মাগুরা জেলার সদর থানাধীন চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার পলাতক প্রধান আসামি অনুপ কুমার চাকী (৩০)’কে রাজধানীর তেঁজগাও এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৩।
রাজধানীর তেঁজগাও এলাকায় ১৬/০৪/২০২৪ তারিখ রাতে অভিযান পরিচালনা করে মাগুরা জেলার সদর থানাধীন চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার পলাতক প্রধান আসামি অনুপ কুমার চাকী (৩০), পিতা-নিখিল কুমার চাকী, গ্রাম- গাঁড়াগঞ্জ (চাকীপাড়া), থানা- শৈলকুপা, জেলা- ঝিনাইদহ’কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৩।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী অনুপ কুমার চাকী একজন লম্পট প্রকৃতির ধুরন্ধর লোক। আসামীর সাথে ভিকটিমের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয়। কথোপকথনের এক পর্যায়ে আসামি জানতে পারে, ভিকটিম ০৮ বছর আগে ডিভোর্স প্রাপ্ত হয় এবং তার ০৯ বছর বয়সী একজন পুত্র সন্তান রয়েছে। ভিকটিমের দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে আসামি তার যৌন চাহিদা মেটাতে বিভিন্নভাবে ফাঁদ পাতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে ভিকটিমের বাড়ীতে আসামি আসা যাওয়া শুরু করে। ভিকটিমকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের কুপ্রস্তাব দিলে ভিকটিম ঘৃণাভরে তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে ভিকটিমকে ঝিনাইদহে একটি মন্দিরে নিয়ে সিঁদুর পড়িয়ে বিয়ের মিথ্যে নাটক সাজিয়ে অবৈধ সর্ম্পক স্থাপন করে। এই ঘটনার পরবর্তীতে আসামি ভিকটিমের পরিবারের অনুপস্থিতিতে ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ভিকটিম বিবাহের রেজিস্ট্রেশনের কথা বললে আসামি তাকে বিবাহ করতে অস্বীকার করে। ভিকটিম উপায়ন্তর না পেয়ে আসামির বাড়িতে গিয়ে ঘর-সংসার করার কথা বললে আসামি বিবাহের কথা অস্বীকার করে এবং ভিকটিমকে বেদম প্রহার করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। অসহায় ভিকটিম এরপরও বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকলে, সে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ভিকটিম ও তার পরিবারকে হত্যা ও সামাজিক যোগযোগের মাধ্যমে ভিকটিম এর অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। এই বিষয়ে ভিকটিমের পরিবার এবং এলাকাবাসী জানতে পারলে ভিকটিম মাগুরা জেলার নারী ও শিশু নিযার্তন দমন ট্রাইব্যুনালে ২০০০ সালের নারী ও শিশু দমন আইনের ৯(১) ধারার অভিযোগে নালিশী দরখাস্ত করে। পরবর্তীতে মাগুরা সদর থানায় গ্রেফতারকৃত অনুপ কুমার চাকীর বিরুদ্ধে গত ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ একটি ধর্ষণ মামলা রুজু হয়।

 গ্রেফতারকৃত অনুপ কুমার চাকীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের হওয়ার পরপরই সে স্থান পরিবর্তন করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পলাতক জীবনযাপন করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।