সোহরাব হাসানঃ মরণঘাতী ইয়াবা ট্যাবলেটের বিস্তার কোনোভাবেই রোধ করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের গ্রেপ্তার করলেও অনেকেই জামিনে বেরিয়ে ফের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে
অনেকে জামিন নিয়ে আদালতে নিয়মিত হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে। তবে তারা স্থান পরিবর্তন করে পালিয়ে থাকায় পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারছে না। ওই মামলাগুলোর সাক্ষীদেরও খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব কারণে ইয়াবা মামলায় সাক্ষীর অভাবে বিচারও শেষ করতে পারছে না আদালত।
দেশের সব অধস্তন আদালতে এক লাখ ৮০ হাজারের ওপরে ইয়াবা মামলা বছরের পর বছর ঝুলে রয়েছে। মূলত মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের ফলে সারাদেশে মামলার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু সময়মতো মামলার বিচার না হওয়ায় দেশে মাদকের ভয়াবহতা যেমন কমছে না, তেমনি পুনর্বাসন প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বনানী থানার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী শরীফ ওরফে পাগলা শরীফ। মহাখালী স্কুল রোডে মুন ভিডিও-এর পিছনে নূরানী মসজিদের পাশের গলিতে তার বাড়ী। আবদুল আলীর ছেলে শরীফ পুলিশের সোর্স হিসেবেও কাজ করেন। নিজ বাড়ীতেই পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে করেন মাদক ব্যবসা। অনুসন্ধানে জানা যায়, ১২ জুন, ২০১৮ নিজ বাড়ী থেকেই শরিফকে ১২০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। মামলা হয় বনানী থানায়। একমাস পরেই জামিনে বের হয়ে যান জেল থেকে। পরে ২০১৯ সালে ঈদুল আযহার আগে শরীফকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর আবার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠালে ঈদের পরে জামিনে বের হয়ে কৌশল পাল্টে আবার ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। বনানী থানায় তার নামে পাঁচটি মাদক মামলা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূএ জানায়, ২০১৮ সালে মে মাসের শেষে ৬০পিছ ইয়াবাসহ বাড্ডা থানায় গ্রেপ্তার হয় বনানী মহাখালী এলাকার তালিকাভূক্ত মাদক ব্যবসায়ী মানিক। মহাখালী পুরাতন বাজারে ‘মা ইলেকট্রনিক্স’ নামক দোকানে কৌশলে ইয়াবা ব্যবসা করতেন। জেল থেকে জামিনে বের হওয়ার পর দোকানটি ছেড়ে দিয়ে এখন তিনি পাঠাও চালকের ছদ্দবেশে ভ্রাম্মমান ইয়াবা ব্যবসা করেন। একটি সূএে জানা যায়, মানিক এখন মহাখালী, দক্ষিনখান ও তেঁজগাও এলাকায় ইয়াবা ব্যবসা করছেন।
২০১৮ সালের মে মাসের শেষ দিকে কড়াইল বস্তিতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হয় মহাখালী-বনানী এলাকার দুর্ধর্ষ চোর হৃদয়। এসময় তার কাছ থেকে ২০পিছ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে ফের ইয়াবা ব্যবসা করছেন তিনি। স্থানীয় সূএে জানা গেছে, বনানী গোডাউন বস্তিতে পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত শহীদ ও তার ভাগ্নে হৃদয় ইয়াবার বড় কারবারি। গোডাউন বস্তিতে টিএন্ডটি মাঠের পাশে তাদের ঘরে বসেই তারা ইয়াবা বিক্রি করে। ২০০৫ সালে বনানী আমতলী ২নং রোডের হিন্দুপাড়া বস্তি থেকে অবৈধ পিস্তল, গুলি ও বিস্ফোরক দ্রব্যসহ শহীদকে গ্রেফতার করেছিল র্যাব-১। এই মামলায় সাজা খেটে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর থেকেই পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। পুলিশের সাথে সম্পর্কের প্রভাব খাটিয়ে করে মাদক ব্যবসা।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।