তৌহিদুল ইসলাম সরকার,স্টাফ রিপোর্টার: ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশুল্লী ইউনিয়নের উত্তর মুশুলী নামক স্থানে কিশোরঞ্জ টু ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ৯০ শতক জায়গায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে রীতিমতো বাজিমাত করে ফেলেছেন উত্তর মুশুল্লী গ্রামের সৌখিন কৃষক দুই চাচাত ভাই শফিকুল ইসলাম (৩৫) ও নাঈম ইসলাম(৩৩)।

শখের বশে অনুপ্রাণিত হয়ে সূর্যমুখী ফুলের বাগান করে কৃষি অফিসসহ সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তারা।।যা বর্তমানে সান ফ্লাওয়ার গার্ডেন নামে পরিচিত।

সূর্যমুখী বাগানে হলুদ ফুল আর সবুজ গাছের অপরূপ দৃশ্য।দেখলেই দুচোখ জুড়িয়ে যায়। সবুজ পাতার ভেতর থেকে মাথা উঁচু করে প্রকৃতিতে নিজের সৌন্দর্য জানান দিচ্ছে সূর্যমুখী ফুলগুলো। সামান্য বাতাসেই দুল খাচ্ছে ফুলগলো।ফুলের সাথে সূর্যের সাথে যেন মিতালী হয়েছে। সূর্যমুখীর হাসিতে নজর কেড়েছে ফুল প্রেমিদের।

এ ফুল দেখতে আর সূর্যমুখী বাগানে নিজেদের ছবি, সেলফি তুলতে নানা বয়সী সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ প্রায় প্রতিদিন ভিড় করছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসারের পরামর্শে ৯০’শতক জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেন শফিকুল ইসলাম ও নাঈম ইসলাম। এতে তাদের প্রায় ৩০হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে বাজারে সূর্যমুখী বীজের ভালো দাম আছে। আশা করছেন তারা লাভবান হবো।

পথচারী’সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী, ফুল ও প্রকৃতি প্রেমিগণ সান ফ্লাওয়ার গার্ডেনে আসছেন মনকেড়ে নেওয়া দৃশ্য দেখার জন্য।

সরেজমিনে সান ফ্লাওয়ার গার্ডেনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রকৃতির মাঝে নিজের সৌন্দর্য ছড়িয়ে দিচ্ছে সূর্যমুখী ফুলগুলো। সবুজ গাছে ফুটে আছে শত শত সূর্যমুখী ফুল।প্রতিনিয়ত মিষ্টি হলুদ রঙের সূর্যমুখী দেখতে সকাল বিকাল ভিড় করছেন শত শত দর্শনার্থী। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর- দূরান্ত থেকে আসছেন পর্যটকরা। যেন মিষ্টি হলুদ রঙের সূর্যমুখীতে সেজেছে প্রকৃতি।

সূর্যমূখি বাগানের মালিক শফিকুল ইসলাম ও নাঈম ইসলাম বলেন,কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগীতায় ৯০’শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী চাষ করেছি। ফলনও হয়েছে চমৎকার। প্রতিটি গাছে ফুল এসেছে।একদিকে যেমন ফুলের সৌন্দর্য মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অপর দিকে এ ফুলের বীজ বেঁচেও লাভবান হওয়া যায়। সে চিন্তা মাথায় রেখে আমরক এ বাগান করেছেন।আমাদের এ সফলতা দেখে গ্রামের অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন সূর্যমুখী চাষ করার।

ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসছে দর্শনার্থীরাও।ইশ্বরগঞ্জ থেকে এসেছেন শিক্ষক মিজানুর রহমান ও তার দুই ছাত্র রিয়াদ ও আরাফাত। তারা বলেন,খবর পেয়ে সূর্যমুখী ফুলের বাগান দেখতে এসেছি। ফুলের সৌন্দর্য দেখে আমরা সত্যিই মুগ্ধ। খুব ভালো লেগেছে।

পুলিশে চাকুরী করেন বরকত উল্লাহ। তিনি স্ত্রী ও ছোট শিশুকে নিয়ে এসেছেন সূর্যমুখী বাগান দেখতে। বাগান দেখে তিনি বলেন, ‘এতো সুন্দর দৃশ্য দেখে আমি অভিভূত। খুবই চমৎকার দৃশ্য। অনেক আনন্দ পেয়েছি।

নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, নান্দাইলে ২ হ্যাক্টর জমিতে সুর্যমুখী চাষ হয়েছে। কৃষি প্রণোদনার আওতায় কৃষক শফিকুল ও নাঈম ইসলামসহ ২০ জন কৃষকের মাঝে সরকারিভাবে বীজ, সার দেওয়া হয়েছে। কৃষি অফিস কৃষকদের সার্বক্ষণিক বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে।