কেশবপুরে ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি, গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় হতদরিদ্র পরিবারের ৯ বছর বয়সের প্রতিবন্ধী শিশু আসাদুল ইসলামের পাশে দাঁড়িয়ে হুইলচেয়ার প্রদান করে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন। বৃহস্পতিবার (১৬) সকালে উপজেলা পরিষদ কার্যালয় চত্তরে ওই প্রতিবন্ধী শিশুকে হুইলচেয়ার প্রদান করা হয়।
- কেশবপুরে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ১০ উদ্ভাবনী উদ্যোগ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
- পদ্মা সেতু বাঙালি জাতিকে অপমান করার প্রতিশোধ: সেতুমন্ত্রী
জানা গেছে, উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের দেউলি গ্রামের দিনমজুর হান্নান মোড়লের ছেলে আসাদুল ইসলাম (৯) জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধী শিশুকে নিয়ে বিপাকে পড়েন পিতামাতা। আসাদুল এর হাত-পা চিকন ও বাঁকা হওয়ায় হামাগুড়ি দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। দারিদ্র পিতা পরের ক্ষেতে কামলা খেটে জীবিকা নির্বাহ করে। অল্প উপার্জনের মধ্যে দিয়ে সংসার চলে অভাব-অনাটনে। দ্রারিদ্রতার কষাঘাতে দিনমজুর পিতার পক্ষে প্রতিবন্ধী পুত্রের জন্য একটি হুইল চেয়ার কিনে দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষের কাছে প্রতিবন্ধী ছেলের জন্য অসহায় পিতামাতা একটি হুইল চেয়ারের সহযোগিতা চেয়েও সেটি পাইনি, পেয়েছে শুধুই আশ্বাস। শুধুমাত্র একটি হুইল চেয়ার হলেই প্রতিবন্ধী আসাদুল এর জীবনের অনেকটা কষ্ট কমে যাবে। ছেলের চলাফেরা করার জন্য একটি হুইল চেয়ারের আকুতি জানান প্রতিবন্ধী পরিবার ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি, গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা কেশবপুর উপজেলা শাখার সভাপতির শামীম আখতার মুকুল এর কাছে জানান। পরবর্তীতে শিশু প্রতিবন্ধীর বিষয়টি নিয়ে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেনের কাছে বিনয়ের সহিত একটি হুইলচেয়ার দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন এবং তার দপ্তরে একটি লিখিত আবেদন করেন। বিষয়টি হৃদয় বিদারক হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে এমন একজন অসহায় প্রতিবন্ধীর একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করতে ইচ্ছা পোষণ করেন এবং পরিবারকে তার কার্যালয়ে নিয়ে আসতে বলেন।
তারই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সকালে উপজেলার নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন প্রতিবন্ধীর মায়ের উপস্থিতিতে একটি হুইলচেয়ার প্রদান করেন এবং প্রতিবন্ধীর সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেনও তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার সাদেক, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস আর সাঈদ, ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি,গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা কেশবপুর উপজেলার শাখার সভাপতি সাংবাদিক শামীম আখতার মুকুল, প্রচার সম্পাদক মোস্তফা কামাল, কার্যনির্বাহী সদস্য আলমগীর হুসাইন প্রমূখ।
হুইলচেয়ার পেয়ে প্রতিবন্ধী শিশু আসাদুল ইসলাম এর মাতা রিজিয়া পারভীন হাস্যোজ্জল মুখে বলেন, জন্ম থেকেই আমার ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী।ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আমার ছেলে প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্বামী-স্ত্রী মিলে তার কখনো অযত্ন অবহেলা করেনি। ছেলে বড় হওয়ায় এখন অনেক কষ্ট হয় তাকে নিয়ে চলাফেরা করতে। সংসারে অভাব অনাটনের কারণে তাকে হুইলচেয়ার কিনে দেওয়ার মতো সামর্থ্য আমাদের ছিলোনা। হুইলচেয়ারটি পাওয়ায় এখন থেকে আমাদের অনেকটা কষ্ট কম হবে। ছেলেকে হুইলচেয়ার দিয়ে সহায়তা করায় সারাটি জীবন ইউএনও স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি তারই পাশাপাশি ইউএনও স্যারের এবং গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু আসাদুল ইসলামকে হুইলচেয়ারটি দিতে পেরে নিজেকে ধন্য বলে মনে করছি। আমি তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। আত্মমানবতার সেবায় প্রতিবন্ধী ও অসহায় মানুষের জন্য উপজেলা প্রশাসনের আগামীতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।