শাহজালাল মোল্লা নগরকান্দা উপজেলা প্রতিনিধি নগরকান্দায় ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে গাছপালা, বাড়িঘর,ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ২৩ অক্টোবর রবিবার থেকে ২৫ অক্টোবর ভোর রাত পর্যন্ত একটানা প্রবল ঝড়-বৃষ্টির কারনে বিভিন্ন স্হানে গাছপালা আঁচড়ে পড়ে বাড়িঘর ভাংচুর সহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বর্ষার শেষ মুহুর্তে কৃষক পাকা আমন,বরো ধান কাটতে ব্যাস্ত ও পেঁয়াজ বীজ বপনের জন্য জমিতে থলার কাজে নিয়োজিত ঠিক সে সময় তেড়ে আসা ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং কৃষকের স্বপ্ন ভেঙে চুরে চুরমার করে দিলো।একটানা ঝড় বৃষ্টির কারনে ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষকরা জানান।

পেঁয়াজ এর বীজতলা। রাস্তার দুই পাশের গাছপালা আঁচড়ে পড়ে ক্ষতি হয়েছে বাড়িঘর, স্থাপনা। ফসলী জমির জমে থাকা পানি কবে শুকাবে সেই আসায় অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে কৃষকদের।স্থানীয় কৃষকরা বলেন সময় মতোন ফসল ঘরে না তুলতে পারলে যেমন ক্ষতি তেমনি সময় মতোন ক্ষেতে ফসল না ফলাতে না পারলে তেমনি ক্ষতি লোকসান গুনতে হবে। একটানা প্রবল বৃষ্টির কারনে রাস্তা ঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে বড় কাজুলী গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম সাগর তিনি জানান ৫০ মন এর ও বেশী মাছ পানিতে তলিয়ে যায়।

এ সময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তিলক কুমার ঘোষ দৈনিক কলম কথা এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে এ বছরে ৯ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে ।এর মধ্যে ২ দুই হাজার হেক্টর জমির ধান আক্রান্ত বা পড়ে গিয়েছে , যে গুলো পড়ে গিয়েছিল তার ভিতরে পাকা ধান বা মাথায় ভারছিল ,আর যা এখনো দাঁড়িয়ে আছে তা কেটে আনলে কোনো ক্ষতি হবে না। তার ভিতরে উল্লেখ পুরাপাড়া ইউনিয়নের ৫০০হেক্টর জমিতে তলিয়ে যায় সবমিলিয়ে আমারা মনে করছি ৪০ হেক্টর বা ২ পারসেন্ট জমিতে ক্ষতির আশঙ্কা করা যায় । এ ছাড়া ১০হেক্টর কলা বাগান রয়েছে তার ভিতরে ৫ হেক্টর জমিতে ক্ষতি হয়েছে । সরিষা ছিল ১০হেক্টর জমিতে যা সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে।

আমাদের অফিসের পক্ষ থেকে দ্রুত জানান হয়েছে যে সমস্ত মালিকদের বীজতলা জমিতে এখনো পানি আটকা পড়ে আছে নিষ্কাশনের জন্য দ্রুত বাঁধ বা নালাগুলো ছেড়ে দেওয়ার জন্য সমস্ত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান এ সময় প্রতিবছরের মত কৃষকেরা ধান বেড়ে ওঠার মুহূর্ত, পেঁয়াজের চাষ কেবলমাত্র শুরু হয়েছিল, পিঁয়াজের যা কিনা সিংহভাগ যোগান দিয়ে থাকি এ উপজেলা থেকে।

মাঠ পর্যায় তথ্য সংগ্রহের পর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তথ্য তালিকা করে কৃষি পূর্ণবাসন প্রক্রিয়া তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে ঘর থেকে বাহিরে বের হতে পারেনি মানুষ, যেখানে সেখানে বিদ্যুৎ এর তারের উপর গাছপালা পড়ে থাকায় এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় জনদুর্ভোগ দেখা দেয়।বিদ্যুৎ না থাকায় অনেকেরই মোবাইল ফোন বন্ধ যোগাযোগ ছিলো বিচ্ছিন্ন। মোমবাতি কিনে আলো নিবারন করেন অনেকেই। অফিসগুলো চলছিলো মোমবাতির আলোয়। এ সময় দৈনিক কলম কথা ৭১কে ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ নগরকান্দা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোঃ সাহাবুল ইসলাম জানান ভয়ংকর এই ঘূর্ণিঝড়ে সকল স্থানে প্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বেশ কয়েকটি পিলার ভেঙে গেছে এবং বেশ কয়েকটি স্থানে তার ছিড়ে গেছে যার কারনে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। আমরা এই দুই দিনে প্রায় ৮০ পার্সেন্ট কাজ শেষ করে ফেলছি আর আজকের ভিতরে বাকি কাজ শেষ করতে পারব বলে বিশ্বাস করছি।

এ বিষয়ে দৈনিক কলম কথা কে নগরকান্দা উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল কবির জানান ঘূর্ণিঝড়ে নিহত সংবাদ পাইনি তবে কিছু কিছু স্থানে গাছপালা চাষাবাদের জমি ও ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।