টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে রাতের আঁধারে প্রায় ১ হাজার কলাগাছ কেটে সাবার করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘাটাইল উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের দুলালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এতে কৃষকের প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন কলা চাষী রহিম মিয়া।

জানা গেছে, এনজিও ও কৃষি ব্যাংক থেকে লোনকরে ১০০ শতাংশ জমিতে ১ হাজার কলার চারা রোপণ করেন কলা চাষী রহিম মিয়া। দীর্ঘ ১ বছর পরিচর্যা করে কলাবাগানের সব গাছেই কলার ছড়ি ধরেছে। কিছুদিন পরেই কলাগুলো বিক্রির উপযোগী হবে। তবে বুধবার রাতে কে বা কারা কলাবাগানের অধিকাংশ গাছ কেটে বাগানে ফেলে রেখেছে এবং প্রায় সবগুলো কলা গাছই অর্ধেক কেটে রেখেছে। এখন সামান্য বাতাসেই পরে যাচ্ছে সব কলা গাছ।

রহিম মিয়া বলেন, ‘ তার সাথে প্রতিবেশীদের সাথে জমি নিয়ে পূর্ব শত্রুতা রয়েছে। এ জমির বিষয়ে গ্রাম্য শালিসে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. একাব্বর আলী, ইউপি সদস্য মো. এনামুল হাসান ও গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে জমির কাগজপত্র দেখে শালিসি সিদ্ধান্তে জমি রহিম মিয়া রায়পান। শালিসি সিদ্ধান্তের পরপরই এই বাগানে ঘাস মরার বিষ দিয়ে প্রায় সব কলা গাছ মেরে ফেলেছিলো কে বা কারা। পুনরায় কলার চারা রোপণ করেছেন। আবারও কলা গাছ কেটে সাবার করেছে দুর্বৃত্তরা। বারবার তারা কেন এই সর্বনাশ করছে বুঝতে পারছেন না। হতাশায় ভুগছেন কিভাবে এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠবে।

কলা চাষী রহিম মিয়ার শিশু ছেলে রবিউল (৬) কান্না বিজরিত কন্ঠে বলেন, “আমরা তো গরীব হয়ে গেলাম, কিভাবে যাবো স্কুলে, কিভাবে খাবো মজা। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই।”

এরমাঝেই আবার প্রাণনাশ এবং পরিবারের সদস্যদের মারপিটের হুমকি দিচ্ছে প্রতিবেশী আব্দুল মজিদ গংরা। একমাত্র ছেলে রবিউল (৬) কে নিয়ে বেশি আতঙ্কিত কলা চাষী রহিম মিয়া। কোন উপায় না পেয়ে ন্যায় বিচারের আশায় আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন কলা চাষী রহিম মিয়া।

রহিম মিয়া আরও জানান, এই বাগানের কলার চারা রোপণ থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত ৩ লাখের বেশি টাকা ব্যয় হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী মাসখানেক পরেই সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার কলা বিক্রি করতে পারতেন। কলা বিক্রি টাকায় ঋণ পরিশোধ করে কিছু টাকা লাভ হতো, তা দিয়েই সন্তানের লেখাপড়া ও পরিবারের খরচ চালাতে পারতেন। কিন্তু দুর্বৃত্তের থাবায় নিঃস্ব তিনি। এমনকি ভুগছেন নিরাপত্তাহীনতায়।

এ ব্যাপারে ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম সরকার জানান, কলা গাছ কাটার ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছেন। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। এই সত্যতার প্রেক্ষিতে বাদীর অভিযোগের প্রাপ্তি সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা মামলা এবং আসামি গ্রেপ্তার প্রক্রিয়াদীন।