বেনাপোল প্রতিনিধিঃ ইমপোর্ট জেনারেল মেনিফেস্ট (আইজিএম) অনলাইনে করায় ভারতীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়ন আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আমদানি বন্ধ রয়েছে। এর ফলে পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় শত শত পণ্যবোঝাই ট্রাক আটকা পড়ে আছে। এর মধ্যে পচনশীল পণ্যসহ রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামালও রয়েছে। এর আগেও একই ঘটনায় বেশ কয়েকবার আমদানি-রপ্তানি সাময়িক বন্ধ ছিল।

সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানি-রপ্তানি হবে সেখানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে অনলাইনে ১৭ সংখ্যার একটি আইজিএম নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত নভেম্বর থেকে এটা চালুর চেষ্টা করা হলেও ভারতীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা না মেনে পূর্বের ন্যায় হাতে লিখে আইজিএম চালু করার দাবি জানিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হলেও বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান হয়নি।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বেনাপোল কাস্টমস কার্গো শাখা অনলাইনে আইজিএম চালু করলে ভারতীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস ও ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়ন দুপুর থেকে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। দুপুর পর্যন্ত ভারত থেকে মাত্র ৭২টি পণ্যবোঝাই ভারতীয় ট্রাক আসে বেনাপোল বন্দরে। রবিবার সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে আমদানি। তবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে।

ভারতের পেট্রাপোল সিএন্ডএফ স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী জানান, আইজিএম করার আগে কারপাস করতে হয়। সেখানে পণ্যের নাম, পরিমাণ, ট্রাকের নম্বর, চ্যাসিস নম্বর, ট্রাকচালক, হেলপারের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ করতে হয়। তারপর সেটা বাংলাদেশ কাস্টমসের কাছে পৌঁছানোর পর তারা এন্ট্রি করেন। এর পর পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। এখানে কোনো ভুল হলে সেটা সংশোধন করতে এক থেকে দেড় মাস লেগে যায়। আর অনলাইনে এন্ট্রির পর ভুল হলে সেটা কিভাবে কতদিনের মধ্যে সংশোধন হবে সেটার কারণে ভারতীয় ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়ন কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এ নিয়ে আগামীকাল সোমবার পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সাথে বন্দর ব্যবহারকারীদের নিয়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা আছে।

পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, কারপাসে যে ট্রাক নম্বর বা চালক হেলপারের নাম লেখা থাকবে। কোনো সমস্যার কারণে ( ট্রাক বিকল, দুর্ঘটনা, চালক, হেলপার অসুস্থ) সেই ট্রাক বা চালক হেলপার না এলে সেটা কিভাবে সংশোধন হবে! এসব কারণে আমাদের ট্রাকচালকরা বাংলাদেশে পণ্য নিয়ে যেতে আগ্রহী নন। তারপরও বেনাপোল বন্দরে অনলাইন চালু হয়নি। কারপাস ও আইজিএম মূলত দু‘দেশের কাস্টমস কর্তৃপক্ষের করার কথা। দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য এ কাজটি আমরা করে থাকি। এখানে দু‘-একটি ভুল হতে পারে। সেটা সংশোধন করতে এক মাসেরও বেশি সময় ও অর্থ খরচ করতে হয়।