নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক  মিম্মা তাবাসসুম এর বিরুদ্ধে ১০টি গুরুতর অভিযোগ দায়েরের ১৪ দিনেও  প্রশাসনিক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আন্দোলনের আল্টিমেটাম দিয়েছে  পরিসংখ্যান বিভাগের মাস্টার্স ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থীরা।

অভিযুক্ত শিক্ষককে অবিলম্বে বিভাগীয় প্রধানের পদ হতে অব্যাহতি প্রদান এবং উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে চলমান এবং পরবর্তী সেমিষ্টারের রেজাল্টের সাথে কোনো প্রভাব না পড়ে তার নিশ্চয়তা প্রদানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

বুধবার ( ২৬ শে অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এই দাবি জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন,গত ১২ ই অক্টোবর আমরা পরিসংখ্যান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মিম্মা তাবাসসুমের বিরুদ্ধে ১০ টি অভিযোগ দায়ের করি যা বিজ্ঞান অনুষদের ডিন বরাবর দেয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলো হচ্ছে-ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে শিক্ষার্থীদের নম্বর টেম্পারিং করা, পূর্বঘোষণা দিয়ে সম্মিলিতভাবে পুরো ব্যাচের নম্বর টেম্পারিং করা, বিভাগের অন্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষে ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক মন্তব্য করা, ‘ছোট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়’ বলে শিক্ষার্থীদের হেয় করা এবং (নোবিপ্রবিকে) নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তুলনা করা।

অভিযোগের মধ্যে আরো রয়েছে-  শিক্ষার্থীদের আর্থিক অবস্থা নিয়ে কটূক্তি, ল্যাব ক্লাসের সময় কটু কথা বললে শিক্ষার্থীদের প্রতি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠা, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রশ্ন তোলা, উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যেতে শিক্ষার্থীদের হেয়প্রতিপন্ন করা, ‘তোমাদের ব্যাচ থেকে কীভাবে টিচার হয়, আমি তা দেখে নেব’ এ জাতীয় হুমকি দেওয়া, কর্মচারীদের ভুল তথ্যে কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়া শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করা।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, অভিযোগ দেয়ার পর থেকে উনি এবং ওনার হাজবেন্ড এবং কলিগ আমাদের ব্যাচের ছাত্র/ছাত্রীদের ব্যক্তিগতভাবে  ফোন দিয়ে এই অভিযোগ উঠিয়ে নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে৷ আমাদের জুনিয়র ব্যাচের ছাত্রদের আমাদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে আমাদের অভিযোগ গুলোকে মিথ্যা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। “

এ সময়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরো বলেন,  কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত অভিযোগ দায়ের করার দুই সপ্তাহ চলে যাওয়ার পরেও প্রশাসন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয় নি। তারা বিভিন্ন ব্যস্ততার অজুহাতে আমাদের ব্যাপারটি ছোট করে দেখেছেন এবং তাদের ব্যস্ততাকে বড় করে দেখেছেন।

শিক্ষার্থীরা আরো বলেন,  অভিযুক্ত শিক্ষক তার একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে পারছি না। আমাদের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের ল্যাব পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে, আমাদের আরেকটি সেমিস্টার বাকি রয়েছে। একটা সুষ্ঠু তদন্ত না করে প্রশাসনের এই দীর্ঘসূত্রিতা আমাদের একাডেমিক লাইফটাকে অনিশ্চিত করে দিচ্ছে। “

অভিযুক্ত পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক  মিম্মা তাবাসসুমের  মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডীন  অধ্যাপক ড. মো.  হানিফ   বলেন,  ” ডিন অফিস থেকে পরিসংখ্যান বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে নিজ বিভাগীয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে  আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।  ডিন অফিসের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলাপ – আলোচনা আয়োজন করতে  ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।  আগামীকাল, ডিন হিসেবে আমি বিষয়টি মাননীয় উপাচার্য ও উপ -উপাচার্য বরাবর প্রেরণ করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে মাননীয় উপাচার্য স্যার এ বিষয়ে আশা করি দ্রুত সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন।