সিরাজগঞ্জের কাছে যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়ন্টে যমুনা নদীর পানি কমেছে ৮ সেন্টিমিটার, কাজিপুর পয়ন্টে কমেছে ৫ সেন্টিমিটার এবং বাঘাবাড়ী পয়েন্টে কমেছে এক সেন্টিমিটার। তবে পানি এখনো সবকটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ রবিবার সকালে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের হার্ড পয়ন্টে বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার, কাজিপুর পয়েন্টে ৬২ সেন্টিমিটার এবং বাঘাবাড়ি পয়েন্টে ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয় প্রবাহিত হচ্ছিল। টানা তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে পানি কমতে শুরু করায় বানভাসী মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরলেও দুর্ভোগ কমেনি।

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ, রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি ও আবাদি জমি। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী জাকির হোসেন জানান, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বেড়েছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান পানি আর দুই-একদিন বাড়তে পারে। এদিকে, যমুনায় পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি ভাঙ্গন বৃদ্ধি পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে চৌহালী, কাজিপুর ও শাহজাদপুর উপজেলার চরাঞ্চল ও নদীতীরের মানুষেরা।

গত কয়েকদিনে শুধুমাত্র চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের অন্তত ৮০টি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়ে অনেক পরিবারই বর্তমানে স্থানীয় কবরস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। এই উপজেলার বিনানুই থেকে চর সলিমাবাদ পর্যন্ত ভাঙনের তীব্রতা অব্যাহত রয়েছে। গত ৩ সপ্তাহে এই উপজেলার অন্তত দুই শতাধিক বসতভিটাসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ জানান, বন্যা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫৪১ মেট্রিকটন চালসহ ডাল, শুকনো খাবার প্রস্তত রাখা হয়েছে। এছাড়া নগদ এক কোটি ৮২ লাখ টাকা হাতে আছে। ইতোমধ্যেই বন্যাকবলিত উপজেলাসমূহে খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্যার্তদের জন্য ৭৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রয়েছে।