকে হারিয়ে বিজয়ী হন। স্বপন ভট্টাচার্য্য ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে জড়িত থাকলেও পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। মণিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি।
যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। এই আসনে ২০১৮ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন ইসমাত আরা সাদেক। তার মৃত্যুর পর ২০২০ সালের ১৪ জুলাই শূন্য আসনে উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য হন শাহীন চাকলাদার। তিনি ২০০৪ সাল থেকে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত যশোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
ছয়টি আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তদের বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘ভালো হয়েছে, যোগ্যরাই মনোনয়ন পেয়েছেন।’ দুই আসনে দুই নতুন মুখের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নো কমেন্ট’।
দ্বিতীয়বার দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘এজন্য জননেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
দুই নতুন মুখের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যেকের আমলনামা বিচার-বিশ্লেষণ করেই দুই আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগ যশোরের ছয়টি আসনেই নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে প্রস্তুত আছে। নেতাকর্মীদের সে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।