ক্যাম্পাস প্রতিনিধি – আব্দুল আউয়াল: শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার মাধ্যমে পালিত হলো রাজধানীর পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতি (সোকসাস) এর প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

শনিবার (১৩ মে) সকাল ১১.১৫ মিনিটে শহীদ মিনারে পুষ্প অর্পনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় ।

উৎসবমুখর পরিবেশে কলেজ প্রাঙ্গণের অডিটোরিয়াম রুমে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখার সভাপতি শাহরিয়ার রাহাত মোড়ল এবং সাধারণ সম্পাদক আশিকুর ইসলাম আশিক।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই কেক কেটে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, ও সোকসাস এর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ও সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও কার্যনিবার্হী পরিষদের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ।
এসময় সংগঠনের সভাপতি ইয়াছিন মোল্লার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভা শুরু হয় । এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন কলেজের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যের শুরুতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানান। এরপর তিনি তার বক্তব্যে বলেন,সাংবাদিকতার আঁতুড় ঘর হচ্ছে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা। সাংবাদিকতায় দুটি জিনিস প্রয়োজন প্রথম হচ্ছে লিখতে পারার দক্ষতা এবং দ্বিতীয়টি সোর্স। কপিয় পেস্ট করার সাংবাদিকতা ছেড়ে মৌলিক সাংবাদিকতায় ফোকাস করতে হবে। এই ছাড়াও তিনি উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্য বলেন, নতুন সাংবাদিকদের সাংবাদিকতার মৌলিক বিষয়গুলো শিক্ষা দেওয়ার জন্য বেশি বেশি কর্মশালার করা প্রয়োজন।

মেহেদী হাসান পলাশ বলেন, সাংবাদিকরা আয়নার মতো কাজ করে। আমাদের চারপাশে যা কিছু ঘটে সেগুলো তুলে নিয়ে আসা সাংবাদিকদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। ক্যাম্পাস সাংবাদিক সংগঠন গুলো ঠিকে থাকতে হলে কলেজ প্রশাসন ও রাজনৈতিক সংগঠন গুলো সহযোগিতা থাকতে হবে। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার রাহাত মোড়ল বলেন – সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির সকল কাজে ছাত্রলীগ পাশে আছে। তিনি আরো বলেন তোমরা হলুদ সাংবাদিকতা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবে। সত্যকে সত্য বলে প্রকাশ করবে।

উক্ত আলোচনা সভায় সমিতির সভাপতি ইয়াছিন মোল্লা বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ৭৩ বছর পর ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো গঠিত হয় সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতি। সংগঠনটি গঠন হওয়ার পর থেকে কলেজের ভাবমূর্তি বাংলাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নানা রকম সুবিধা অসুবিধা তুলে ধরার মাধ্যমে তা সমাধান চেষ্টা করে আসতেছে সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতি। প্রথমদিকে এই সংগঠনের যাত্রা এতটা সহজ ছিল না। তবে বর্তমানে কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ স্যারসহ প্রতিটি সামাজিক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আন্তরিকতায় সংগঠনটি আজ কলেজে সকলের আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি এই সংগঠনের সফলতা কামনা করি, সেই সাথে প্রতিটি সদস্যকে আহবান জানাবো আপনারা সকল প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে সব সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের যুক্তিক দাবীকে তুলে ধরার চেষ্টা করবেন।

সাধারণ সম্পাদক শেখ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এই সংগঠন সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সংগ্রামে নিত্য দিনের সাথী হয়েছে প্রথম সারিতে থেকে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিটি আন্দোলনে শুধু লেখনী নয়, নীতিনির্ধারকের ভূমিকায় ছিলো সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতি। সকলের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে আস্থার সর্বোচ্চ ঠিকানা হিসেবে। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

উক্ত অনুষ্ঠানে সেরা ক্যাম্পাস সাংবাদিক হিসেবে তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়াও প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য বৃন্দকে সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে কলেজে বর্ণাঢ্য আনন্দ র‌্যালি বের করা হয়।